বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘এ’ ইউনিট এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

একইদিনে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিশেষ করে পুরান ঢাকার তীব্র যানজট তাদের চরম ভোগান্তিতে ফেলে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই পুরান ঢাকার গুলিস্তান থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে হয় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।

সদরঘাটগামী যানবাহনগুলো তাঁতীবাজার ও রায় সাহেবের বাজার মোড় থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হলেও গুলিস্তান-পল্টন পর্যন্ত যানজট তৈরি হয় বলে জানান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও উবার চালকরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় অর্ধলাখ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তিনটি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা, দুপুর ১টা থেকে ২টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তিন শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

একইদিনে ঢাবির বিজ্ঞান অনুষদের ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি কবি নজরুল ইসলাম কলেজ ও মহানগর মহিলা কলেজে অনুষ্ঠিত হয়।

এ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা রাজধানীতে প্রবেশ করেন। ঢাবির তিনটি কেন্দ্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় এসব পরীক্ষার্থীদের বেশিভাগের চাপ পড়ে পুরান ঢাকা এলাকায়। এতে পল্টন থেকে গুলিস্তান হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত প্রধান সড়কসহ সবগুলোতেই বাস, মিনিবাস, ট্রাক, লেগুনা, রিকশাসহ বিভিন্ন যাত্রী ও মালবাহী যানের জ্যাম লেগে যায়। এতে ভোগান্তি বাড়ে পুরান ঢাকাবাসী ও পরীক্ষার্থীদের। 

উত্তরা থেকে পরীক্ষা দিতে আসেন নাজমুল। দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে যানজটের কারণে গুলিস্তান থেকে জবিতে হেঁটে আসেন তিনি।

তিনি জানান, দুপুর ১টায় পরীক্ষা। সেজন্য সকালে বের হয়েছি। কিন্তু তীব্র যানজটে অনেক সময় লেগে গেছে। আমি গুলিস্তান থেকে হেঁটে এসেছি। সারা রাস্তায় গাড়ি আর মানুষ।

রায়সাহেব বাজার থেকে রিকশায় আসতে রুমি খাতুনের সময় লেগেছে ২৫ মিনিট। তিনি বলেন, “আমার পরীক্ষা ১টা থেকে। কিন্তু এটুকু রাস্তা হেঁটে আসলেও কম সময় লাগত। কিন্তু আমি একটু হাঁটলেই পা ব্যথা করে। তাই রিকশা নেওয়া।”

ছেলের পরীক্ষার জন্য জবিতে এসেছেন সাজ্জাদ হোসেন। তিনি এসেছেন এয়ারপোর্ট থেকে। উবারে চড়ে আসতে তাদের পাড়ি দিতে হয়েছে গুলিস্তানের জ্যাম।

তিনি বলেন, “আমার ছেলের পরীক্ষা বিকেলের শিফটে। তবে এয়ারপোর্ট থেকে আসতে অনেক সময় লেগেছে। গুলিস্তান থেকে আসতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা। সারা রাস্তায় মানুষ আর গাড়ি। অনেকেই হেঁটে এসেছেন।”

দীর্ঘ ৪ বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে। শনিবার কলা ও আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে ১১টা, দুপুর ১টা থেকে ২টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তিন শিফটে হয় এ পরীক্ষা।

‘বি’ ইউনিটের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২ হাজার ৯৭৪ জন। আসন সংখ্যা ৭৮৫টি। আসনপ্রতি লড়েছেন ৫৫ জন শিক্ষার্থী।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র থ অন ষ ঠ ত র পর ক ষ ইউন ট র য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে পাকিস্তান

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। গত বুধবার রাতে দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এর ফলে পারস্পরিক শুল্ক কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। যদিও কোনো দেশই নির্দিষ্টভাবে শুল্কহার নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি।

এদিকে, চুক্তির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের তেলসম্পদ উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর ডনের।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। পাল্টা শুল্ক নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। বুধবারই তাঁর সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের বৈঠক হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে জানায়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বাজার প্রবেশাধিকার জোরদার করা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ ও পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করাই এ চুক্তির মূল লক্ষ্য।

পাকিস্তান দূতাবাস আরও জানায়, চুক্তির ফলে পাকিস্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কমবে। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আরও ভালো হবে। অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়বে।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। এখন থেকে দেশটির বিশাল তেলসম্পদের উন্নয়নে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে।’ ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘আমরা এখন তেল কোম্পানি বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় আছি। কে জানে, একদিন হয়তো পাকিস্তান ভারতেও তেল রপ্তানি করবে!’

তবে চুক্তিটির বিস্তারিত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এ চুক্তির বিষয়ে আজ সকালে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি এক্সে লেখেন, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি আমাদের স্থায়ী অংশীদারত্বকে আরও জোরদার করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে এমন একটি চুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে আমি কৃতজ্ঞ।’

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আওরঙ্গজেব চুক্তিটিকে ‘উইন-উইন’ বা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক বলে বর্ণনা করেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘যে যাত্রা আমরা কয়েক মাস আগে শুরু করেছিলাম, আজ তা সফলভাবে শেষ হলো।’

আওরঙ্গজেব আরও বলেন, ‘শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি অশুল্ক বাধা, বাণিজ্য ভারসাম্য ও শুল্ক কাঠামোর পুনর্মূল্যায়ন নিয়েও আমরা কাজ করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ