শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অতীতের ছবি প্রদর্শন করে ৪ দাবি
Published: 24th, April 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অতীতের বিভিন্ন সময়ের ছবি প্রদর্শনী করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে ‘জয় বাংলা’ গান বাজিয়ে শিক্ষকদের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হয়। একইসঙ্গে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনকে সিন্ডিকেটে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনের মতো একজন সম্মানিত শিক্ষককে অপমান করেছেন উপাচার্য ড.
শিক্ষার্থীরা বলেন, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম ভোলার মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। অবসরে যাওযার পরও তাঁকে নিয়মবহির্ভূতভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে পুনরায় দায়িত্বে রাখা হয়েছে, যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতার পরিপন্থি। তাঁকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময় যারা গণহত্যার সমর্থন করেছিলেন এবং প্রশাসনের চাটুকারিতায় লিপ্ত ছিলেন, এমন বহু শিক্ষক-কর্মচারী এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন। উপাচার্য পুনরায় তাদের প্রশাসনে পুনর্বাসন করছেন। এসব শিক্ষক-কর্মচারীকে প্রশাসনিক ও লাভজনক সব কমিটি থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, ‘আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে কোনো ফ্যাসিবাদের দোসর দেখতে চাই না। আমাদের দাবি মানা না হলে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
গত মঙ্গলবার থেকে ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো– ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা, অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার করে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের পদে পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অপসারণ, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপাচার্যের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।