কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি
Published: 21st, April 2025 GMT
স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের প্রতি চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদে ও ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ছয় দফা দাবি না মানলে দেশের সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমাধারী কৃষিবিদদের আট দফা দাবি অযৌক্তিক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এসব দাবি গ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, দেশের সব ধরনের বৈষম্য দূর করা। অথচ স্নাতক কৃষিবিদদের সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দশম গ্রেডে চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
আরো পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের কাঁথা-বালিশ কর্মসূচি ঘোষণা
নোয়াখালীতে দায়িত্বে অবহেলায় ১২ শিক্ষককে অব্যাহতি
তারা বলেন, দেশের কৃষি উন্নয়নে বিএসসি কৃষিবিদরা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং উচ্চফলনশীল জাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। এ জায়গায় যদি ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পিছিয়ে পড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দশম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/ সমমান) চাকরিতে বিএসসি এবং ডিপ্লোমা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে; বিসিএস পরীক্ষা ব্যতীত কোনোভাবেই কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে (নবম গ্রেড) যোগদান করতে পারবে না, দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে পদোন্নতি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে এবং দশম গ্রেডের পদগুরো গেজেটের আওতার বাইরে প্রচলিত কাঠামোতেই রাখতে হবে; বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ (বিএডিসি) অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমাধারীদের নবম গ্রেডে পদোন্নতি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম ছাড়া কোনোভাবেই পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রাখা যাবে না; কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ব্যতীত নামের পর্বে ‘কৃষিবিদ’ পদবী ব্যবহার করা যাবে না এবং এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) অধীনেই রাখতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, কৃষি অনুষদের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মুন্না, রেজভী মাহমুদ, আবু বক্কর সিদ্দিক, সানাউল্লাহ শেখ, ওবায়দুল্লাহ প্রমুখ।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দশম গ র ড
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫