অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি কোনো নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি থাকলে তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারে নিবন্ধন করতে হবে। অন্যথায় শাস্তি ভোগ করতে হবে। দেশটিতে অবস্থান করা নথিবিহীন অভিবাসী, মার্কিন ভিসাধারী, বৈধ স্থায়ী বসবাসকারী এবং নথিপত্র ছাড়া যাঁরা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন, তাঁদের সবাই এই নিয়মের আওতায় পড়বেন।

১১ এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, কিন্তু দেশটিতে অবস্থান করছেন, তাঁদের সব সময় নিবন্ধনের প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হবে। ১১ তারিখের পর যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন, তাঁদের ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। শিশুদের বয়স ১৪ বছর হলে তাদেরও আবার নিবন্ধন করার প্রয়োজন পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘এলিয়েন রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট’-এর ভিত্তিতে এই নিয়ম করা হয়েছে। ওই আইন প্রথম কার্যকর হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার পর ‘দখলদারি থেকে মার্কিন জনগণের সুরক্ষা’ শিরোনামে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর আবার পুরোনো নিয়মটি কার্যকর করে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তর (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি)।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, নিবন্ধনের এই নতুন নিয়ম না মানলে তা অপরাধযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এর শাস্তি হিসেবে কারাদণ্ড, জরিমানা বা দুটি শাস্তিই দেওয়া হতে পারে। আর যাঁরা বৈধভাবে দেশটিতে স্থায়ী বসবাস করছেন, তাঁরা ঠিকানা পরিবর্তন করলে ১০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে বলে গত শনিবার উল্লেখ করেছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর।

যে শাস্তি হতে পারে

বিদেশি নাগরিকেরা নতুন অভিবাসন নিয়ম না মানলে কী শাস্তি হতে পারে, তা তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেউ যদি স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের চূড়ান্ত নির্দেশ পাওয়ার পর প্রতিদিনের জন্য ৯৯৮ ডলার করে জরিমানা দিতে হবে।

আর যদি কোনো বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন—এমন ঘোষণা দেওয়ার পরও তা না করেন, তাহলে তাঁকে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার ডলার জরিমানা দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করলে কারাদণ্ডের সাজাও দেওয়া হতে পারে। এমনকি ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অভিবাসনের ক্ষেত্রে তাঁদের আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে পারে মার্কিন সরকার।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার আগেই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করা। ক্ষমতায় বসার পরপর এ-সংক্রান্ত একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের ধরপাকড় শুরু হয়। এমনকি এই অভিবাসীদের হাতকড়া পরিয়ে মানবেতরভাবে নিজ দেশে পাঠানোর ঘটনাও ঘটে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে বিএনপি-ছাত্রদল সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩

নরসিংদীর পলাশে শোডাউনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইসমাইল হোসেন (২৬) নামে এক ছাত্রদল কর্মী গুলিবিদ্ধসহ তিন জন আহত হয়েছেন।

রবিবার (১৫ জুন) রাতে উপজেলার বিএডিসি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ ইসমাইল হোসেন উপজেলা ছাত্রদলের কর্মী ও ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর মহল্লার আব্দুর রহিমের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে উপজেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিট পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শোডাউনের উদ্দেশে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি বিএডিসি মোড় এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের নেতৃত্বে তার সমর্থকদের একটি শোডাউনের মুখোমুখি হয়। এসময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ছাত্রদল কর্মী ইসমাইল হোসেন ও বিএনপি নেতা ফজলুল কবির জুয়েলসহ আরো একজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ছাত্রদল কর্মী ইসমাইলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বিএনপি নেতা ফজলুল কবির জুয়েলকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

বাগেরহাটে বিএনপির সম্মেলনে ২ পক্ষের সংঘর্ষ

পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ‘‘জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল নির্বাচনি এলাকায় শোডাউন করতে যান। এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে তিন জন আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’’

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ