সিরাজগঞ্জে পর্দা কাঁপাচ্ছে শাকিবের ‘বরবাদ’
Published: 3rd, April 2025 GMT
রাজধানীর মতো সিরাজগঞ্জের সিনেমাপ্রেমীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, পৌর শহরের সব কটি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে সিনেমাটি প্রদর্শিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ শহরের ভাসানী মিলনায়তন ভাড়া নিয়ে ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছে। ঈদের দিন থেকে প্রদর্শিত হচ্ছে মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত এই সিনেমা। টিকিট মূল্য ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা। প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হলেও ভিড় করছেন আগ্রহী দর্শকরা। বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মিলনায়তনের সামনে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করেছেন।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ বলেন, “প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৩টা, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা ও রাত সাড়ে ৯টায় শো চলছে। টিকিট মূল্য ১৫০ টাকা হওয়ায় বেশ সাড়াও পাচ্ছি। মিলনায়তনে আসন সংখ্যা ৪০০টি। শাকিব খানের নতুন সিনেমা প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়েছে পোস্টার, পাশাপাশি মাইকিং করা হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:
শাকিবের হিসু করার দৃশ্যের জবাব নাই: মালেক আফসারী
প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেওয়া হল শাকিবের সিনেমা
গত বছরের বিরূপ অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “গত বছরও একইভাবে সিনেমা চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিহিংসার কারণে মাত্র ৩ দিন চালানোর পর সিনেমা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। আশা করছি, এবার ১৫-২০ দিন প্রজেক্টরের মাধ্যমে সিনেমা চালাতে পারব। সুস্থ বিনোদন উপভোগের জন্য অস্থায়ী এই সিনেমা হলে দর্শকদের আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ‘বরবাদ’ দেখতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। একজন দর্শক বলেন, “এক সময়ে সপরিবার নিয়ে সিনেমা হলে আসতাম। কিন্তু সেই আনন্দ আর দেখা যায় না। বর্তমানে সিনেমার করুণ দশা। ভালো সিনেমার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে সিনেমা হলগুলো। দীর্ঘদিন ধরে শহরের ৫টি হল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সিনেমা দেখা হয় না। তবে ঈদে শাকিব খানের মুক্তি পাওয়া ‘বরবাদ’ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। সিনেমাটি হলে দেখতে পারলে আরো বেশি ভালো লাগত।”
‘বরবাদ’ সিনেমা দেখতে আসা দর্শকরা শহরের সিনেমা হলগুলো পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।
আয়োজক ও চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি সিরাজগঞ্জের সন্তান। বাংলা সিনেমার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভাসানী মিলনায়তনটি ভাড়া নিয়ে ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রদর্শনের আয়োজন করেছি। এতে সিরাজগঞ্জের সিনেমাপ্রেমী মানুষ ভিড় করছেন। এজন্য মন্ত্রণালয়, সিনেমা হল মালিক, পরিচালক, প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।”
ভাসানী মিলনায়তনে ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ঈদ উপলক্ষে পৌরবাসীকে বাংলা সিনেমার সুস্থ বিনোদন উপহার দেওয়ার জন্য দৈনিক ভাড়ার মাধ্যমে ভাসানী মিলনায়তনে সিনেমা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মিলনায়তনের সার্বিক নিরাপত্তা দেবেন আয়োজকরা। পৌরবাসীর বিনোদন প্রাপ্তির আশায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”
একসময় বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ছিল সিনেমা হল। শুধু উৎসব নয়, সারা বছর সপরিবারে সিনেমা হলে যেতেন দর্শক। সেই সময় দর্শকের চাপে সিরাজগঞ্জ শহরের ৫টি হলে দেখা দিত টিকিট সংকট। হলের সামনে ‘হাউজফুল’ লেখা সাইনবোর্ড ঝুলত। এসব এখন শুধুই অতীত, রূপকথার গল্পের মতো। কারণ সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের নীলা, লক্ষ্মী, গোধুলি, মমতাজ ও মৌসুমী নামের ৫টি সিনেমা হলই এখন বন্ধ। কেবল তাই নয়, এ জেলায় ৩৪টি সিনেমা হল ছিল। যার অধিকাংশই এখন ছাত্রাবাস, গোডাউন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গুদামঘর হিসেবে ভাড়ায় ব্যবহার করছেন হল মালিকেরা।
ঢাকা/অদিত্য রাসেল/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র স র জগঞ জ র প রদর শ পর চ ল পর ব র শহর র বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।
আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।
রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।
কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।
আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।