দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি ‘আস্থাপূর্ণ’ জায়গায় উপনীত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘সেটি হচ্ছে ওই বিদায়ী (শেখ হাসিনার সরকার) বর্বর, অমানবিক ও ফ্যাসিবাদী শক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো সুযোগ আমরা তৈরি করে দেব না।’

মাওলানা মামুনুল হক আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি হোটেলে আয়োজিত তাঁর দলের ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন।

ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, এবি পার্টির মহাসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং চীন, ইরান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

মামুনুল হক একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন পরিবেশে রমজান উদ্‌যাপন করতে পারায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে স্বদেশে পরবাসীর মতো জীবন যাপন করতে হয়েছে। অগণিত অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গুম–খুনের শিকার হয়েছেন। দিনের পর দিন নয়, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ফেরারি জীবন যাপন করতে হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি ‘আস্থাপূর্ণ’ জায়গায় উপনীত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘.

..আশা করি, যে ফ্যাসিবাদ উৎখাত হয়েছে, আগামী বাংলাদেশ যাঁরা পরিচালনা করবেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় আল্লাহ যাঁদের অধিষ্ঠিত করবেন, তাঁরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন।’

সংস্কারের প্রসঙ্গ তুলে মামুনুল হক বলেন, ‘একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাচ্ছি। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আগামী বিনির্মাণের লক্ষ্যে সংস্কারের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যে উদ্যোগকে দল–মতনির্বিশেষে সব রাজনৈতিক পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে এবং এখনো সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সংবিধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে আমরা আশা করছি, আগামী বাংলাদেশে বহু দল-মতের সম্মিলনে একটি সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে উঠবে।’

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ও বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান মামুনুল হক। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোর যেকোনো রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলত। এই রমজানে সেটা হয়নি। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ। তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগাম টেনে ধরেতে সক্ষম হয়েছে। সেই সঙ্গে এই লোডশেডিংমুক্ত ঢাকাসহ প্রায় পুরো বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ জনজীবনে স্বস্তি দিয়েছে।

বক্তব্যে মামুনুল হক পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত এক ব্যক্তিকে ‘অদম্য নারী’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়ার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সভ্য নাগরিকদের দেশ হিসেবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে কখনোই ইসলামবিরোধী কোনো সংস্কৃতিকে মেনে নিতে পারে না।

ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ঈসা শাহেদী, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, হেফাজতে ইসলামের মুনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক র জন ত ক ইসল ম রমজ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ