নাটকপাড়া খ্যাত বেইলি রোডের মহিলা সমিতিতে আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার দুইদিনব্যাপী শেষের কবিতা নাটক প্রদর্শনের কথা ছিল। কিন্তু সেটি আর হচ্ছে না ‘তৌহিদী জনতার’ উড়ো চিঠির কারণে। হুমকিমূলক বক্তব্য ‘এ নাটকের প্রদর্শনীর সময় মহিলা সমিতিতে ভাঙচুর হলে তার দায় ‘তৌহিদী জনতা' নেবে না’ এমন চিঠি পেয়ে মহিলা সমিতি নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোরকে দেওয়া মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

চৈত্রসংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকার নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে টানা দুই দিন এ নাটকের প্রদর্শনী উপলক্ষে মহড়ার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছিল। এমন সময় ‘তৌহিদী জনতার’ হুমকির চিঠি পেয়ে নাটকের প্রদর্শনী বাতিল করা হলো। 

‘শেষের কবিতা’ নাটকের নির্দেশক নূনা আফরোজ রোববার বলেন, ‘আমরা সব রকম প্রস্তুতি শেষ করে প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। সকালে আমাদের জানানো হলো, মিলনায়তনের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। ‘তৌহিদী জনতা’ নাকি হুমকি দিয়েছে।’

হুমকির ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নাটকটির প্রদর্শনীর সময় মহিলা সমিতিতে ভাঙচুর হলে তার দায় ‘তৌহিদী জনতা’ নেবে না। এর প্রেক্ষিতে ‘নিরাপত্তার’ কথা বিবেচনায় নিয়ে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ প্রাঙ্গণেমোরকে দেওয়া মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে মহিলা সমিতির এক্সিকিউটিভ অফিসার সৈয়দা শারমিন আরা জানান, মহিলা সমিতির নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রাঙ্গণেমোরকে মিলনায়তন বরাদ্দের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। আমাদের কাছে একটা চিঠি এসেছে ‘তৌহিদী জনতা’ নামে। তবে এই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি। মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই বরাদ্দ বাতিল করেছে।

নাটক মঞ্চস্থ করার সকল প্রস্তুতি শেষে এমন সংবাদ পেয়ে রোববার সকালে নূনা আফরোজ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সংস্কৃতি অঙ্গন ও দেশের সচেতন মানুষেরা বলুন, কী করব? এমনই চলতে থাকবে?

এদিকে আকস্মিক মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিলের প্রতিবাদ জানাতে আজ বিকেল ৫টায় মহিলা সমিতির সামনে শেষের কবিতা নাটকের পোশাক পরে নাট্যকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে প্রাঙ্গণেমোরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাস থেকে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন অনন্ত হিরা আর নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ। প্রাঙ্গণেমোর এর ষষ্ঠ প্রযোজনা এটি। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে এই মহিলা সমিতি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব স্থগিত হয়েছিল হুমকির মুখে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন টক স স ক ত চর চ প র ঙ গণ ম র বর দ দ ব ত ল প রস ত ত ব ত ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়

শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।

সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।

জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মক্ষেত্রে অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন
  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা 
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না, নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনগত সহায়তা দিবসে আলোচনা সভা-শোভাযাত্রা
  • আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন