কুমিল্লায় অস্ত্র হাতে কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া, গ্রেপ্তার ৫
Published: 26th, April 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের তিন এলাকায় দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত থেকে শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো— নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার সোহাগ মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম নাফিজ (১৮), কালিয়াজুরী পাক্কার মাথা এলাকার মো.
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, “‘নগরের তিনটি এলাকায় দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’’
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রানীর দিঘির পাড়, তালপুকুরপাড় ও আদালতপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের একাধিক গ্রুপের সদস্যরা মহড়া দেয়। এসময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। বিকালে নগরের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
অস্ত্রের মহড়ার কারণে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রানীর দিঘির পাড়ে অবস্থিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখায় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
নগরের তালপুকুরপাড় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকালে ওই এলকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দেয়। তাদের হাতে ছেনি, রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। এসময় কয়েকটি ককটেলও বিস্ফোরণ ঘটলে গোটা এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, “বিগত সময়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযানের কারণে কিশোর গ্যাং প্রায় নিষ্ক্রিয় ছিল। তবে নতুন করে তারা মাথাচাড়া দিতে চাইছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’’
ঢাকা/রুবেল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক র ম এল ক য় নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস