জুলাই হত্যা মামলার আসামি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি ‘জয় বাংলা শিক্ষক সমাজ’ এর আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস ক্যাম্পাসে এলে আটক করেন শিক্ষার্থীরা।

আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে জবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজাউদ্দিন সুজা ও ছাত্রদল নেতা আবু বকর খানের ছত্রছায়ায় তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যার পূর্ব মুহুর্তে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে কলাভবনের সামনে থেকে জবি শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। পরে ওই শিক্ষককে প্রক্টরের জিম্মায় শিক্ষার্থীরা ছেড়ে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মিল্টন বিশ্বাসের নামে দুইটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কাছে একটি চিঠি নিয়ে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জন সুশান্ত বিশ্বাস নামে এক ব্যাক্তি। জন সুশান্ত নিজেকে তার আত্মীয় ও ছাত্রদল নেতা বলে পরিচয় দেন। তবে ছাত্রদলে তার কোন পদ-পদবি নেই।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক  বিভিন্ন ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীদের মিল্টন বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে ১২ লাখ টাকার লেনদেনের অভিযোগ করে পোস্ট করতে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, ২৪-এর ছাত্র হত্যা মামলার আসামিকে কেন ছাত্রদল নেতা আবু বকর, সাংবাদিক সমিতির সাবেক নেতা সুজা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দিল? তাদের শেল্টারেই এ শিক্ষক প্রবেশ করেছেন।   

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জিলন বলেন, “ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী আবু বকরের সঙ্গে জনি নামের একজন লোকসহ বাংলা বিভাগের শিক্ষক মিল্টন বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করতে দেখি। মিল্টন বিশ্বাসকে ধরার পর তার হাতে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য একটা দরখাস্ত দেখতে পাই।

“জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘দরখাস্ত রইছ উদ্দিন স্যারের কাছে নিয়ে আসছি।’ কার সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছে জিজ্ঞেস করলে তিনি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.

সুজা উদ্দিন সুজার নাম জানান। মিল্টন বিশ্বাসের নামে দুটো হত্যা মামলা রয়েছে,”- যুক্ত করেন তিনি।

এ সময় নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দেওয়া জনের মোবাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বকরের ফোন নাম্বার পাওয়া যায়। জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আবু বকর এবং সাবেক সাংবাদিক নেতা সুজাউদ্দিনের সুজা সঙ্গে যোগসাজশে ক্যাম্পাসে এসেছেন বলে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী অভিযোগ করেন। 

এ বিষয়ে মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “আমার নামে দুইটা মামলা আছে। মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আমি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন স্যারের কাছে চিঠি দিতে এসেছিলাম।”

কার শেল্টারে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংবাদিক নেতা সুজাউদ্দীন সুজা ও আলামিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসেছি।”

এর আগেও ক্যাম্পাসে এসে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাছির উদ্দীন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আমি তো না করতে পারি না। মিল্টন স্যার একজন শিক্ষক হিসেবে দেখা তো করতেই পারেন।”

মিল্টন বিশ্বাসের সঙ্গে থাকা তার আত্মীয় পরিচয় দেওয়া জন বলেন, “আমি ছাত্রদলের কেউ নই। মিল্টন বিশ্বাসের সঙ্গে এসেছিলাম। আমার ভুল হয়েছে।”

শেল্টার দেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা আবু বকর বলেন, “জনের বাড়ি আমার জেলায়। তিনি ক্যাম্পাসে আসার পরে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তার সঙ্গে আগে থেকে কখনো যোগাযোগ ছিল না।”

অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজাউদ্দিন সুজা বলেন, “আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ তুলে একটা চক্রান্তকারী মহল ফাসানোর চেষ্টা চালিয়েছে। এগুলো বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং আমি অবগত নই।”

দরখাস্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “সে আমার কাছে মামলা বাতিলের জন্য আবেদন নিয়ে আসে। পরে আমি তাকে বলি এটা শিক্ষক সমিতির অফিসে জমা দেবেন। আমার এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজামুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ এলাকা। আমরা কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে পুলিশ প্রশাসনের হাতে এভাবে তুলে দিতে পারি না। আমি এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল টন ব শ ব স র ছ ত রদল ন ত য গ কর র জন য ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টাইন গায়িকাকে ছেড়ে কি ইতালিয়ান মডেলের প্রেমে মজেছেন ইয়ামাল

কয়েক মাস ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।

তবে ইয়ামাল নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু একজনের সঙ্গে—আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র‍্যাপার নিকি নিকোল। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাত্র তিন মাসেই নিকোলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে ইয়ামালের। চোট, ছন্দহীনতা, বিতর্ক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন...সবখানেই হোঁচট খাচ্ছেন বার্সেলোনার এই উদীয়মান উইঙ্গার।

কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও খবর এসেছে যে ইয়ামাল বিশ্বাসভঙ্গ করাতেই তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন নিকোল। ইতালির মিলানে এক পার্টিতে দেশটির ২০ বছর বয়সী মডেল আনা গেগনোসের সঙ্গে নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে ইয়ামালকে। বিষয়টি জানতে পারাতেই নিকোল নাকি ইয়ামালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

তবে এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভি হোয়োসের অনুষ্ঠানে এসে ১৮ বছর বয়সী তারকা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা সব খবর ভিত্তিহীন।

আরও পড়ুনইয়ামাল কি সত্যিই ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে মজেছেন১৮ জুন ২০২৫

ইয়ামাল বলেছেন, ‘আমরা (তিনি ও নিকোল) এখন আর একসঙ্গে নেই। কিন্তু সেটা বিশ্বাসভঙ্গের কারণে নয়। আমরা শুধু আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এইটুকুই। যা বলা হচ্ছে, কিছুই সত্যি নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি, অন্য কারও সঙ্গেও ছিলাম না।’

ইয়ামালের দাবি, যেসব সংবাদমাধ্যম গল্প বানিয়ে প্রতারণার খবর ছড়াচ্ছে, সেগুলো স্রেফ গুজব।

নিকি নিকোলও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাকে ঠকাত, আমি প্রথমেই সবাইকে জানাতাম। আগেও আমি তাই করেছি।’

২৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন গায়িকা উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকান গায়ক পেসো প্লুমার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে এনেছেন। গত বছর প্লুমা প্রতারণা করায় নিকোলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।

আরও পড়ুনইয়ামালের গাড়ি বা বান্ধবী নয়, ওর খেলা দেখুন: স্পেনের কোচ২৬ আগস্ট ২০২৫

তবে ইয়ামালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙেছে। এখানে প্রতারণার কোনো ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন নিকোল, ‘আমরা আগেই আলাদা হয়েছি, শুধু ঘোষণা করিনি।’

ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ইয়ামাল এখন ফুটবলে মনোযোগী হতে চাইছেন।

ইয়ামালের গোল উদ্‌যাপন। কাল রাতে এলচের বিপক্ষে

সম্পর্কিত নিবন্ধ