সরকারের সংস্কার নিয়ে সংশয় বিশিষ্টজনের
Published: 26th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ব্যাপক সংস্কার ও বড় আকাঙ্ক্ষার চাপ ছিল। দায়িত্ব নেওয়ার পরই সরকারের পক্ষ থেকে অনেক কমিশন ও টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কমিশন ও টাস্কফোর্সের সুপারিশগুলো এ সরকারের বাস্তবায়ন করার কথা। বাস্তবে তা হচ্ছে না। ফলে সংস্কার নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক ইনে দু’দিনের সম্মেলনের শেষ দিনে এসব কথা বলেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বিশিষ্টজন। ‘অর্থনীতির পুনঃকৌশলকরণে টাস্কফোর্সের সুপারিশ’ শিরোনামে সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, কমিশন ও টাস্কফোর্সের সুপারিশগুলো এ সরকারের পক্ষেই বাস্তবায়ন করার কথা। দায়িত্ব নেওয়ার সাত মাসের মাথায় এখন সময় এসেছে সরকারকে জিজ্ঞেস করার– সংস্কারের সুপারিশগুলোর কোনটা বাস্তবায়ন হয়েছে।
সংস্কারের গণআকাঙ্ক্ষার প্রসঙ্গ টেনে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থাই শুধু নয়, বাস্তব পরিস্থিতির কারণে এর বাইরেও রাষ্ট্রীয় সব ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কারের একটা গণআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। বর্তমান সরকারের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এ সরকারের এতদিনে এমন কিছু সংস্কারকাজ শেষ করা উচিত ছিল। বাকি কাজ নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার সময় বলতে পারত, এ সংস্কারকাজগুলো শেষ হয়েছে, এগুলো এখনও বাকি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত সরকারের বাস্তবতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের বাস্তবতা এক নয়; এটি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। সংস্কার বাস্তবতা যা-ই হোক, সুনির্দিষ্ট সংস্কার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার বিষয়ে সংলাপ এবং ‘অ্যাডভোকেসি’ চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে এ জন্য আলাদা কমিশন গঠন করা যেতে পারে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত বাস্তবতায় দেশে বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স সরকারের কাছে যে সুপারিশ পেশ করেছে, সেগুলোর পর্যালোচনা ও বাস্তবায়ন পরিস্থিতি বুঝতে সিপিডির পক্ষ থেকে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ১২ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক কে এ এস মুর্শিদ টাস্কফোর্সের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অধিবেশনের সঞ্চালনায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকারের দিক থেকে উদ্যোগের অভাবে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি জানান, তারা প্রায় ৫০০ পাতার প্রতিবেদন দিয়েছেন। অথচ দুই পাতা পড়ে দেখার সময় হয়নি উপদেষ্টাদের। কেউ কেউ বলেছেন, তাদের পড়ে বুঝিয়ে দিয়ে আসতে হবে। এটাই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে কেন তাদের দিয়ে এত বড় কাজ করানো হলো।
আলোচনায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড.
আলোচনায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহানও টাস্কফোর্স এবং বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অতীতে সংস্কারের অনেক উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত আর বাস্তবায়িত হয়নি। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সংস্কারও থেমে যায়। সংস্কার বাস্তবায়নে সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রমুখ।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষক দিয়ে প্রথম শ্রেণির নাগরিক গড়া যায় না
দিনের প্রথম কর্মঅধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, আপনি প্রাথমিকের শিক্ষকদের রেখেছেন তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদায়। সেই তৃতীয় শ্রেণির প্রাথমিকের একজন শিক্ষক দিয়ে প্রথম শ্রেণির নাগরিক তৈরি করবেন, সেটা তো হয় না।
বেসরকারি কলেজ শিক্ষকরাও আর্থিক সুবিধায় পিছিয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক অনার্স-মাস্টার্সে পড়াচ্ছেন। কিন্তু আপনি তাঁকে এমপিও দিচ্ছেন না। যদি এমপিও না দেন, তাহলে তাঁকে কলেজে নিয়োগ দিলেন কেন? হয়তো ১০-১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে লোভ দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন এমপিও দিতে পারছেন না।
উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষা দিচ্ছি। কিন্তু মান নেই। মান নেই কারণ কোনো মনিটরিং নেই, এখানে প্রশিক্ষিত শিক্ষকও নেই। ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতনে অনার্স পড়াচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আর্জেন্টাইন গায়িকাকে ছেড়ে কি ইতালিয়ান মডেলের প্রেমে মজেছেন ইয়ামাল
কয়েক মাস ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।
তবে ইয়ামাল নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু একজনের সঙ্গে—আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র্যাপার নিকি নিকোল। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাত্র তিন মাসেই নিকোলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে ইয়ামালের। চোট, ছন্দহীনতা, বিতর্ক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন...সবখানেই হোঁচট খাচ্ছেন বার্সেলোনার এই উদীয়মান উইঙ্গার।
কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও খবর এসেছে যে ইয়ামাল বিশ্বাসভঙ্গ করাতেই তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন নিকোল। ইতালির মিলানে এক পার্টিতে দেশটির ২০ বছর বয়সী মডেল আনা গেগনোসের সঙ্গে নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে ইয়ামালকে। বিষয়টি জানতে পারাতেই নিকোল নাকি ইয়ামালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
তবে এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভি হোয়োসের অনুষ্ঠানে এসে ১৮ বছর বয়সী তারকা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা সব খবর ভিত্তিহীন।
আরও পড়ুনইয়ামাল কি সত্যিই ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে মজেছেন১৮ জুন ২০২৫ইয়ামাল বলেছেন, ‘আমরা (তিনি ও নিকোল) এখন আর একসঙ্গে নেই। কিন্তু সেটা বিশ্বাসভঙ্গের কারণে নয়। আমরা শুধু আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এইটুকুই। যা বলা হচ্ছে, কিছুই সত্যি নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি, অন্য কারও সঙ্গেও ছিলাম না।’
ইয়ামালের দাবি, যেসব সংবাদমাধ্যম গল্প বানিয়ে প্রতারণার খবর ছড়াচ্ছে, সেগুলো স্রেফ গুজব।
নিকি নিকোলও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাকে ঠকাত, আমি প্রথমেই সবাইকে জানাতাম। আগেও আমি তাই করেছি।’
২৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন গায়িকা উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকান গায়ক পেসো প্লুমার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে এনেছেন। গত বছর প্লুমা প্রতারণা করায় নিকোলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।
আরও পড়ুনইয়ামালের গাড়ি বা বান্ধবী নয়, ওর খেলা দেখুন: স্পেনের কোচ২৬ আগস্ট ২০২৫তবে ইয়ামালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙেছে। এখানে প্রতারণার কোনো ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন নিকোল, ‘আমরা আগেই আলাদা হয়েছি, শুধু ঘোষণা করিনি।’
ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ইয়ামাল এখন ফুটবলে মনোযোগী হতে চাইছেন।
ইয়ামালের গোল উদ্যাপন। কাল রাতে এলচের বিপক্ষে