ফিলিস্তিনিদের জন্য রোববার সারা দেশে বিক্ষোভ করবে জাতীয় পার্টি
Published: 11th, April 2025 GMT
নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আগামী রোববার সারা দেশে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। এই কর্মসূচি সফল করতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের নেতা-কর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে আজ শুক্রবার বিকেলে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন ও ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এক সমাবেশে জি এম কাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সমাবেশে জি এম কাদের ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে লুটপাটের ঘটনার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভাঙচুর ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়ে কিছু মানুষ তাঁদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাচ্ছেন। তাঁরা সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে চাচ্ছেন।
জি এম কাদের বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অনেক মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছেন। সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠ লোকজন বেকার ও ক্ষুধার্ত মানুষদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন। তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখানোর কাজে বেকারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। ভাঙচুর ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়ে কিছু মানুষ তাঁদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করে জি এম কাদের বলেন, ‘যাঁরা দূরে আগুন লাগিয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবছেন, দুদিন পরে সেই আগুন আপনার ঘরেও লাগতে পারে। সাধারণ মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তা অবশ্যই শেষ হবে। আমরা সব অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিবাদ করব।’
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের ভাইবোনদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আমরা তাদের পাশে আছি, সব সময় তাদের পাশে থাকব।’
সরকারের ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতাদের পাশাপাশি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ান, অসহায় ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার ব্যবস্থা করুন।’
ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে সব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকার ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফুটফুটে শিশুদের নিশানা করে হত্যা করা হচ্ছে। বিশ্ব বিবেক কী করে তা মেনে নিতে পারে? আমরা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাই। আমরা চাই, ফিলিস্তিনিরা যেন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারে। ফিলিস্তিনিদের সব ন্যায্য দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।’
সমাবেশ শেষে কাকরাইল থেকে জি এম কাদেরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এম ক দ র সরক র র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের দুই সদস্য বাংলাদেশে এসেছেন। রোববার চার দিনের সফরে গ্রুপের ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা ও আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ ঢাকা পৌঁছান।
প্রায় এক যুগ ধরে গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানিয়ে আসছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স অর ইনভলেন্টারি ডিসাপিয়ারেন্স– ডব্লিউজিইআইডি। ২০১৩ সালের ১২ মার্চ সফরের জন্য প্রথম চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এর পর একাধিকবার অনুরোধ করলেও রাখা হয়নি। ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল শেষবার সফরের অনুমতি চেয়েছিল ডব্লিউজিইআইডি। কিন্তু দেয়নি তৎকালীন সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনার সরকারের। এর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানালে সাড়া দেয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এলো গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। ১৮ জুন প্রতিনিধি দলের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, সফরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র সচিব, গুম কমিশনের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া নীতিবিষয়ক আলোচনায় অংশ নেবেন দুই সদস্য।
ঢাকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, প্রতিনিধি দল এবার গুমের ঘটনা তদন্ত করবে না। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তার ভিত্তিতে সুপারিশ করবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক ‘গুম প্রতিরোধ দিবস’-এর এক দিন আগে ৭৬তম দেশ হিসেবে চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গুমবিরোধী সনদ গৃহীত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে সনদে যুক্ত হওয়া নিয়ে বরাবর অনাগ্রহ দেখিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এ সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। অর্থাৎ তারা অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। আর ভারত শুধু সই করেছে।
ডব্লিউজিইআইডির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও ৭০টি গুমের ঘটনা অনিষ্পত্তি রয়েছে। জাতিসংঘ মোট ৮৮ ব্যক্তির গুমের বিষয়ে প্রকৃত অবস্থা জানতে চেয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন আটক ও ১০ ব্যক্তি মুক্ত অবস্থায় আছেন।