ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ‘প্রয়োজনে’ আলোচনায় রাজি আছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধ অবসানে দরকার হলে এই আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। খবর বিবিসির।

তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের বিষয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে প্রথমবারের মতো উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। বৈঠকের মাঝেই ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হলো।

ক্রেমলিন বলেছে, ‘‘রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে ‘প্রয়োজনে’ কথা বলতে প্রস্তুত আছেন।’’ তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেমলিন।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া

সৌদি আরবে পৌঁছালেন মার্কো রুবিও

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেন, ‘‘পুতিন নিজেই বলেছেন যে, প্রয়োজনে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবেন। তবে চুক্তির আইনি ভিত্তি হিসেবে জেলেনস্কির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন বাস্তবতা বিবেচনা করে আলোচনার প্রয়োজন আছে।’

পেশকভ আরো বলেন, “রাশিয়া ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিরুদ্ধে নয়। কারণ তা এটিকে (রাশিয়া) সুরক্ষার জন্য হুমকি হিসেবে দেখায় না।”

“এটি যে কোনো দেশের সার্বভৌম অধিকার। আমরা একত্রিকরণ ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলছি এবং এখানে অবশ্যই কেউ কোনো দেশে কিছু নির্দেশ দিতে পারে না। আমরা এটি করতে যাচ্ছি না।” যোগ করেন তিনি।

পেসকভ জানান, “তবে সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা বা সামরিক জোট সম্পর্কিত বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের অবস্থান সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে আরো একটি সমস্যা রয়েছে এবং এটি সবার কাছে সুপরিচিত।”

মস্কো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে প্রাথমিক আলোচনা হবে আজকের বৈঠকে।

রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক অংশ নিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ। রাশিয়ার পক্ষ থেকে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ ও আরেক কর্মকর্তা কিরিল দিমিত্রিয়েভ।

এই বৈঠকের মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকের পথ সহজ হবে বলে জানিয়েছে দুই দেশই।

এদিকে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার এই বৈঠকে ইউক্রেন বা ইউরোপের দেশগুলোকে যুক্ত করা হয়নি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই রাশিয়া ‘প্রীতি’ নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং সামরিক জোট ন্যাটোর দুশ্চিন্তা বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যদি ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটে তাহলে ইউরোপের দেশগুলোর জন্য তা বিরাট বার্তা হবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মন্তব্যে ভারতে ক্ষোভ, কী বলেছেন তিনি

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সাধারণত আলোচনার কেন্দ্রে আসেন না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন তিনি—শুধু পাকিস্তানে নয়, সীমানা পেরিয়ে ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন কূটনৈতিক কেন্দ্রেও।

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগে কাশ্মীর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন আসিম মুনির। তাঁর এসব মন্তব্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু তারা এটির একেক অংশ শাসন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে এ ভূখণ্ড।

জেনারেল মুনিরের বক্তব্য যদিও প্রত্যক্ষভাবে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তবু তাঁর বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এটিকে বেশি আগ্রাসী মনোভাবের হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, সরকারকে ক্ষমতায় বসানো ও অপসারণে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী নানা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে। এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী প্রতিবেশী এ দুই দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি।

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল মুনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁকে প্রকাশ্যে তেমন কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে তাঁর একটি বক্তব্য ব্যাপকভাবে মনোযোগ কেড়েছে।

আরও পড়ুনভারতে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান, কনটেন্ট২৯ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

জেনারেল মুনিরের এ বক্তব্যের সঙ্গে পেহেলগামে হামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকতে পারে। কেননা পাকিস্তানের নেতারা অনেক বছর ধরেই এমন ধরনের আদর্শিক বক্তব্য–বিবৃতি দিয়ে আসছেন।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার স্থলে ছড়িয়ে আছে চেয়ার–টেবিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ