সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে মামলা
Published: 17th, February 2025 GMT
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও তাঁর স্ত্রী হনুফা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রায় ১১ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মুজিবুল হক ও তাঁর স্ত্রী ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে মুজিবুল হক এবং তাঁর স্ত্রী টাকা অর্জন করেছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, পাবলিক সার্ভেন্ট (জনগণের সেবক) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে মুজিবুল হক ৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। আর মুজিবুলের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁর স্ত্রী হনুফা আক্তার ৩ কোটি ২৮ লাখ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
এর আগে গত ৯ জানুয়ারি মুজিবুল হকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এদিকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ তদন্তে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক-বর্তমান ১২ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুদক। এর মধ্যে সাইফুল আলমের ছেলে ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমও রয়েছেন।
আজ সোমবার দুদকের উপপরিচালক মো.
তলব করা অন্যরা হলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আবু সাঈদ মোহাম্মদ কাসেম, জামাল মোস্তফা চৌধুরী ও মো. সারওয়ার হোসেন। এ ছাড়া ব্যাংকটির কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা সিরাজী, দিলরুবা হায়াত, মো. আবু হানিফ, শরিফুল ইসলাম, মো. শামসুদ্দোহা, মীর রহমত উল্লাহ, আবু সাঈদ মো. ইদ্রিস ও কাজী মো. রেজাউল করিম।
২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে অনুসন্ধানকাজে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে দুদকের পরিচালককেও (মানি লন্ডারিং)।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ব ল হক ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫