দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: আনু মুহাম্মদ
Published: 18th, April 2025 GMT
বাংলাদেশে বসবাসকারী দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলেও সবকিছু সংস্কার করতে পারে না। তবে দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য অনেক কাজ এই সরকার করতে পারে।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন আয়োজিত সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তাদের আবাসস্থল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বৈষম্য দূর করতে কাজ করা সম্ভব। এসব ব্যাপারে যদি এই সরকার কাজ করে তাহলে বোঝা যাবে বৈষম্য দূর করতে সরকারের সদিচ্ছা আছে। আর একটা রাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হওয়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়া সরকারের দায়িত্ব।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বিভিন্ন সরকার সঠিকভাবে তাদের জন্য কাজ করেনি। তবে কিছু এনজিও প্রজেক্টভিত্তিক দলিত সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করেছে। ফলে এই সম্প্রদায়ের মধ্যে নানা সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সকল নিপীড়িত মানুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ না করতে পারলে খুব বেশি লাভ হবে না। সবার ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের অধিকার আদায়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের জীবনযাপনের জন্য যারা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে তাদের অচ্ছুত মনে করা ভালো কিছু নয়। এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক একটা পরিবর্তন জরুরি। এটির ক্ষেত্রে মিডিয়া ভালো ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ দলীয় সম্প্রদায়ের আসল অবস্থা সবার সামনে তুলে ধরতে মিডিয়ায় পারে। অনেক সময় মানুষ ভুল বোঝার কারণেও তাদের অসম্মান করে।
সেমিনার ৮ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে—
বৈষম্যকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাধীন কমিশন ও হরিজন-দলিতদের স্বার্থ রক্ষায় বৈষম্য বিলোপ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে; অনগ্রসর পিছিয়ে পড়া হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা দিতে হবে; শিক্ষার্থীদের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোটা এবং উচ্চ শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের সরকারি সকল পেশায় সম-অধিকার নিশ্চিত করতে বিশেষ কোটা ব্যবস্থা চালু করতে হবে; সারাদেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা, হাট-বাজার-মার্কেট-ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও চাকুরি স্থায়ীকরণ করতে হবে; সবেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব বোনাস, অবসর ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে।
এছাড়া সরকারের খাস জমিতে হরিজন জনগোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বন্দোবস্ত করতে হবে; ১শ/২শ বছরের পুরাতন জায়গা বসবাসরত হরিজন-দলিতদের নামে দলিল করে দিতে হবে। পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা যাবে না; দেশে বসবাসরত হরিজন জনগোষ্ঠীকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে; মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হরিজন-দলিতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান এবং শহীদ পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে; জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে; একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগে জাত হরিজনদের জন্য ঘোষিত ৮০ ভাগ কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে।
হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের সভাপতি সুরেশ বাসফোরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ প্রমুখ। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দলিত সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনগ ষ ঠ ক সরক র র ন দল ত র জন য ক জ কর অবস থ র করত বসব স ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।