প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আব্বাসীর বিচার দাবি, ২২৩ বিশিষ্টজনের বিবৃতি
Published: 11th, March 2025 GMT
প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন বিশিষ্টজন। সোমবার কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার, বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খানসহ ২২৩ লেখক, সাংবাদিক, আলেম, সুফি, গবেষক, শিক্ষক ও সাংবাদিক বিবৃতিতে সই করেন।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন– সাংবাদিক কাজী জেসিন, উন্নয়ন গবেষক আসীফ মুনীর খান, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী এলিজা খান, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক জিয়া হাশান, ঢাকার বকশীবাজারের খানকাহ ফকির জহুর আল ক্বাদরীর পীরসাহেব ফকির শাহ সাঈদ আনওয়ার মোবারকী আল ক্বাদরী, বিশ্ব সুফিবাদ সর্বজনীন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ সুফি শামসুজ্জামান চৌধুরী (সজিব), লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ, জুলাই সংগ্রাম পরিষদের মুখপাত্র আজহারুল হক লিংকন, শৈলকুপা সম্মিলিত খামারি পরিষদের রাজনীতিক মুখপাত্র তানজীর আলম রবিন, ড.
বিবৃতিতে বলা হয়, এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সম্প্রতি ‘শাতিমে রাসুল’ [নবী (সা.) অবমাননাকারী] ও মুরতাদের (ধর্মদ্রোহী) শাস্তির নামে নিজ হাতে হত্যার অধিকার দাবি করেছেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ‘তৌহিদি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আর মিছিল নয়, এবার শরিয়াহ আদালতে মুরতাদের শাস্তি ফাঁসি আমরা নিজ হাতে কার্যকর করব।’ বক্তব্যে তিনি যাদের হত্যা করবেন বলে সংকল্প প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে আছেন বিশিষ্ট দার্শনিক ফরহাদ মজহার, সলিমুল্লাহ খান, লেখক-গবেষক রাখাল রাহা এবং কবি সোহেল হাসান গালিব।
বিবৃতিতে বলা হয়, আব্বাসীর হত্যার ঘোষণা দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য গুরুতর অপরাধ এবং ইসলামের মূলনীতি, কোরআনের শিক্ষা, ন্যায়বিচারের আদর্শ ও আধুনিক রাষ্ট্রবিধানের পরিপন্থি। চরম উগ্রবাদী আব্বাসী তাঁর ঘোষণায় দেশের কবি, লেখক, দার্শনিক বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য অনুসারী লেলিয়ে দিয়েছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”
এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?
এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী