প্রতি মাসের শেষে অংশীজনের সঙ্গে বসবে বিএসইসি
Published: 17th, May 2025 GMT
বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে বা সচল রাখতে আরোপিত ফি প্রত্যাহার এবং বিনিয়োগকারীদের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ নগদে জমা বা উত্তোলনের প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এছাড়া শেয়ারবাজার বিষয়ে প্রতি মাসের শেষে সকল অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
গতকাল বিএসইসির ডাকে শেয়ারবাজার অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.
গতকালের বৈঠকে অব্যাহত দর পতন ঠেকাতে স্বল্পমেয়াদি বা তাৎক্ষণিক সমাধান কী হতে পারে, সে বিষয়ে মতামত চান বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, আলোচনায় বড় অংশ জুড়ে ছিল বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত ব্যাংক হিসাবের সুদ আয় কে পাবে, কেন পাবে এবং বিকল্প কী হতে পারে– এমন বিষয় নিয়ে। এ নিয়ে মীমাংসা আগেই হয়েছিল। আবারও আলোচনার কথা বলে এটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন একটি ছোট ইস্যু বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখার অর্থই হলো বাজার আসলে মৌলিক সংকট বোঝে না।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে কী করতে হবে– এমন প্রশ্নে কেউ বলেছেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান বাড়াতে হবে। আবার কেউ বলেছেন, মূলধনি মুনাফায় কর প্রত্যাহার করতে হবে। লভ্যাংশে উৎসে করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করতে হবে।
আলোচনার পরিবেশ কেমন ছিল? এমন প্রশ্নে একজন কর্মকর্তা বলেন, খুবই আন্তরিক পরিবেশ ছিল। যদিও বাজার সমস্যা সমাধানে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়নি। আগে অংশীজনদের গুরুত্ব না দিয়ে বিএসইসি নিজের মতো চলার নীতিতে ছিল। এখন মনে হচ্ছে, নীতি বদলাতে চাচ্ছে। এটি ইতিবাচক। তারা প্রতি মাসের শেষে অংশীজনদের সঙ্গে বসবে, সমস্যা থাকলে শুনবে, পরামর্শ থাকলে তাও নেবে বলে জানিয়েছে।
বাজার পরিস্থিতি
এদিকে ঈদের দীর্ঘ ছুটি পুষিয়ে নিতে সরকারের সিদ্ধান্তে গতকাল অন্যান্য অফিসের মতো শেয়ারবাজারও খোলা ছিল। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২৫৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৩টির। এতে ডিএসইএক্স সূচক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৮২০ পয়েন্টে উঠেছে। তবে লেনদেন ৩৪ কোটি টাকা কমে ২৬৩ কোটি টাকার নিচে নেমেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র ব এসইস
এছাড়াও পড়ুন:
তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহারের ব্যবধান ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির মধ্যকার করপোরেট করহারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন বাজার অংশীজনেরা। পাশাপাশি আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ শনিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এক বৈঠকে এসব প্রস্তাব করা হয়। এর আগে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও বিএসইসির পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছিল।
শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার অংশীজনদের সঙ্গে আজ শনিবার বিকেলে বৈঠকে বসে বিএসইসি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিএসইর চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান, শাকিল রিজভী ও রিচার্ড ডি রোজারিও, বিএমবিএর সভাপতি মাজেদা খাতুন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় শেয়ারবাজারের মূলধনি মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার, বেনিফিশিয়ারি ওনার্স বা বিও হিসাবের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ মাশুল মওকুফ, ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর থেকে অগ্রিম কর কমানো, ব্রোকারেজ হাউসের সমন্বিত গ্রাহক হিসাব থেকে প্রাপ্ত আয়ের ব্যবহার, সরকারি কোম্পানি ও বেসরকারি খাতের বহুজাতিক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিসহ বাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে যেসব বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে বিএসইসি ব্যবস্থা নেবে বলে সভায় জানানো হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।
বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় আইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির আয়ের ৮০ শতাংশই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করা হবে। বাকি ২০ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার বাজার অংশীজনদের নিয়ে সমন্বয় সভা করা হবে।