আনিসুল হক ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্টদের ২৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
Published: 25th, February 2025 GMT
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী, ভাতিজা ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট দুজনের নামে থাকা মোট ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ ও তাঁরস্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১ জানুয়ারি মামলা করে দুদক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যে ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তার মধ্যে আনিসুল হকের নামে রয়েছে ১৭টি ব্যাংক হিসাব। এর বাইরে আনিসুল হকের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ভাতিজার নামে আরও পাঁচটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া আনিসুল হকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও দুই ব্যক্তির নামে পাঁচটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে।
আনিসুল হককে গত ২০ জানুয়ারি দুদকের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হক গ্রেপ্তার হন।
আরও পড়ুনসাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও উপদেষ্টা সালমান গ্রেপ্তার১৩ আগস্ট ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডি
নারায়ণগঞ্জে আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমাণ্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয় তাকে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।
তিনি বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমাণ্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থী আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে চর-থাপ্পর দেন বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পর দিতে দেখা যায়।
প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগন দিতে থাকেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
শুনানির আগে ও পরে বিএনপির মিছিলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধানকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়, পরে পুলিশ দ্রুততার সাথে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে এমনটা আমার নজরে পড়েনি।
যোগাযোগ করা হলে ‘আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে’ বলে জানিয়ে এতে বিএনপন্থী আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির।
তিনি আরও বলেন, ফাঁসির দাবিতে মিছিল করছি আমরা কিন্তু চর-থাপ্পর দিছে জনগণ। আইনজীবীরা কেন মারবে, তাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ আছে, সেই ক্ষোভ থেকে জনগণ তাকে মারধর করেছে।