মক্কায় বাস করতেন কাজী আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে আবদুল বাকি নামে এক সৎ লোক। একদিন তার খুব ক্ষুধা পেল। কিন্তু তার কাছে কোনো খাবার ছিল না। খাবার কেনার মতো পয়সাও ছিল না। খাবার খুঁজতে গিয়ে তিনি একটি থলে কুড়িয়ে পেলেন। থলেটি নিয়ে বাড়ি এনে দেখলেন, তাতে একটি মোতির হার। এমন হার জীবনে দেখেননি।
এরই মধ্যে এক বৃদ্ধের চিৎকার কানে এলো, ‘যে আমার থলেটি ফিরিয়ে দেবে, তাকে আমি পাঁচ শ স্বর্ণমুদ্রা দেব।’ তিনি বৃদ্ধকে বাড়ি নিয়ে এলেন তিনি। লোকটি তার কাছে নিজ থলে, থলের ফিতা ও মোতির হারের হুবহু বর্ণনা দিল। কাজী আবু বকর থলেটি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। বৃদ্ধ তাকে পাঁচশ স্বর্ণমুদ্রা দিতে চাইলেন। কিন্তু তিনি নিলেন না। বললেন, ‘আপনার থলে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া আমার দায়িত্ব ছিল। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। সুতরাং আমি এর কোনো বিনিময় নেব না।
তিনি অভুক্ত রয়ে গেলেন।
কিছুদিন পরের কথা। কাজী আবু বকর সমুদ্রপথে সফরে বেরোলেন। হঠাৎ মাঝ দরিয়ায় জাহাজ ভেঙে গেল। সকল আরোহী ডুবে মারা গেল। তিনি জাহাজের একটি কাঠের খণ্ডে ভেসে বেঁচে গেলেন। ভেসে ভেসে এক দ্বীপে পৌঁছলেন। দ্বীপের অধিবাসীরা ছিল মুসলমান। তিনি দ্বীপের একটি মসজিদে গিয়ে উঠলেন। লোকেরা তার কোরআন তিলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হলো এবং তারা তার কাছে কোরআন শেখার আবেদন জানাল। তিনি তাদের কোরআন শেখাতে লাগলেন। এতে তার হাতে কিছু অর্থ জমা হলো।
আরও পড়ুনসহজ ওমরাহ ৩০ জানুয়ারি ২০২৫কেউ একজন তার জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এল। বলল, ‘আমাদের এখানে একটি এতিম মেয়ে আছে। সে ধনসম্পদেরও মালিক। আমরা চাই, আপনি তাকে বিয়ে করুন।’
তিনি রাজি হলেন। এতিম মেয়েটির সঙ্গে তার বিয়ে হলো। কাজী আবু বকর তার স্ত্রীকে প্রথম দেখতে গিয়েই তার চোখ আটকাল স্ত্রীর গলার হারে। এ দেখি হুবহু সেই হার, যা তিনি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। জানা গেলো, যেই বৃদ্ধকে তিনি হারটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনিই হলেন মেয়েটির বাবা। তিনি বলতেন, আমি পৃথিবীতে তার চেয়ে ভালো মানুষ দেখিনি, যে আমার মোতির হারটি কুড়িয়ে পেয়ে আবার ফিরিয়ে দিয়েছিল। তিনি দোয়া করতেন, হে আল্লাহ, আপনি এ মহৎ হৃদয়ের মানুষটিকে আমার সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ করিয়ে দিন৷ যেন আমার কলিজার টুকরো কন্যাকে তার সঙ্গে বিয়ে দিতে পারি। তার সেই প্রার্থনা আজ বাস্তবে রূপ নিল।
সূত্র: যাইলু তাবাকাতিল হানাবিলা: ১/৭৯)
আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২ উপদেষ্টার গড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৩
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে গতিরোধ করা, সরকারি কাজে বাধা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে রোববার রাতে গোয়ানঘাট থানায় ১৫০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন থানার এসআই ওবায়েদ উল্লাহ। মামলার পর সোমবার ভোরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- মামলার ৬নং আসামি কালিনগরের দেলোয়ার হোসেন দুলু, মোহাম্মদপুরের শাহজাহান মিয়া ও ছৈলাখেল অষ্টম খন্ডের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ।
শনিবার সকালে জাফলং এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তারা ফেরার পথে জাফলং পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিএনপির সংগঠনের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার আটকে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ করা হয়। ঘটনার পর গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে বহিষ্কার ও জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আজির উদ্দিনকে শোকজ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সমকালকে জানান, গতকাল রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে। দ্বিতীয় আসামি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল আহমদ, ওমর ফারুক, সুমন শিকদার, দেলোয়ার হোসেন দুলু, আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল।