বিচার হলে আ.লীগ চালানোর কেউ থাকবে না: মামুনুল হক
Published: 27th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, “ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ছিলেন একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ। খুন-গুমসহ রক্তের হোলি খেলায় তিনি সুখ খুঁজে পেতেন। তাই দ্রুত আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাসহ সবার বিচার করতে হবে। সবার বিচার শেষে যদি কোনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অবশিষ্ট থাকে, তবেই তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হোক। আমার বিশ্বাস, বিচার হলে আওয়ামী লীগ চালানোর মতো কোনো ব্যক্তি থাকবে না। আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই।”
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহরের মাছুমপুর ফুটবল খেলার মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খেলাফত মজলিস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
‘হাসিনা ও আ.
‘আওয়ামী জাহেলিয়াত’ স্মরণীয় হয়ে থাকবে: মামুনুল হক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, “অল্প সময়ে এই সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা গত রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়েছে। লোডশেডিং হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সাফল্য এসেছে।”
সম্প্রতি নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার নিন্দা জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে ইসলাম বিরোধী প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে।” তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ নারী এর বিপক্ষে অবস্থান নেবেন।
শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, “১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের ইচ্ছা ও অধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়েছিলেন। তিনি ভারত থেকে ইন্দিরা গান্ধীর দেওয়া ধর্মীয় মতবাদ আমদানি করেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ ভারতের শৃঙ্খলে জিম্মি হয়ে আছে। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে আর কোনদিন ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলটির জেলা শাখার সভাপতি মুফতি আব্দুর রউফ। এতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব মুফতী শরাফত হুসাইন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মুসা, কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহিনুর আলম বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি আহমাদুল্লাহ সিরাজী সমাবেশ পরিচালনা করেন।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ম ম ন ল হক স র জগঞ জ র রহম ন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন
ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ।
মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়।