বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের যে কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আদিবাসীদের ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার সম্পূর্ণ হবে না। এই সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সঙ্গে কোনো সংলাপের উদ্যোগ এখনও নিচ্ছে না। সংলাপ দ্রুত শুরু করতে হবে। আমরা আশা করবো, সরকার পাহাড়ের আদিবাসীদের সঙ্গে নতুন করে সংলাপ শুরু করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মসূচিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার দাবিতে গণসংযোগ, পথসভা ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শনিবার ঢাকায় দিনব্যাপী গণসংযোগ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের উদ্যোগে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সকাল ১০টায় কর্মসূচি শুরু হয়, যা সন্ধ্যায় উত্তরাতে গিয়ে শেষ হয়। গণসংযোগে ৬টি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পথসভাটি হয় পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে, এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাব, শাহবাগ, ফার্মগেইট , মিরপুর-১০ ও উত্তরার রাজলক্ষ্মীতে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভাগুলো সঞ্চালনা করেন চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা।   

দিনব্যাপী কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের দুই যুগ্ম সমন্বয়কারী মানবাধিকারকর্মী জাকির হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী। পথসভাগুলোতে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুল রশীদ ফিরোজ, দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান প্রমুখ। 

বাহাদুর শাহ পার্কে স্বাগত বক্তব্যে খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় হবে না। সেজন্য এ চুক্তি বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, পাহাড়ের সমস্যা সমাধানের মুল কাজটা হচ্ছে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন। আমার ধারণা এ বিষয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলে তারা ঐক্যমত্য পোষণ করবেন। এই ঐক্যমত্যের মাধ্যমেই চুক্তি বাস্তবায়নের উদৌগ নিতে হবে। 

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুল রশীদ ফিরোজ বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের আশু করণীয় কী সেটা জানানোর জন্য এবং দেশবাসীকে সচেতন করার জন্য আমরা আজকে প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছি। আপনারা জানেন, পাহাড়ের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি, সমাজ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সমতলের বাঙালিদের একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। আমরা আশা করেছিলাম, স্বাধীনতার পর এ সকল ভিন্ন জাতিসত্তার মানুষের সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকবে। কিন্তু তা না করে তাদের সংখ্যালঘু করার জন্য পাহাড়ের বাঙালি নিয়ে গিয়ে সেটলার হিসেবে স্থাপন করা হয় এবং সেনা ছাউনির ছত্রছায়ায় আদিবাসীদের নিপীড়নের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেই নিপীড়নের অবসান ঘটানোর জন্য ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি। আমরা আশা করবো, বর্তমান সরকার অন্তত এ চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে এবং একটি রূপরেখা ঘোষণা করবে। অন্তত সেনাশাসনের অবসানে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, বাংলাদেশ কেবলমাত্র বাঙালির না। এ দেশে বাঙালি ছাড়াও চাকমা, মারমা, সাওঁতালসহ বহু জাতির মানুষ বসবাস করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল যে চেতনা সেটা হলো- একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সেটা না হওয়ায় আদিবাসীদের সঙ্গে এ রাষ্ট্রের দূরত্ব ক্রমাগত বাড়ছে। এ দূরত্ব ঘোচানোর জন্যই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করা দরকার। আমরা প্রত্যাশা করবো, অন্তর্বর্তী সরকার পাহাড়িদের ভূমি সমস্যার সমাধান, সামরিক কর্তৃত্বের অবসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন জেলা পরিষদগুলোকে গণতান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফন্ট, বিসিএল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতারা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশিষ্ট নাগরিক ও মানবাধিকার কর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টাইন গায়িকাকে ছেড়ে কি ইতালিয়ান মডেলের প্রেমে মজেছেন ইয়ামাল

কয়েক মাস ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।

তবে ইয়ামাল নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু একজনের সঙ্গে—আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র‍্যাপার নিকি নিকোল। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাত্র তিন মাসেই নিকোলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে ইয়ামালের। চোট, ছন্দহীনতা, বিতর্ক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন...সবখানেই হোঁচট খাচ্ছেন বার্সেলোনার এই উদীয়মান উইঙ্গার।

কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও খবর এসেছে যে ইয়ামাল বিশ্বাসভঙ্গ করাতেই তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন নিকোল। ইতালির মিলানে এক পার্টিতে দেশটির ২০ বছর বয়সী মডেল আনা গেগনোসের সঙ্গে নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে ইয়ামালকে। বিষয়টি জানতে পারাতেই নিকোল নাকি ইয়ামালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

তবে এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভি হোয়োসের অনুষ্ঠানে এসে ১৮ বছর বয়সী তারকা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা সব খবর ভিত্তিহীন।

আরও পড়ুনইয়ামাল কি সত্যিই ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে মজেছেন১৮ জুন ২০২৫

ইয়ামাল বলেছেন, ‘আমরা (তিনি ও নিকোল) এখন আর একসঙ্গে নেই। কিন্তু সেটা বিশ্বাসভঙ্গের কারণে নয়। আমরা শুধু আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এইটুকুই। যা বলা হচ্ছে, কিছুই সত্যি নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি, অন্য কারও সঙ্গেও ছিলাম না।’

ইয়ামালের দাবি, যেসব সংবাদমাধ্যম গল্প বানিয়ে প্রতারণার খবর ছড়াচ্ছে, সেগুলো স্রেফ গুজব।

নিকি নিকোলও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাকে ঠকাত, আমি প্রথমেই সবাইকে জানাতাম। আগেও আমি তাই করেছি।’

২৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন গায়িকা উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকান গায়ক পেসো প্লুমার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে এনেছেন। গত বছর প্লুমা প্রতারণা করায় নিকোলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।

আরও পড়ুনইয়ামালের গাড়ি বা বান্ধবী নয়, ওর খেলা দেখুন: স্পেনের কোচ২৬ আগস্ট ২০২৫

তবে ইয়ামালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙেছে। এখানে প্রতারণার কোনো ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন নিকোল, ‘আমরা আগেই আলাদা হয়েছি, শুধু ঘোষণা করিনি।’

ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ইয়ামাল এখন ফুটবলে মনোযোগী হতে চাইছেন।

ইয়ামালের গোল উদ্‌যাপন। কাল রাতে এলচের বিপক্ষে

সম্পর্কিত নিবন্ধ