হুমকিতে নাটকের প্রদর্শনী বাতিল, বিকেলে নাট্যকর্মীদের কর্মসূচি
Published: 13th, April 2025 GMT
চৈত্রসংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানীর মহিলা সমিতি মিলনায়তনে টানা দুই দিন নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত ‘শেষের কবিতা’ নাটকের প্রদর্শনী হওয়ার কথা ছিল। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নাট্যকর্মীরা অপেক্ষায় ছিলেন মঞ্চে ওঠার। কিন্তু ‘তৌহিদি জনতার’ হুমকির চিঠি পেয়ে নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজিত ‘শেষের কবিতা’ নাটকের প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে। প্রদর্শনী বাতিলের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহিলা সমিতি মিলনায়তন কর্তৃপক্ষ। নাটক বন্ধের প্রতিবাদে আজ রোববার মহিলা সমিতির সামনে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নাট্যকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
হুমকির ওই চিঠিতে বলা হয়, এ নাটকের প্রদর্শনীর সময় মহিলা সমিতিতে ভাঙচুর হলে এর দায় ‘তৌহিদি জনতা’ নেবে না। আর ওই চিঠি পেয়ে ‘নিরাপত্তার’ কথা বিবেচনায় প্রাঙ্গণেমোরকে দেওয়া মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে মহিলা সমিতির নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শারমিন আরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে অফিসে এসেই আমরা একটা চিঠি পেয়েছি “তৌহিদি জনতা” নামে। এরপরই আমরা নাটকের প্রদর্শনী বাতিল করি। মহিলা সমিতিতে নাটক ছাড়াও স্কুল, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাই আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। নিরাপত্তার কথা ভেবে মিলনায়তন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাস থেকে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন অনন্ত হীরা এবং নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ। এটি দলের ষষ্ঠ প্রযোজনা। অনন্ত হিরা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মহিলা সমিতি আজ সকাল ১০টায় ফোন করে জানাল, তৌহিদী জনতা তাদের চিঠি দিয়েছে, মহিলা সমিতিতে যেন কোনো প্রদর্শনী করতে দেওয়া না হয়। আজ চৈত্রসংক্রান্তি এবং আগামীকাল পয়লা বৈশাখ আমাদের ‘‘শেষের কবিতা’’ নাটকের প্রদর্শনী হওয়ার কথা। আমরা মহিলা সমিতিকে দুই দিনের হল ভাড়া দিয়েছি। প্রচার, প্রকাশনায় সকল খরচ করা হয়ে গেছে। আমাদের সকল প্রস্তুতি, সকল আয়োজন সম্পন্ন। আয়োজনের প্রতিটি সেক্টরে খরচ করা হয়ে গেছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে এত দিন ধরে।’
অনন্ত হিরা আরও লিখেছেন, ‘আমরা মহিলা সমিতিকে বলেছি, আপনারা প্রশাসনের সাহায্য নেন প্রশাসন অপারগতা প্রকাশ করলে না হয় আমরা প্রদর্শনী নাইবা করলাম। মহিলা সমিতি জানাল, কত কিছুই তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, প্রশাসন তো বন্ধ করতে পারছে না। প্রশাসন কি সহযোগিতা করবেন আমাদের।’
মহিলা সমিতির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ নিয়ে অনন্ত হিরা লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের নাটক বন্ধের প্রতিবাদে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বেইলি রোড এ প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করছি। সে সকল নাট্যবন্ধু, দর্শকবন্ধু, সাংবাদিকবন্ধু আমাদের পাশে থাকতে চান, তাঁদের সবাইকে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বেইলি রোডে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মহিলা সমিতি মিলনায়তনে একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে স্থগিত হয়েছিল ‘ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব’।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অনন ত হ র ব ত ল কর আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম: আমির খান
বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খানকে নিয়ে রাজকুমার হিরানি নির্মাণ করেন আলোচিত সিনেমা ‘পিকে’। ২০১৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এটি। মুক্তির পর বক্স অফিসে সুপারডুপার হিট হয়।
এ সিনেমা মুক্তির আগে প্রকাশিত হয় আমিরের পোস্টার। সিনেমাটিতেও নগ্ন আমিরের দেখা মেলে। তারপর দারুণ আলোচনায় উঠে আসেন এই অভিনেতা। সমালোচনাও কম সইতে হয়নি তাকে। এখানেই শেষ নয়, হিন্দু ধর্মের প্রতি কটাক্ষ করার অভিযোগে তীব্র সমালোচনা মুখে পড়েন আমির। ভাঙচুর করা হয় প্রেক্ষাগৃহ।
প্রায় এক যুগ পর এসব বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন আমির খান। ইন্ডিয়া টিভি চ্যানেলের ‘আপ কি আদালত’ শোয়ে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন আমির। তার ভাষায়— “ধর্ম নয়, ধর্মের নামে যারা প্রতারণা করে ‘পিকে’ সেসব লোকদের সমালোচনা করেছে।”
আরো পড়ুন:
জোড়া লাগল অর্জুন-মালাইকার ভাঙা প্রেম!
অন্তঃসত্ত্বা কিয়ারাকে কী উপহার দিলেন রাম চরণ?
ব্যাখ্যা করে আমির খান বলেন, “তারা ভুল। আমরা কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নই। আমরা সমস্ত ধর্ম ও সমস্ত ধর্মের মানুষদের শ্রদ্ধা করি। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে টাকা কামায়, তাদের বিষয়ে সচেতন করাই ‘পিকে’ সিনেমার উদ্দেশ্য ছিল। প্রতিটি ধর্মেই এমন লোক পাওয়া যায়।”
‘পিকে’ সিনেমায় পাকিস্তানি এক মুসলিম ছেলেরি প্রেমে পড়ে ভারতীয় হিন্দু ধর্মের অনুসারী এক নারী (আনুশকা শর্মা)। এটাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে অনেকে অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে আমির খান বলেন, “সবসময়ই এটিকে লাভ জিহাদ বলা উচিত নয়। এটি মানবতা। মানবতা ধর্মের উর্ধ্বে।”
গত ৭-৮ বছরে দেশদ্রোহী, হিন্দুবিরোধী হওয়ার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন আমির খান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম। আমি গর্বিত আমি একজন ভারতীয়। দুটোই একসঙ্গে সত্যি হতে পারে।”
ঢাকা/শান্ত