রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা কেন প্রণয়ন করা হবে না: হাইকোর্ট
Published: 3rd, March 2025 GMT
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সম্পর্কে বলা রয়েছে। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা (গাইডলাইন) কেন প্রণয়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। এই ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই উল্লেখ করে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ২০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যটার্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।
পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
রিট আবেদনকারী আইনজীবীর ভাষ্য, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি সাজাপ্রাপ্ত কাউকে ক্ষমা করতে পারেন। এই ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্ষমা পেয়েছেন, এর বেশির ভাগ হত্যা মামলার আসামি। ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো নীতিমালা নেই। অর্থাৎ কিসের ভিত্তিতে ও কোন কোন দিক বিবেচনায় ক্ষমা করা হয়—এ–সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন ঘটনাদৃষ্টে সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অপব্যবহার হয়, যেখানে রাজনৈতিক আদর্শ বিবেচনায় দণ্ডিতকে ক্ষমা করতেও দেখা যায়। যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সে জন্য ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক। তাই জনস্বার্থে রিট করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত র এই ক ষমত অন চ ছ দ র ক ষমত আইনজ ব প রণয়ন
এছাড়াও পড়ুন:
মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা নগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে নির্যাতন ও পরে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন দেশের ১০২ জন নাগরিক। আজ বুধবার এক বিবৃতিতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে শিক্ষক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, কথাসাহিত্যিক, লেখক, কবি, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা রয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বৈরাচার পতনের পর থেকে দেশবাসী ‘মব ভায়োলেন্সে’র একটি উল্লম্ফন দেখেছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা রইস উদ্দিনকে দুই মাস আগের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর সকাল ১০টায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হলে তাঁকে মৌলিক অধিকার হিসেবে খাদ্য ও চিকিৎসা কিছুই সরবরাহ করা হয়নি। ভোর চারটায় কারাগারেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এ মামলার তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে মব ভায়োলেন্স নামে রাহাজানি এবং নির্মম পুলিশি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশাবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, কথাসাহিত্যিক রাখাল রাহা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট পারভেজ আলম, কবি ও অধিকারকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, শিল্পী ও লেখক দেবাশিস চক্রবর্তী, অনুবাদক ও শিক্ষক জি এইচ হাবীব, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী বাকী বিল্লাহ, চলচ্চিত্রকার রাফসান আহমেদ, কবি ও সাংবাদিক সৈকত আমীন, রাজনৈতিক সংগঠক হাসান মারুফ রুমি, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন প্রমুখ।