তিন সীমান্ত দিয়ে আরও ৬৮ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
Published: 28th, May 2025 GMT
সিলেট ও সুনামগঞ্জের তিন সীমান্ত দিয়ে আরও ৬৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
বুধবার ভোরে সিলেট-জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ৫২ জন এবং সুনামগঞ্জের ছাতক সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরুষ ১৮, নারী ২২ এবং শিশু ২৮। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের সবাইকে আটক করে বিজিবি জৈন্তাপুর থানা ও ছাতক থানায় হস্তান্তর করেছে। এ নিয়ে ৪ মে থেকে আজ পর্যন্ত মোট ৯০১ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ।
বিজিবি জানায়, আটক অধিকাংশই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। এ ছাড়া যশোরের অভয়নগর এবং বাগেরহাটেরও কয়েকজন আছেন। সিলেট ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক জানান, আটক সবার প্রাথমিক পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে, তারা বাংলাদেশি।
লালমনিরহাটের তিন উপজেলার ছয় সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৬৫ নারী, পুরুষ ও শিশুকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিএসএফ। গত বুধবার গভীর রাতে তাদের ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিজিবি ও স্থানীয় গ্রামবাসীর বাধায় ৬৫ জনের কেউ প্রবেশ করতে পারেনি।
আজ দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে এই ৬৫ নারী-পুরুষ-শিশু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে খোলা জায়গায় অবস্থান করছেন। ভোরে এই ৬৫ জনের মধ্যে এক ব্যক্তি তাঁর শিশু সন্তানের জন্য দুধ সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ সীমান্তের লোকালয়ে আসেন। এ সময় স্থানীয়রা তাদের দুধ, কলা ও পানি দিয়ে সহায়তা করেন। ওই ব্যক্তির বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানান, নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকে পড়া অন্তত ১৩ জন ভারতের আসাম রাজ্যের বাসিন্দা। ভারত সরকার তাদের জোর করে ধরে এনে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এদিকে নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে নিতে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার দুর্গাপুর বিওপির চওড়াটারী সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। কিন্তু বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আবার বসার আশ্বাস দিয়ে বিএসএফ চলে যায়।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হলে তাদের সানন্দে গ্রহণ করা হবে। কিন্তু আটকে পড়া সবাই আসামের বাসিন্দা। আসামে তাদের সুস্পষ্ট ঠিকানা রয়েছে। তারা ভারতে প্রত্যাবর্তন করতে চায়। বিএসএফ রাতের আঁধারে তাদের পুশইন করছে। এটা অমানবিক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ