৪দিন পর বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু
Published: 22nd, February 2025 GMT
বন্ধের চার দিন পর দিনাজপুরের পার্বতিপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় ১ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
চালু হওয়া ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও তা থেকে প্রতিদিন ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো.
তিনি জানিয়েছেন, বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উত্তোলনকৃত কয়লা ব্যবহার করে তাপ বিদ্যুৎকন্দ্রের বিদুৎ উৎপাদন করা হয়। কয়লাভিত্তিক এই বিদুৎক্রেন্দ্রের তিনটি ইউনিটে মোট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ নম্বর ও ২ নম্বর ইউনিট মিলে মোট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ২৫০ মেগোওয়াট। ৩ নম্বর ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন।
এদিকে ২ নম্বর ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র সচল ছিল ১ নম্বর ও ৩ নম্বর ইউনিট। যা থেকে প্রায় ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩ নম্বর ইউনিট বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধুমাত্র চালু ছিল এক নম্বর ইউনিটটি।
সেই ইউনিটে বয়লারে লিকেজ হওয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে মঙ্গলবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ১ নম্বর ইউনিটটিও বন্ধ করা হয়। ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের উৎপাদন কার্যক্রম। বিদুৎ কেন্দ্রটি চারদিন পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর মেরামত শেষে আজ শনিবার থেকে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুবকর সিদ্দিক নিশ্চিত করে বলেন, “গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চলমান ১২৫ মেগাওয়াটের ১ নম্বর ইউনিটে বয়লারে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সচল ৩ নম্বর ইউনিটিও একই কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেরামত শেষে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হয়েছে। তবে ৩ নম্বর ইউনিটটি মেরামত কাজ চলমান রয়েছে, আশা করা যায় দ্রুতই সেটিও চালুকরা সম্ভব হবে।”
ঢাকা/মোসলেম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বড়প ক র য় ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।