জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় পদক্ষেপের দাবিতে ব্রাজিলে বিশাল মিছিল
Published: 15th, November 2025 GMT
জলবায়ু ও প্রকৃতি সঙ্কটের বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে হাজার হাজার মানুষ মিছিল করেছে ব্রাজিলের বেলাম শহরের রাস্তায়। শনিবার এই শহরের সড়কগুলোতে আদিবাসীদের শ্লোগান, ধ্রুপদী ব্রাজিলিয়ান গান এবং পরিবেশগত ন্যায়বিচারের আহ্বান প্রতিধ্বনিত হয়েছিল।
বিশ্বজুড়ে পরিবেশবাদী কর্মীরা জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলক কপ-৩০ এর আমাজনীয় আয়োজক শহরে জড়ো হয়েছেন। পরিবেশবাদী কর্মীরা আলোচকদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
চার বছর আগে গ্লাসগোতে কপ-২৬ এর পর বার্ষিক জলবায়ু আলোচনার বাইরে বিক্ষোভ ছিল প্রথম বড় প্রতিবাদ। এরপরেই ব্রাজিলেই বড় আকারে বিক্ষোভ হচ্ছে। কারণ শেষ তিনটি সমাবেশ এমন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে বিক্ষোভের প্রতি খুব কম সহনশীলতা ছিল - মিশর, দুবাই এবং আজারবাইজান।
শনিবার বেলামে ‘গ্রেট পিপলস মার্চ’ শুরু হয়। ভোরবেলায় আদিবাসী বিক্ষোভকারীদের একটি বিশাল দল মিছিল শুরু হওয়ার অপেক্ষায় স্লোগান দিচ্ছিল।
রাকেল ওয়াপিচানা রোরাইমা থেকে নয় ঘন্টা ভ্রমণ করে এই মিছিলে যোগদান করেছিলেন। তিনি একটি প্ল্যাকার্ড বহন করেছিলেন যেখানে লেখা ছিল: ‘আসুন সংগ্রাম করি।’
তিনি বলেছেন, “আমি এখানে আমার জনগণ, আমার ভূমি, আমাদের নদী এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য এসেছি। খনি, কৃষি ব্যবসা এবং ভূমি আক্রমণের মাধ্যমে আমরা ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে।”
মিছিলের সবচেয়ে আলোচিত অংশ ছিল ‘জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’। কালো পোশাক পরিহিত এক ডজন ‘শোকার্ত’ দুটি বৃহৎ ভূতের পুতুল এবং তিনটি বিশাল কফিনের নীচে সমাবেশ করেছিলেন। ওই কফিনগুলোর উপর ‘কয়লা’, ‘তেল’ এবং ‘গ্যাস’ শব্দ লেখা ছিল।
ব্রাজিলে জলবায়ু আলোচনার এখনো এক সপ্তাহ বাকি আছে এবং ফলাফল কী হবে তা স্পষ্ট নয়। ব্রাজিলের আয়োজকরা জানিয়েছেন, তারা কোনো ‘প্রচ্ছদ সিদ্ধান্ত’ জারি করার পরিকল্পনা করছেন, অর্থাৎ আলোচনার শেষে চুক্তি ঘোষণার কথা ভাবছেন না। এর পরিবর্তে, তারা বাস্তবায়নের উপর জোর দেবেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাজনীতি ছাড়লেন লালুপ্রসাদের মেয়ে রোহিনী
নির্বাচনে বড় হারের পর নতুন সংকটে পড়েছে বিহারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। পারিবারিক বিরোধের জেরে আজ শনিবার আরজেডি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির প্রধান নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিণী আচার্য। একই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন জোটের পরাজয়ের এক দিন পরই এমন ঘোষণা দিলেন তিনি। বিরোধীদলীয় জোটটি এবারের নির্বাচনে ২৪৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩৫টিতে জয় পেয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে রোহিণী লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং পরিবারকে অস্বীকার করছি। সঞ্জয় যাদব ও রামিজ আমাকে এটাই করতে বলেছেন...আর সব দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি।’
সঞ্জয় যাদব রাজ্যসভায় আরজেডি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বী যাদবের বিশ্বস্ত সহযোগী। রামিজ তেজস্বীর পুরোনো বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের পর তেজস্বীই দলের নেতৃত্ব দেবেন।
গত মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বাবা লালুপ্রসাদ ও ভাই তেজস্বীকে আনফলো করেন রোহিণী। ওই সময়ই লালুপ্রসাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সঞ্জয় যাদব অন্যদের বঞ্চিত করে দলের ভেতরে ক্ষমতা সংহত করছেন বলে সমালোচনা করেছেন রোহিণী।
আরজেডি পরিবারের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি রোহিণী চিকিৎসাবিদ্যায় ডিগ্রি রয়েছে। তিনি পরে গৃহিণী হিসেবে সিঙ্গাপুরে থাকা স্বামীর সঙ্গে থিতু হন। কয়েক বছর আগে বাবা লালুপ্রসাদের জন্য কিডনি দান করে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন রোহিণী। তিনি গত বছর বিহারের সারন জেলা থেকে লোকসভা নির্বাচন করে পরাজিত হন।
ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার করায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন রোহিণী। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে ছোট ভাই তেজস্বীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। তেজস্বী এবারের নির্বাচনে জোটের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য লড়েছিলেন।
ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার করায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন রোহিণী। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে ছোট ভাই তেজস্বীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। তেজস্বী এবারের নির্বাচনে জোটের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য লড়েছিলেন।বিহারের নির্বাচনে যা ঘটেছেবিধানসভা নির্বাচনে এবার ২৪টি আসন পেয়েছে আরজেডি। অথচ পাঁচ বছর আগে বিধানসভায় দলটি পেয়েছিল ৭৫ আসন। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) সর্বোচ্চ আসন জিতলেও মহাগঠবন্ধনের আসন সংখ্যা তলানিতে পৌঁছায়। এটি কংগ্রেস ও আরজেডির জন্য বড় ধরনের ধাক্কা।
এনডিএ জোটের প্রধান দুই দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও জনতা দল (জেডি) ১০১টি আসনে ৮৫ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। এ ঘটনা থেকে এনডিএর বড় ধরনের জয়ের কারণটি বোঝা যায়। জোটটি বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে ২০০টির বেশি আসনে জয় পেয়েছে। রাজ্যটিতে সবচেয়ে বড় একক দল হিসেবে উত্থান ঘটেছে বিজেপির।
আরও পড়ুনবিহারে বিজেপি জোটের কাছে কংগ্রেস–আরজেডির ভরাডুবি১৪ নভেম্বর ২০২৫