ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 16th, February 2025 GMT
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ওমানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার মাস্কাটে অনুষ্ঠিত ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওমান সরকার যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে, যার তত্ত্বাবধানে রয়েছে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন। এবারের সম্মেলনে অন্তত ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশগ্রহণ করছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, গত ডিসেম্বর মাসে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফর করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেটাই ছিল বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে ওমানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠককে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র দ শ র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।