কাজের অনুমতি যাচাই করে ভিসা দিচ্ছে ইতালি
Published: 20th, March 2025 GMT
কাজের অনুমতি (নুলাওস্তা) যাচাই করে ভিসা দিচ্ছে ইতালি। যারা ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবরের আগে নুলাওস্তাসহ ভিসা আবেদন করেছেন এবং যাদের এখনও কোনো তথ্য আসেনি, তাদের আবেদন বহাল রয়েছে। গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনকে এ তথ্য জানান ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে অভিবাসী শ্রমিকদের জমে থাকা ভিসা আবেদনগুলো নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্র সচিব। নুলাওস্তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বা বাতিল হওয়ার কারণে ভিসার আশায় থাকা অভিবাসীপ্রত্যাশী ও তাদের পরিবার বড় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা সমাধানে রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্র সচিব।
এ সময়ে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র সচিবকে জানান, ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর ইতালি সরকার নতুন আইন করেছে। ফলে ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবরের আগে বাংলাদেশিদের অনুকূলে দেওয়া নুলাওস্তাগুলো বর্তমানে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে আইন হওয়ার আগে যারা ভিসা আবেদন জমা দিয়েছেন, তাদের পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে দূতাবাস। তবে নুলাওস্তা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আবেদন এখনও বহাল রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, ইতালির প্রাদেশিক অভিবাসন কর্তৃপক্ষ একান্তভাবে নুলাওস্তা যাচাই করে থাকে। এ কর্তৃপক্ষই যাচাই করে জানিয়ে দেয় কার নুলাওস্তা সঠিক নাকি বাতিল করা হয়েছে। ফলে যাচাইয়ের অপেক্ষায় থাকা নুলাওস্তা সঠিক না বাতিল, এ প্রক্রিয়ায় দূতাবাসের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর ইতালি সরকারের নতুন আইন অনুযায়ী নুলাওস্তার মেয়াদও স্থগিত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ২০২৪ স ল র য চ ই কর
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না
জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।
আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।
লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।
তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।