শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে মশালমিছিল
Published: 25th, March 2025 GMT
শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে শ্রমিকদের পাওনা ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর তাঁরা সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
মিছিলে তাঁরা ‘আন্দোলনে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’; ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই;’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সায়েদুল হক নিশান বলেন, শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয় না এটা নিয়ে পুলিশের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, অথচ পুলিশ তাদের ওপর হামলা করল, তাদের আটক করল।
সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ বলেন, প্রতিবছরই ঈদের আগে আগে শ্রমিকদের মজুরির দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের অন্য কোনো শ্রেণির মানুষের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না। কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কখনো আটকে থাকে না। যে শ্রমিকেরা মাসের পর মাস পরিশ্রম করে এই বাংলাদেশ গড়ে তোলেন, তাদের বেতন মাসের পর মাস আটকে থাকে।
জাবির আহমেদ হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান।
মশাল মিছিলে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র কাউন্সিল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টও ছিল।
উল্লেখ্য, আজ সকালে গাজীপুরের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদের বোনাস, মাতৃত্বকালীন ছুটির টাকাসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রথমে শ্রম ভবনে যান। সেখান থেকে তাঁরা দুপুরের দিকে সচিবালয়ের দিকে রওনা হন। শ্রমিকদের মিছিলটি প্রেসক্লাব এলাকায় সচিবালয়মুখী রাস্তায় আসার পর পুলিশ তাঁদের যেতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে উত্তেজিত শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে, পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন, তবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’
কক্সবাজার জেলার লোকসংগীত শিল্পী বুলবুল আক্তার। এই শিল্পী নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের নিজস্ব ভাষা, সুর ও সংস্কৃতি। কালো বোরকার ফ্যাশনে সাধারণ ও সরল চেহারার এই শিল্পীর দরদি কণ্ঠে ফুটে ওঠে প্রেম, বিরহ, সমাজ ও প্রান্তিক জীবনের গল্প। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গেয়েছেন ‘মধু হইহই বিষ খাওয়াইলা’ ও ‘হালাসান গলার মালা’।
রসিক আড্ডার আয়োজনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠে এই আয়োজন চলে। দুপুরে বৃষ্টি এলে ভিজে বৃষ্টিবিলাসে মেতে ওঠেন আয়োজক এবং অনুষ্ঠান দেখতে আসা অনেকে।
অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। দূর থেকে মঞ্চে তাকালে বাঙালির ঐতিহ্যই চোখে ভেসে ওঠে। মঞ্চ তৈরি করা হয় প্রতীকী গ্রামবাংলার দৃশ্য কলাগাছ ও খড়ের ঘর দিয়ে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের বর্ষবরণকে ফুটিয়ে তুলতে এই আয়োজনে ছিল ধামাইল নাচ, চাকমা, মারমা ও খুমি জনগোষ্ঠীর নৃত্য ও আধুনিক নৃত্য। ব্যান্ডের মধ্যে ছিল ফিরোজ জঙ, আপনঘর, Sacrament-গারো ব্যান্ড, ব্যান্ড লাউ।
এই আয়োজনে গ্রামীণমেলায় ছিল নাগরদোলা, বানরখেলা, রণপা, বায়োস্কোপ ও পুতুলনাচ। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের খাবার ও পোশাকের স্টল ছিল।
আয়োজকদের একজন নাহিয়ান ফারুক বলেন, রসিক আড্ডা বাংলাদেশের সংস্কৃতি পাঠ ও তা চর্চা করে। রসিক আড্ডার তিনটি ম্যাগাজিন রণপা, কলন্দর ও সিনেযোগ বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি–নির্ভর আলোচনা করে এবং তা জনপরিসরে ফুটিয়ে তোলে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন করা হয়েছে।