বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বুধবার রাতে অবসর নিয়েছেন। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর তিন বছরের ব্যবধানে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে গেলেন মুশফিকুর। 

ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন। ধারাবাহিক সাফল্যের স্রোতে না ভাসালেও লাল-সবুজের বাংলাদেশকে বেশ কয়েকবার উল্লাসের সুযোগ দিয়েছেন, বুক ফুলিয়ে গর্বের সুযোগ করে দিয়েছেন। ২২ গজে শুধু ব্যাটিং নয়, মাঠের বাইরে তার সংকল্পবদ্ধ, লড়াইয়ের মানসিকতা, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যবসায় তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তাইতো তার বিদায়ের ঘোষণার দিনে আবেগের বিচ্ছুরণ হলো সতীর্থদের। তারা খুঁজে পাচ্ছেন গর্ব।  

তামিম ইকবাল

আরো পড়ুন:

মুশফিকুরের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’

বিষন্ন মুশফিকুরের ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা

‘‘মুশফিককে আমি এতোটুকুই বলতে চাই, দোস্ত তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে এবং আমি তোকে প্রতিটি স্তরে উন্নতি করতে দেখেছি। আমি দেখেছি, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেক মানুষের, আপনাদের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি আমি দেখেছি যে, একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব আমার কাছে মনে হয় সে সবই করেছে এবং এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এতো কষ্ট করে কেন? কিন্তু তার নিবেদন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা এটা কল্পনার বাইরে। আমি কথা বলে কোনোদিন কাউকে বোঝাতে পারব না।’’

‘‘আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন, বন্ধু আমি, এটা অনুভব করতে পারছি এটা ওর জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক। বন্ধু তুই যা অর্জন করতে পেরেছিস, যে-টুকুই তুই করেছিস তা অসাধারণ ছিল। অধিনায়ক হিসেবে, খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য…বাংলাদেশের প্রত্যেকে বছরের পর বছর তা মনে রাখবে।’’

মাশরাফি বিন মুর্তজা

‘‘তোমার বিদায়ের ঘোষণায় এক লহমায় অনেক কিছু ভেসে উঠল চোখে। এত বছরের একসঙ্গে পথচলা, মাঠের ভেতরে-বাইরে কতশত স্মৃতি! ওয়ানডেতে তোমার রেকর্ডই তোমার হয়ে স্বাক্ষ্য দেবে অনেক কিছুর। তোমার ব্যাটের দ্যুতিতে কত আলোর দিন এসেছে দেশের ক্রিকেটে! তবে রেকর্ড বইয়ে লেখা থাকবে না, কতটা নিবেদন আর নিষ্ঠায় তুমি ক্যারিয়ার গড়েছিলে, কতটা ঘামের স্রোত পেরিয়ে সাফল্যের তীর ছুঁয়েছিলে। তোমার পরিশ্রম, প্রতিজ্ঞা আর ত্যাগের গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আশা করি, সাদা পোশাকের বাকি অধ্যায়টুকু রঙিন করে তুলবে। তোমার ব্যাটে অভিজাত সংস্করণে দেশের ক্রিকেট সমৃদ্ধ হবে আরও…।’’

তাসকিন আহমেদ

‘‘একটা যুগের অবসান! মুশি ভাই, তোমাকে ছাড়া বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট কল্পনা করা কঠিন। তোমার আবেগ, নিষ্ঠা এবং লড়াইয়ের মনোভাব আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। তোমার সাথে মাঠে ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং তোমার কাছ থেকে শেখা সম্মানের। পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য তোমাকে শুভকামনা - তোমার গৌরব চিরকাল বেঁচে থাকবে।’’

সৌম্য সরকার

‘‘বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে কাটানো স্মৃতিগুলো লালন করব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি সেবার জন্য ধন্যবাদ। নতুন শুরু এবং সামনের জীবনের অভিযানের জন্য শুভকামনা। অবসর শেষ নয়, এটি কেবল পরবর্তী অধ্যায়ের শুরু। অবসরের শুভেচ্ছা ভাই।’’

শরিফুল ইসলাম

‘‘অবসরের শুভেচ্ছা, মুশফিকুর রহিম ভাই.

..আপনি আমার কাছে একজন অনুপ্রেরণার নাম। আমি যখন বোলিং প্রান্তে থাকি আপনি কিপিং প্রান্তে সেই মুহুর্তটা মিস করবো, সেইসময় যেভাবে সাপোর্ট করতেন ভালো ডেলিভারি করার জন্য সেটা অসাধারণ। আমার কাছে আপনি সব সময়ই সেরা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এতো সুন্দর সময় উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা।’’

তাওহীদ হৃদয়

‘‘বগুড়া স্টেডিয়ামে আপনি প্র্যাকটিস করছেন শুনে ছোটবেলায় আপনাকে দেখার আশায় স্টেডিয়ামের গেইটের গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা থেকে শুরু করে, ওডিআই -এর আন্তর্জাতিক ক্যাপ আপনার হাত থেকে গ্রহণ করা এবং একই ড্রেসিং রুম শেয়ার করা:- আমার কাছে রূপকথার গল্পের থেকে কম নয়!! 

‘‘এরকম লাখো ছেলেদের আইডল আপনি, যার জন্য আমার মতন অনেকেই আপনাকে একবার দেখবে বলে কতো দিন অপেক্ষা করেছে। আপনি আমার আইডল, কতোটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি তা হয়তো বুঝতেও পারবেন না।’’

‘‘আমি বাকরুদ্ধ এবং হতবাক, তবুও আমার আদর্শ মুশফিকুর রহিমের অবসরে আমি খুশি। আমি তোমাকে অন্য কারো চেয়ে বেশি মিস করব।’’

হান্নান সরকার, সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক

‘‘খেলাটার প্রতি তুমি কতটা সৎ ছিলা আর ঠিক কি পরিমাণ ডেডিকেশনের সাথে খেলে গেছো বছরের পর বছর ধরে, তা খুব কাছ থেকেই দেখা। শেষটা হয়তো সেরাভাবে হলো না, কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে তোমার অবদান কোনোদিন অস্বীকার করা সম্ভব না। কখনো না। তোমার আগামী দিনগুলো খুব সুন্দর হোক, মুশফিক। টেস্টে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।’’

আল-আমিন হোসেন

‘‘এক কিংবদন্তির বিদায়, স্মৃতিতে চির অম্লান! বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুশফিকুর রহিম, তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন! জয়ের স্বপ্ন বুনেছেন, দলের জন্য লড়েছেন, আর অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। তার নিবেদন, নেতৃত্ব, এবং অতুলনীয় পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে চিরদিন অমলিন থাকবে! আপনার দ্বিতীয় ইনিংস শুভ হোক, মুশফিক ভাই।’’

জাকের আলী অনিক

‘‘খুব মিস করবো ভাই।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ম ম ইকব ল আম র ক ছ র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন

ঐকমত্য কমিশন দেশ ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁরা স্বাক্ষর করেছেন জুলাই সনদে।

কিন্তু ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ জমা দিয়েছে, সেখানে অনেক কিছুই বদলে গেছে। যেমন বিএনপিসহ অন্যান্য দলের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট নেই।

এর চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, সব দল মিলে একমত হয়েছিল—এমন বিষয়ও নাকি কমিশনের সুপারিশে বদলে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অফিস-আদালতে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রাখার বিধানটি বিলুপ্ত করার বিষয়ে সব দল একমত হয়েছিল।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে জট খুলুন, সময় কিন্তু চলে যাচ্ছে০১ নভেম্বর ২০২৫

কিন্তু পরবর্তী সময়ে কমিশনের সুপারিশে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানোর বিধানটি বিলুপ্ত করার বিষয় সনদে রাখা হয়নি।

শুধু তা-ই নয়, এমন আরও অনেক বিষয় কমিশনের সুপারিশে যুক্ত করা হয়েছে, যা নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়নি।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে পরবর্তী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।ঐকমত্য স্থাপন করতে গিয়ে এখন কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে কমিশন।

অভিযোগ উঠেছে, তারাই অনৈক্য স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। কমিশন মূলত কালক্ষেপণ করেছে সংস্কারের নামে।

আদতে তাদের সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে তারা নতুন কোনো সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারেননি, যা আসলেই কার্যকর করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ যেন ব্যর্থ না হয়৩০ অক্টোবর ২০২৫

কমিশনে যেসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছে তার বেশির ভাগই বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে আছে।

যেমন বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের জন্য একাধিক কমিশন করার প্রস্তাবনা বিএনপির ৩১ দফাতেই ছিল।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনার পরিকল্পনা বিএনপি আগেই প্রচার করেছে।

নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের ক্ষমতার সম্পর্ক পুরোপুরি আলাদা করা ও ভারসাম্য আনার বিষয়ে বিএনপি একাধিকবার আলাপ করেছে।

ফলে বোঝাই যাচ্ছে, কমিশন তেমন নতুন কোনো আলাপ সামনে আনতে পারেনি। ভবিষ্যতে যে নির্বাচিত সরকার আসবে, তাদের দুর্বল করতে নানা কৌশল বাস্তবায়নই যেন ছিল এই কমিশনের লক্ষ্য।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা। আর কাউকে ফ্যাসিবাদী হতে দেওয়া যাবে না—এ যুক্তি দিয়ে কমিশন মূলত বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে ক্ষমতার নতুন অংশীদার সৃষ্টি করতে চেয়েছিল সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের মধ্য দিয়ে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে লুকোচুরি হলে ভালো হবে না২৭ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপিসহ কয়েকটি দলের বিরোধিতার মুখে কমিশনে প্রস্তাবটি আর আলোচনায় রাখতে পারেনি। কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে যথেষ্ট অসংগতি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, জুলাই সনদ অনুযায়ীই সংবিধান সংস্কার পরিষদকে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে।

চাইলেও আগামী জাতীয় সংসদ তাদের ইচ্ছেমতো সংবিধানে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজন, বিয়োজন করতে পারবে না। এ থেকে পরিষ্কার, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম সংসদের কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই সংবিধান পরিবর্তন বা সংস্কারে।

এর ফলে ভিন্নমতের অংশগ্রহণ, সংসদে আলোচনার গণতান্ত্রিক পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হতে হবে দেশকে। প্রকৃতপক্ষে সংবিধান বিষয়ে আগামীর নির্বাচিত সংসদকে ঠুঁটো জগন্নাথ-এ পরিণত করতে চাইছে কমিশন।

ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ করেছে, পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত সংবিধান সংস্কার পরিষদ প্রথম অধিবেশনের শুরু থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ করবে।

এই ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সময় এটি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

যত দূর জানি, কমিশনে এ নিয়ে আলাপই করা হয়নি। তবে এই ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ও বাধ্য থাকবে হুবহু কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে। তাদের নিজস্ব কোনো মত, পরিবর্তন-পরিমার্জনের সুযোগ থাকছে না।

অর্থাৎ ঐকমত্য কমিশনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তে একটি অনির্বাচিত প্রতিনিধিদল হিসেবে কার্যত ক্ষমতা ধারণ করবে।

কমিশন গণভোটের বিষয়টিও উল্লেখ করেছে তাদের সুপারিশে। তারা এমনকি জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করা যায় বলে মত দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্যযোগ্য এবং বাংলাদেশের বাস্তবতায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে।

দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। গণধিক্কৃত দলে পরিণত হয়েছে। রাজনীতিতে এখন নিষিদ্ধ। ইতিহাসের ট্র্যাজেডি হচ্ছে, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে ইতিহাসের শিক্ষার কথা তাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

গণভোট আয়োজনে যেমন খরচের বিষয়টি আছে। তেমনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারসহ তার মিত্রদের ষড়যন্ত্রও থেমে নেই।

এ অবস্থায় গণভোট ব্যর্থ হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তা ছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানের বড় একটি দলকে নাখোশ রেখে গণভোট আয়োজন নতুন রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টিরই নামান্তর বলে মনে হচ্ছে।

কমিশনের আচরণে এমন মনে হওয়া স্বাভাবিক যে কাউকে খুশি করতে এবং কাউকে রুষ্ট করতে এসব সুপারিশ আনা হয়েছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি গ্রহণযোগ্য, কার্যকর, বিভিন্ন মতের আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে গণতান্ত্রিক সংসদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

শুধু কাগজে-কলমে কিছু সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উন্নতি ঘটবে না। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট এবং কার্যকর সংসদ পারে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটাতে।

কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা জাতীয় নির্বাচনকে নতুন করে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। সরকার মুখে মুখে বলছে বটে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে; কিন্তু বাধাগুলো দূর করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে না।

দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। গণধিক্কৃত দলে পরিণত হয়েছে। রাজনীতিতে এখন নিষিদ্ধ।

ইতিহাসের ট্র্যাজেডি হচ্ছে, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে ইতিহাসের শিক্ষার কথা  তাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

ড. মারুফ মল্লিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক

*মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আপিল বিভাগের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি
  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
  • বিশ্ব শিক্ষক দিবস: রাবিতে ৩ অধ্যাপককে সম্মাননা
  • জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন
  • টি-টোয়েন্টি থেকে উইলিয়ামসনের অবসরের ঘোষণা
  • ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন মুজিবুর রহমান
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি