আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা নীরবে-নিভৃতে বিএনপিতে ঢোকার পাঁয়তারা করছে: আরিফুল হক চৌধুরী
Published: 17th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী যেন বিএনপিতে জায়গা না পান সে বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বিভিন্ন এলাকায় নীরবে-নিভৃতে আমাদের বিভিন্ন সংগঠনে ঢুকে যাওয়ার পায়তাঁরা করছে। এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। কোনো অবস্থাতেই এরা যেন আমাদের সংগঠনে ঢুকতে না পারে। আমাদের সংগঠনকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ না করতে পারে।’
আজ সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজার পৌরসভা প্রাঙ্গণে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো ও দ্রুত নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুনকিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা জনগণের পালস বোঝেন না: সালাহ উদ্দিন আহমদ৪৮ মিনিট আগেঅন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে সমাবেশে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলে সময় ক্ষেপণ না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তারিখ ঘোষণা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে আশ্বস্ত করবেন। বিএনপি সর্বাত্মকভাবে আপনাদের সহযোগিতা করছে। জনগণের জন্য ন্যায়সংগত যতটুকু করবেন, তার সপক্ষে আপনাদের সমর্থন দিয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি থেকে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের সর্বাগ্রে জাতীয় নির্বাচন। পরে সরকার যে গঠন করবে, তারাই স্থানীয় সরকার নির্বাচন করবে।’
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, সেটির জন্য সরকারের যা যা করা প্রয়োজন, তা করতে হবে। সামনে মাহে রমজান আসছে, আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সেই সিন্ডিকেট থেকে বেরিয়ে এসে দ্রব্যমূল্য যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতর থাকে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম। জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও মুজিবুর রহমান চৌধুরী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল ওয়ালী সিদ্দিকী, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুনঅবিলম্বে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ছিনিমিনি খেলা চলবে না: আবদুল মঈন খান১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র আম দ র আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক