কোরবানি শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রবিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট ও কাঁচা চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভা এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তি‌নি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, “কোরবানি ঈদ তিন দিনব্যাপী চলে। এর মধ্যে প্রথম দিনে প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ গরু বা পশু কোরবানি করা হয়ে যায়। বাকি দুই দিনে বাকি ৫-১০ শতাংশ কোরবানি করা হয়ে থাকে। জনগণের দুর্ভোগ নিরসন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দ্রুত করার স্বার্থে কোরবানি শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির সব বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এ বিষয়ে দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সভাকে কথা দিয়েছেন। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ

নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের তৎপর থাকার নির্দেশ রেল কর্তৃপক্ষের

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এ বছর গরুর হাটের হাসিল কমানো সম্ভব হয়নি, ৫ শতাংশ হাসিল অনেক বেশি। তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, যাতে আগামী বছর থেকে হাসিল ৩ শতাংশের বেশি না হয়।”

তিনি বলেন, “এবার ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ২০টি কোরবানির হাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসব হাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য হাটপ্রতি কমপক্ষে ৭০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “কোরবানির হাটে পশু চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে কোনো অসুস্থ গরু বা পশু বিক্রি হতে না পারে। তাছাড়া অনেকেই গরুর হাটে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে, সেজন্যও চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি হাটে নিয়োজিত দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এটির বন্দোবস্ত করবেন।”

উপদেষ্টা বলেন, “কোরবানির পশুর গাড়িগুলো কোনো অবস্থায় রাস্তায় নামানো যাবে না। এর জন্য প্রত্যেক হাটে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং স্থানটি রাস্তা থেকে অনেক দূরে থাকতে হবে।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, “পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে প্রতি বছর অনেক চামড়া নষ্ট হয়। আমরা চাই বিক্রেতারা চামড়ার নায্যমূল্য পাক। চামড়ার ন্যায্যমূল্য গরীবের হক। চামড়াগুলো সাধারণত বিভিন্ন গরীব মানুষকে, এতিমখানায়, মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা এটার ন্যায্য মূল্য পান না। তারা যাতে চামড়ার নায্যমূল্য পায়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.

খোদা বখস চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র ক রব ন র উপদ ষ ট ব যবস থ বর জ য

এছাড়াও পড়ুন:

ডিপোতে পোঁতা ছিল বাস মালিকের লাশ

পরিবহন ব্যবসায়ী আনারুল হোসেন শিকদারকে হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা হয় তুরাগের বাস ডিপোতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য, বাসের চালক ও নিরাপত্তাকর্মীর হাতে ব্যবসায়ী আনারুল নির্মমভাবে খুন হয়েছেন।

গত ১৭ জানুয়ারি নিখোঁজের পরদিন ঢাকার তুরাগ থানায় জিডি করেন পরিবারের সদস্যরা। এর পর তদন্তে নামে পুলিশ। দীর্ঘ চার মাস তদন্তের পর সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করে তুরাগ থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করে তারা। পরে তাদের দেখানো স্থান থেকে গতকাল রোববার আনারুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলো– সবুজ, শাকিল ও কালাম। তিনজনই রাইদা পরিবহনের বাসচালক। শনিবার রাতে সবুজকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে শাকিল ও কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বিডিজবসের কর্মকর্তা দেলোয়ার শিকদার তুরাগ থানায় হত্যা মামলা করেছেন। 

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, মালিককে হত্যা করার পরও আসামিরা স্বাভাবিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে আসছিল। পালিয়ে না যাওয়ায় তাদের সন্দেহের তালিকায় আনা হয়নি। তবে গত কয়েক দিন সবুজের কথাবার্তা ও আচরণে সন্দেহ হয় তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের। এক পর্যায়ে সবুজসহ তিনজনই পালিয়ে যায়। শনিবার তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যারহস্যের জট খোলে।
নিহতের ভাতিজা তানভির শিকদার সমকালকে জানান, নিখোঁজের পর থেকে আমাদের সন্দেহ হয় ডিপো নিয়ে। একাধিকবার নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু সে জানায়, ঘটনার দিন সকালে তার কাছ থেকে কিস্তির ৩১ হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়ে যান চাচা। 

তানভির শিকদার বলেন, ঘটনার ক’দিন আগে চাচা আমাকে জানান, সবুজের কাছে আট লাখ টাকা ও ডিপোর নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহর কাছে বাস বিক্রির ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। তারা ঠিকমতো কিস্তি দিতে পারছে না। এ নিয়েই আসাদুল্লাহ ও সবুজ চাচাকে হত্যা করেছে। 

আনারুল শিকদারের গ্রামের বাড়ি বরিশাল সদরে। স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি ঢাকার উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ২৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাস করতেন। কয়েকটি গাড়ি কিনে রাইদা কোম্পানিকে ভাড়া দিয়েছিলেন।
তুরাগ থানার এসআই মামুনুর রশিদ জানান, রোববার বিকেলে ব্যবসায়ী আনারুলের লাশ মর্গে পাঠানো হয়। সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ