প্রায় তিন বছর ধরে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত উপস্থাপক সামিয়া আফরিন। সিঙ্গাপুরে দুই বছর চিকিৎসা নিয়েছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি এত দিন পরিবার ও কাছের বন্ধুবান্ধব ছাড়া তেমন কেউ জানতেন না। ২০ মার্চ ঢাকার বনানীতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের অর্থসহায়তার জন্য পোশাক প্রদর্শনীর আয়োজনে নিজের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে কথা বলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে সামিয়া জানান, দুই বছর মেয়াদি চিকিৎসা কোর্স শেষ হয়েছে। সাত–আট মাস ধরে কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন না।

ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানানো প্রসঙ্গে

বনানীর ১২ নম্বর সড়কের ৪৪ নম্বর বাড়ির দোতলায় টেগোর টেরেসে ২০ মার্চ শুরু হয় ‘রিভোগ ওয়্যার টু কেয়ার’ নামের আয়োজন। নানা রঙের শাড়ি আর অন্যান্য বাহারি পোশাক নিয়ে তিন দিনের এই আয়োজন শেষ হয় গতকাল শনিবার। আয়োজনের উদ্যোক্তা ও উপস্থাপক সামিয়া আফরিন জানান, ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষদের জন্য তার এমন কিছু করার ইচ্ছা ছিল, যা সামগ্রিকভাবে সমাজের কাজে আসবে। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক সময় চাইলেও অনেক বড় কিছু করা সম্ভব হয় না। ভিন্নভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। সেই থেকেই শুরু। তাঁর ভাবনায় সানন্দ সাড়া দিয়েছেন তারকা বন্ধুরা। ভবিষ্যতে ক্যানসার–বিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে এমন আরও আয়োজনের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর ও তাঁর বন্ধুদের। এই আয়োজনে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি প্রকাশ্যে আনেন সামিয়া।

প্রথম আলোকে সামিয়া বলেন, ‘সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, কেন ক্যানসারে আক্রান্তদের জন্য পোশাক প্রদর্শনী করছি। একটা পর্যায়ে বাধ্য হয়েই আমার নিজের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি জানাই। আমি আসলে উপলব্ধি করতে পারছিলাম যে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের কতটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ ধরনের রোগীদের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়টা অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়। অনেকেই ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারেন না। ক্যানসারের রোগী মরেও যায়, মেরেও যায়, এ রকম একটা কথা প্রচলিত আছে। বিষয়টা হচ্ছে, আগে এই রোগ হতোই খুব কম মানুষের, তাই মানুষ মুখেও আনত না। বলতে চাইত না এই রোগের কথা। এটা একটা স্টিগমা ছিল। এখন দেখা যায়, প্রায় ঘরে ঘরে ক্যানসার। আমার এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ক্যানসার রোগীদের অর্থসহায়তার মাধ্যমে পাশে থাকা। তাই ভাবলাম, এখন সবাই জানুক।’

সামিয়া আফরিন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।

আরো পড়ুন:

ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ

ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।

এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ