টালমাটাল রাজনীতি আর গণঅভ্যুত্থানের মতো বাংলাদেশের প্রকৃতিও ২০২৪ সালের বৈরী অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে। এ বছরটা বাংলাদেশের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ভেসেছে দেশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত বছরের এপ্রিলে তাপমাত্রা ছিল ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহ চলে। এ পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং পরিবেশের ক্ষতি এমন মাত্রায় পৌঁছেছে, যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করছে। চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার বিপদ সামনের দিনে আরও বাড়তে পারে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) বুধবার প্রকাশিত ‘স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ক্লাইমেট রিপোর্ট’-এ উদ্বেগজনক এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ২১ মার্চ বিশ্ব হিমবাহ দিবস ও ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস এবং ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস সামনে রেখে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাটি বলছে, চরম আবহাওয়াজনিত কারণে ২০২৪ সাল ছিল বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগে রেকর্ড ক্ষয়ক্ষতির বছর। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের মানুষের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের ওপর। অতি গরম ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়, টাইফুনসহ নানা কারণে গত ১৬ বছরের মধ্যে ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে।

ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১০ বছরের মধ্যে প্রতিটি বছর বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০ উষ্ণতম বছরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালে গরম ছাড়াও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, এর তলদেশে তাপপ্রবাহ এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের  রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে। এর প্রভাব শত শত বছর এমনকি হাজার বছরও অপরিবর্তনীয় থেকে যাবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত ২০২৩ এবং ’২৪ সালের রেকর্ড তাপমাত্রার মূল কারণ ছিল ক্রমবর্ধমান গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন, যার সঙ্গে একটি শীতল লা নিনা থেকে, একটি উষ্ণ এল নিনোতে স্থানান্তর যুক্ত হয়েছিল। এ ছাড়া সৌরচক্রের পরিবর্তন, একটি বিশাল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং শীতলকারী অ্যারোসোলের পরিমাণ হ্রাসসহ অন্যান্য কারণ এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০২৪ সালে তাপমাত্রার রেকর্ড বৃদ্ধির বাইরেও আরও অনেক কিছু ঘটছে। এর মধ্যে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও বাড়ছে, হিমবাহ গলছে এবং অ্যান্টার্কটিকার সমুদ্রের বরফ দ্বিতীয় সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বন্যা, খরা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে খাদ্য সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার এ প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২৩-২৪ সালের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে হারে ক্ষতি হচ্ছে, তা ঠেকাতে জনগণ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর জলবায়ু নীতি গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন তারা।

জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড.

আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাবকে এত দিন আমরা ভবিষ্যতের বিষয় মনে করতাম। এর কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। এ বছর আমরা যেভাবে একের পর এক চরম আবহাওয়ার বিপদ দেখলাম, তাতে আমাদের মনে রাখতে হবে, এ অবস্থাটা সামনের দিনে বাড়তে পারে। ফলে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমরা টিকে থাকব। সেই পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার। সমস্যাগুলোকে জরুরি বিষয় হিসেবে না দেখলে রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়া শুরু করবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে জরুরি বনায়ন; দ্বিতীয়ত, মিঠাপানির উৎস সংরক্ষণ; তৃতীয়ত, কার্বন নিঃসরণ কমানো। বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। এ জন্য দরকার সমন্বিত জাতীয় নীতিমালা, যা দ্রুত গ্রহণ করতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জলব য় ঝ ক ২০২৪ স ল র কর ড জলব য় বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারের বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ। ফলে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডারা।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এই লভ্যাংশ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে রবিবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

তথ্য মতে, ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ১৪ জুলাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। লভ্যাংশ প্রদানে শেয়ারহোল্ডার নির্বাচনের জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৫ জুন।

সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.০৫ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২.৪৩ টাকা।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১.৭৯ টাকা।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্যসীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে, অস্ট্রেলিয়ার বিনোদন বাজার বাড়ছে
  • জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা
  • আইন সংশোধন করে কি ঠেকানো যাবে ইন্টারনেট বন্ধ
  • ম্যারিকোর ১ হাজার ৯৫০ শতাংশ চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অর্থনীতির আকারে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দশম
  • ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • সিটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা