চীনের আধিপত্য মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার বিরল খনিজ চুক্তি
Published: 21st, October 2025 GMT
বিরল খনিজ শিল্পে চীনের আধিপত্য মোকাবিলা করার উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তাই বিরল খনিজ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ কলম্বিয়ার
অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করলেন ট্রাম্প
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, এই চুক্তির আওতায় ‘প্রস্তুত’ প্রকল্পগুলোতে ক্যানবেরা ও ওয়াশিংটন ৮.
চুক্তির প্রাথমিক কাঠামো অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রকল্পগুলোতে দুই দেশ ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে, তবে অ্যালবানিজ বলেছেন, এই নতুন চুক্তি ‘দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে’।
এই চুক্তির পাশাপাশি সোমবার (২০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বহু বিলিয়ন ডলারের অকাস সাবমেরিন চুক্তি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ‘এটি পুরোদমে এগিয়ে চলেছে’।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, চুক্তিটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা যাচাই করা হবে, এবং তখন ধারণা করা হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া হয়তো যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাবমেরিন কিনতে পারবে না।
তবে এবার ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, অস্ট্রেলিয়া সাবমেরিন পেতে যাচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ বিরল খনিজ আহরণ এবং ৯০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাতকরণ একাই নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই খনিজগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়ি, সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি এই খনিজ হাতে পেতে চীনা সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল, যা তাদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি ও দুই দেশের বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের জেরে চীন সম্প্রতি বিরল খনিজ সরবরাহ সীমিত করার পদক্ষেপ নেওয়ার পর এ ঝুঁকি আরো বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া বিরল খনিজ সরবরাহ চুক্তি ঘোষণার পর আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার এ শিল্পের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বেড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বলেন, এই চুক্তির লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ায় খনিজ প্রক্রিয়াজাতকারণ প্রকল্পগুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ সহ তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ দ্রুততর করা।
উভয় দেশ এই খাতের কোম্পানি ও প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য বাজারমূল্য নির্ধারণ, অনুমতি এবং সরকারি পর্যালোচনার নিয়মাবলীর মতো বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করতেও সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে বলেছে যে, তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বার্ষিক ১০০ টন উন্নত গ্যালিয়াম শোধনাগার নির্মাণে বিনিয়োগ করবে এবং রপ্তানি-আমদানি ব্যাংকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোকে এগিয়ে নিতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই মার্কিন বিরল খনিজ সংস্থা এমপি ম্যাটেরিয়ালস এবং কানাডার ট্রিলজি মেটালস এবং লিথিয়াম আমেরিকার মতো সংস্থাগুলোতে একাধিক বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকল্প রয়েছে।
সহায়তার বিনিময়ে দেশটির সরকার সংস্থাগুলোতে মালিকানা অংশীদারিত্ব পেয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম বড় খনিজ উৎপাদনকারী দেশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো তারাও সেই খনিজ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল, কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের মধ্য দিয়েই এসব কাঁচামালকে ব্যবহারযোগ্য রূপ দেওয়া সম্ভব হয়।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র প রক র য প রকল প সরবর হ জ তকরণ
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের প্রতিটি ইঞ্চি এখন ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালে: রাজনাথ সিংয়ের হুমকি
পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি ভূমি এখন তাঁদের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তিনি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র তার প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে এবং বিশ্বজুড়ে ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে সুদৃঢ় করেছে।
রাজনাথ সিং ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আজ শনিবার ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস লিমিটেডের লক্ষ্মৌ ইউনিটে তৈরি সুপারসনিক ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ব্যাচটির উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ ব্রহ্মসকে ‘ভারতের ক্রমবর্ধমান দেশীয় শক্তির প্রতীক’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, তাদের ভূখণ্ডের প্রতিটি ইঞ্চি এখন ক্ষেপণাস্ত্রটির নাগালে।
বিজেপির এই মন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বিষয় যে অত্যাধুনিক ব্রহ্মস বুস্টার ভবনটি আজ লক্ষ্মৌতে উদ্বোধন করা হচ্ছে।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ জোর দিয়ে বলেন, ধনতেরাসের দিন (দিওয়ালির প্রথম দিন) চারটি ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় আত্মনির্ভরতার একটি মাইলফলক, যা একই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে।
রাজনাথ লক্ষ্মৌ ইউনিটের গতি ও দক্ষতার প্রশংসা করেন। ২০০ একরজুড়ে ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে গত মে মাসে এই ইউনিট উদ্বোধন করা হয়েছিল। মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এটি ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ব্যাচ তৈরি করে সরবরাহ করেছে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর জন্য বছরে প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে। বছরে এটি ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন এবং ৫০০ কোটি টাকার জিএসটি রাজস্ব আয় করবে। এই অর্জনের গতি ও দক্ষতা একটি রেকর্ড তৈরি করেছে।
ব্রহ্মসের সক্ষমতার ওপর জোর দিয়ে রাজনাথ বলেন, এর সুপারসনিক গতি, নির্ভুলতা ও দূরপাল্লার আঘাত হানার ক্ষমতা এটিকে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থায় পরিণত করেছে।
রাজনাথ আরও যোগ করেন, লক্ষ্মৌ, কানপুর, আগ্রা, ঝাঁসি, আলিগড় ও চিত্রকূটকে নিয়ে গঠিত প্রতিরক্ষা উৎপাদন করিডরের ছয়টি কেন্দ্রই এখন পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ করছে।