৫ কোটি টাকার ভিআইপি বক্সে নয়, পিসিবি প্রধান বসবেন সাধারণ বক্সে
Published: 17th, February 2025 GMT
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। টুর্নামেন্ট আয়োজক ও পাকিস্তান ক্রিকেট (পিসিবি) বোর্ডের প্রধান হিসেবে এই ম্যাচে ভিআইপি বক্সে বসে খেলা দেখার সুযোগ রয়েছে মোহসীন নাকভির।
কিন্তু তিনি ভিআইপি বক্সে বসে খেলা না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরিবর্তে তিনি জেনারেল বক্সে বসে খেলা দেখবেন। আর তার জন্য বরাদ্ধকৃত ৪ লাখ ডলার তথা প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ভিআইপি বক্স অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দিতে বলেছেন। যাতে করে আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানের রেভিনিউ বাড়ে।
মূলত স্টেডিয়াম সংস্কারে অনেক টাকা খরচ করতেছে পাকিস্তান। এখন তারা এই টুর্নামেন্ট থেকে বাড়তি আয় করার দিকে মনোযোগী হচ্ছে। সবশেষ ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সময় পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলোর সংস্কার হয়েছিল। এরপর আর বড় কোনো সংস্কার হয়নি। ২৯ বছর পর পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলোর সংস্কারের পাশাপাশি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। খরচও হচ্ছে বেশ।
আরো পড়ুন:
শঙ্কা কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরলেন হারিস রউফ
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বেহাল দশা
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চা শ্রমিকদের জীবন: সামান্য বেতনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম
চা বাগানে নারী শ্রমিকরাই বেশি কাজ করেন। সকাল থেকে ছাতা, চুপড়ি নিয়ে বের হন, রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে তারা টিলায় টিলায় কাজ করেন দিনভর। ১৬৮টি চা বাগানে রয়েছেন দেড় লাখ চা শ্রমিক। তারা পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি। তাদের জীবনে রয়েছে নানা বঞ্চনার গল্প। জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাদের সংগ্রামী জীবনের বাঁকে বাঁকে সৃষ্টি হয় নতুন উপাখ্যান।
তবে বৈষম্য ছেড়ে দেয়নি তাদের। নতুন করে চা শিল্পে নানা সংকট দেখা দিয়েছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে উৎপাদন খরচ। এর মধ্যে বাজারে চায়ের দাম কমে যাওয়ায় বাগান চালাতে মালিকপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন।
চা শ্রমিকরা জানান, তাদের জীবনমান উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ। উপযুক্ত মজুরি না পাওয়ায় দেড়শ বছর ধরে তারা বৈষম্যের শিকার। চা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে চায়ের দাম কমে গেছে। বাজার দখল করে নিয়েছে চোরাই পথে আসা নিম্নমানের চা। ভোক্তারা না জেনেই নিম্নমানের চা কিনছেন।
আরো পড়ুন:
সমান কাজ করেও কম মজুরি পান আদিবাসী নারীরা
গাজীপুরে পেশা বদলাচ্ছেন অনেক শ্রমিক
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মৌলভীবাজার কুলাউড়া লংলাভ্যালীর বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শ্রমিক দিবস নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। কাজ করতে পারলেই ভালো থাকেন তারা।
কথা হয় করিমপুর চা বাগানে কর্মরত শ্রমিক শেফালী গোয়ালার সাথে। তিনি বলেন, “আমার স্বামী নেই। ১৭০ টাকা মজুরি পেয়ে কষ্টে চলে সংসার। দু্ই মেয়ে লেখাপড়া করে। তাদের খরচ জোগাতে অনেক কষ্ট হয়।”
ইটা চা বাগানের চা শ্রমিক রুবি মৃগধা বলেন, “বাজারে চায়ের দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদেরও মজুরি বাড়বে। বর্তমান মজুরি দিয়ে চলতে কষ্ট হয়।” একই ভ্যালীর উত্তর ভাগ চা বাগানের শ্রমিক ভারতী গোড়াইত বলেন, “ম্যানেজার বলেন চা পাতার দাম নেই। বাজারে পাতার দাম বাড়লে আমাদেরও মজুরি বাড়বে। এই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো কঠিন।”
লংলাভ্যালীর সভাপতি শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, “চা শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে বৈষম্যের শিকার। নানা অজুহাত দেখিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে না।”
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, “দেড়শ বছর ধরে চা শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার। ১৬৮টি চা বাগানে রয়েছেন দেড় লাখ চা শ্রমিক। ১৫ বছর পর ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটলেও শ্রমিকদের ন্যূনতম একটা মজুরি বৃদ্ধি হয়নি। বাগান কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করছে না।”
কথা হয় চা বিশেষজ্ঞ ও উত্তরভাগ চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার মো. লোকমান চৌধুরীর সাথে। তিনি বলেন, “১ কেজি চা পাতা উৎপাদন খরচ বর্তমানে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর বিক্রি করতে হয় ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বাগান চালানো দিন দিন কঠিন হয়ে আসছে। অনেক বাগানই বন্ধ হওয়ার পথে। বাজারে চায়ের দাম কমে গেছে, বাজার দখল করে নিয়েছে চোরাই পথে আসা ভারতের নিম্নমানের চা। ভোক্তারা না জেনেই নিম্নমানের চা ক্রয় করছেন। আমরা চায়ের সঠিক মূল্য পাচ্ছি না।”
ঢাকা/সাইফ