সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে একটি লক্ষ্যবস্তুতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ শুক্রবার সকালে এ কথা বলেছেন। একই সঙ্গে নেতানিয়াহু আবার সিরিয়ায় বসবাসরত দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্যদের রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন।

ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্রুজ হলো সিরিয়ায় বসবাসরত একটি ক্ষুদ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী। ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে তারা ইসলাম ধর্মের একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত। সিরিয়া ছাড়াও লেবানন ও ইসরায়েলে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকদের বসবাস রয়েছে।

সংখ্যালঘু দ্রুজদের রক্ষার অঙ্গীকারের কথা বলে ইসরায়েল এ নিয়ে পরপর দুই দিন সিরিয়ায় হামলা চালাল। এর আগে গত বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে ইসরায়েল হামলা চালায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হামলাগুলো সিরিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীনদের প্রতি ইসরায়েলের গভীর অবিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে। সিরিয়ার বর্তমান শাসকগোষ্ঠী সুন্নি মতাদর্শ অনুসরণকারী ইসলামপন্থী। তারা গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসে।

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য বিষয়টি একটি অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কেননা, তিনি দ্বিধাবিভক্ত দেশটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, গত রাতে ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার দামেস্কে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে হামলা চালিয়েছে।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, এটি সিরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা। আর তা হলো, তাঁরা দামেস্কের দক্ষিণে সিরীয় বাহিনী মোতায়েন বা দ্রুজ সম্প্রদায়ের প্রতি কোনো হুমকি মেনে নেবে না।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ