কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন কিশোর নিহত হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল সড়কের বুড়িচং উপজেলার মাধবপুরে চট্টগ্রামগামী লাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারা রেলের ছাদ থেকে নিচে পড়ে মারা যেতে পারে বলে রেলওয়ে পুলিশের ধারণা। মারা যাওয়া তিন কিশোরই সুবিধাবঞ্চিত টোকাই। কুমিল্লাসহ বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে বোতলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কুড়াতো তারা। 

সন্ধ্যায় সাইফুল ইসলাম নামে একজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সে দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিন কিশোরের মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। 

রেলওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তিন কিশোর ট্রেনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে নাকি রেল সড়কে হাঁটার সময় কাটা পড়ে নিহত হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সাইফুলের বাবা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তাঁর ছেলেসহ অন্যরা বোতল কুড়ানোর কথা বলে কসবা স্টেশনে গিয়েছিল। নিহত সাইফুলের মা-বাবা সেখানে রেলস্টেশন পরিচ্ছন্নতা কাজের পাশাপাশি বোতল কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিহত অপর দু’জনের মধ্যে একজনের নাম তুহিন বলে জানা গেলেও অন্যজনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

গতকাল সকাল ৯টায় বুড়িচং উপজেলার মাধবপুর রেললাইনে গিয়ে দেখা গেছে, রেলের স্লিপার ও লাইনের ওপর ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। বেশ কয়েক টুকরা টিশার্ট ও দুই জোড়া জুতা পড়ে আছে সেখানে। মাধবপুর এলাকায় ১৬২ নম্বর পিলারের কাছ থেকে সাইফুলসহ তিন কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা ইজিবাইক চালক শাহেদ মিয়া বলেন, আমি সকাল ৬টার দিকে রেললাইনের পাশে হাঁটতে আসি। এ সময়ে এসে দেখি একজনের মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে আর দু’জনের পা বিচ্ছিন্ন। যাদের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন তখনও জীবিত ছিল। সে আমার কাছে পানি চায়। কিন্তু গ্রাম দূরে হওয়ায় সে সময় পানি আনার কোনো সুযোগ ছিল না। এর মধ্যেই সে মারা যায়। 

কুমিল্লা রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ছেলের মরদেহের সামনে মোখলেছুর রহমান বলেন, তিন ছেলের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। মঙ্গলবার দুপুরে বোতল কুড়াতে কসবা স্টেশনে যাওয়ার কথা বলে সে বাসা থেকে বের হয়। রাতেই ফেরার কথা ছিল। 

দেবিদ্বারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোখলেছুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরেই শহরে থাকেন। বাড়িতে ভিটেমাটি না থাকায় স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকেন। ছেলের লাশ দাফন করার মতো জায়গা নেই। তাই রেলওয়ে পুলিশকে বলেন, লাশটি যেন সরকারিভাবে দাফন করা হয়। সাইফুলের মা আসমা বেগম জানান, ছেলেটা রাজমিস্ত্রির কাজ করত। এক সময় খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মিশে খারাপ হয়ে যায়। 

কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সোহেল মোল্লা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তাদের ময়নাতদন্ত করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ধবপ র র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি

কে বেশি ক্লান্ত—ক্রিকেট না দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রিকেটের ক্লান্তি দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিতে না পারার আর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লান্তি ক্রিকেটের কাছ থেকে বৈশ্বিক কোনো শিরোপা নিতে না পারার! অবশেষে ক্লান্তির সেই কবিতার ক্লাস শেষ হলো। ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিল অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট খেলাটিকে দায়মুক্ত করল তার কাছ থেকে একটি বিশ্বকাপ নিয়ে! ক্রিকেটকে দায়মুক্ত করা বা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতার একঘেয়ে ক্লান্তি ঘোচানোর নায়ক কে? লর্ডসে ২০২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচটি বিশ্লেষণ করলে প্রশ্নটিকে অতীব সহজ মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তরটাও সবার এখন জানা। একবাক্যে সবাই বলবেন, নায়কের নাম এইডেন মার্করাম।

টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—ক্রিকেটের যে সংস্করণের কথাই বলুন, দক্ষিণ আফ্রিকা খেলাটির অন্যতম পরাশক্তি। কিন্তু ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে হওয়া আইসিসি নকআউট ট্রফি (মিনি বিশ্বকাপ) ছাড়া আজকের আগপর্যন্ত কোনো বৈশ্বিক ট্রফি প্রোটিয়াদের ছিল না।

অবশেষে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মাথায় বিশ্বসেরার মুকুট উঠল, ক্রিকেট-তীর্থ নামে পরিচিত লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক মেইস বা গদা তুলে ধরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটির অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৭ বছর পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকা বলতে গেলে একা হাতে শিরোপা জিতিয়েছেন মার্করাম। আরও স্পষ্ট করে বললে আসলে প্রোটিয়াদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দিয়েছে মার্করামের ইতিবাচকতা, আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ব নিয়ে খেলার দৃঢ়তা।  

ঠিক ১১ বছর আগে মার্করাম নিজেকে ঠিক এ রকম তিনটি শব্দেই বর্ণনা করেছিলেন। সালটা ২০১৪, সেবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ছিলেন মার্করাম। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আইসিসির এক অনুষ্ঠানে মার্করামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—নিজেকে তিনটি মাত্র শব্দে কীভাবে বোঝাবেন। উত্তর যেন মুখস্থ, এমনভাবেই ১৯ বছর বয়সী তরুণ মার্করামের উত্তর ছিল—ইতিবাচক, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান।

সেঞ্চুরির পর মার্করাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাতারাতি তারকা হলে দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন: রিচি
  • গুম করা হতো তিনটি ধাপে 
  • এক মৃত্যুপথযাত্রী পিতার থেকে ২০টি শিক্ষা
  • রেনু বেগমের ‘বুকভাসা চোখের পানি’ কেন
  • ইরান অনড়, ইসরায়েল কঠোর
  • ইরানে নিরাপদে আছেন ৬৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
  • নীরব ভালোবাসার আরেক নাম
  • নারীবাদের ছদ্মবেশে ভারত যখন যুদ্ধ চালায়
  • কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
  • একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি