বকরি ঈদের চান উঠনের ১০ দিনের দিন বকরি ঈদ। মাগার যার আওকাত আছে, অর বাড়িতে হাটে যায়া গরু-বকরি দ্যাখন, দাম দস্ত্তুরকরণ শুরু অয়া যায় ঈদের এক হপ্তা আগে থেকা। আগে অহনকার মথন ঘরে ঘরে গরু কোরবানি অইতো না।
মাগার যে বাড়িতেই বকরি ঈদে গরু আহুক, মহল্লার সব পোলাপান ঐ গরু লিয়া দিন-রাইত পেরেশান থাকতো, আর বকরি ঈদের খুশি কেউর কম পড়তো না। যারা কোরবানি দ্যায়, অগো পোলাপান ঈদের নয়া কাপড়লত্তার ধার ধারে না, অগো গরু অইলেই চলে। অহন তো গরুর লগে ফ্রিজ কিননের ধুম লাইগা যায় যারা কোরবানি না দ্যায় অগো ভিতরে বি। বকরি ঈদে কেউ কোরবানি না দিলে বি গোশত থাকে আঢালা সব বাড়িতে। বকরি ঈদে যারা কোরবানি দ্যায়, অরা আপনা এ্যাগানা সবতের কোরবানির গোশত বাইটা চিরা খায়।
আগে ঢাকাইয়া গো ভিতরে বকরি ঈদে মাইয়ার হৌড় বাড়িতে আলাম গরু পাঠানের রেওয়াজ আছিলো না। যার উপরে কোরবানি দেওয়ার ওয়াজিব, ওই আপনা ট্যাকায় কোরবানি দিবো– এইটাই হুকুম। ঐসমে বিয়াই বাড়িতে কোরবানির রান পাঠানের রেওয়াজ আছিলো, অহন তক এই রেওয়াজ আছে। ঢাকাইয়ারা খালি মাইয়ার হৌড় বাড়িতে গরুর রান পাঠায় না, পোলার হৌড় বাড়িতে বি গরুর আলাম রান পাঠায়। মাগার কিছু নয়া পয়সাআলারা বিমাইরা এক হড়িপিতে নাইমা মাইয়ার হৌড় বাড়িতে আনাম গরু পাঠায়া নিজের আওকাত বুঝানের কোশিস করে। এইসব ফুটানি নয়া পয়সাআলারা দ্যাখায়। ঢাকাইয়া রহিস ঘরানার মাইনষে এইসব বাইলা ফুটানির বাতে নাই।
ঢাকাইয়ারা বকরি ঈদের এন্তেজার করে বহুত দিলে জাহাসে। এইটার মূল ওয়াজা অইছে কোরবানির গোশতের বহুত খোশবুদার কোর্মা। হাড্ডি ছাড়া বড়ো বড়ো গোশতের টুকরা চর্বিতে ডুবায়া ভুনা ভুনা কইরা বহুত দিন রাইখা দেওনের পন্থা জানে ঢাকাইয়ারা। বকরি ঈদে কোরবানির গোশত গরমকরনের সমে যে গেরান বাইর অহে, ঐটার গেরান পুরান ঢাকার গল্লি কুনছির বাতাসে ঘুইরা মাইনষের নাক দিয়া মগজ তক যায়া হান্দাইতো। ঐ কোর্মার মজাদার খোশবুতে সব ঢাকাইয়া মাতোয়ারা। আর ঐ কোর্মার ঝুরি গোশত ঝুরঝুরা মুচমুচা ঝুরি গোশতের লগে খাস্তা নিমসুকা রুটি, আহা! ঐটার সামনে বেহেস্তি খানা ক্যায়া চিজ? আমি কইবার পারুম না। বকরি ঈদের বাদে গোশত খতম অহন না তক সবতে ঐ গোশত খাওনে ডুইবা থাকতো। আমি ঐ কোর্মার কথা কয়া খতম করবার পারুম না। গরম গরম ভাত আর ঐটার লগে কোর্মার এক টুকরা গোশতের লগে কাঁচা পিঁয়াইজ আর কাঁচামরিচ বা ত্যালে টালা হুকনা মরিচ, ঐটাই কাফি, আর কিছু লাগে না।
ঐ কোর্মা পোলাও, খিচুড়ি, ভাত, রুটি পারাটা, নান, নিমসুকা রুটি দিয়া খায়। যতোই খাও, প্যাট ভইরা যাইবো, মাগার জি ভরবো না। যুদি কুনু ঢাকাইয়া কেউ কইবো আমি ঐ কোর্মা খাই না, তাইলে আমরা কমু ওই সরাসর মিছা কথা কইতাছে, আর অরে আমরা ঢাকাইয়া বইলা স্বীকার করুম না। যারা কোরবানির গোশতের কোর্মা একবার খাইছে, ওই মরতে দমতক ঐ কোর্মার গেরান আর স্বাদ ভুলবার পারবো না। যুদি বি বকরি ঈদে মাইনষের ঘরে ঘরে গোশত দিয়া নানান কিসিমের কালিয়া কোপ্তা, কোয়াব, কাটলেট, কিমা, তরে তরে খানা তৈয়ার অহে, আর সবতে কবজি ঢুবায়া খানাপিনা করবো– এইটাই বকরি ঈদের রেওয়াজ।
ঈদের দিন আর ঈদের বাদের দিন আগুনে ঝলসাইনা গোশতের কোয়াবের জ্বল্লা জ্বল্লা গেরান এই দুইদিন তক বাতাসে ভাইসা বেড়ায়। আগে কেউ নেহারি বা গরুর পায়চা তৈয়ার করতো না, অহন ঈদের দিন রাইতেই নেহারির পাতিলা চুলায় চইড়া যায়। মাগার আগে যে কোর্মা বকরি ঈদে ঢাকাইয়া গো গরিব পয়সাআলা সবতের ঘরে ঘরে তৈয়ার অইতো, ঐটার কুনু জোয়াব নাই, এককথায় কইবার গেলে এক্কেরে লাজোওয়াব। অহন ঘরে ঘরে ফ্রিজের চল আহনে ঐ কোর্মা কেউ তৈয়ার করবার চায় না। মাগার অহন বি ময় মুরব্বিরা এই কোর্মা রান্ধনের হুকুম দ্যায়, আর কিছু বউ, মাইয়া তৈয়ার বি করবার পারে। আমি অহনতক চোখ বন্ধ করলে, আমার ছোট ওক্তের কথা খেয়াল করলে, কোরবানির গোশতের কোর্মার বেহেস্তি গেরান অহন বি মাহেসুস করি।
যে বাড়িতে গরু কোরবানি অইতো, অরা নিজে গো কোরবানির গোশত বাটতে বাটতে যুদি কিছু আপনা এ্যাগানার বাড়িতে দিতে কম পইড়া যাইতো, তাইলে অগো নিজের বাড়িতে কুনু বাড়ির হিস্যা অইলে ঐ গোশত বি বাইটা দিতো, যিমুন কেউ কইবার না পারে অমুকের বাড়ি থেকা এইবার গোশত আহেনি।
আমার ছোট ওক্তে দেখছি, ঢাকাইয়া গরিব পয়সাআলা সব বাড়ি বাড়িতে, বকরি ঈদে বাড়ির বউ-মাইয়ারা আগে মেন্দি বাইটা, বাদে নানান কিসিমের ময় মসলা পাটায় বাটন শুরু কইরা দিতো। বকরি ঈদের আগের দিন রাইতে সবতে হাতে মেন্দি পিন্তো, মাগার কাম কাজের ঠ্যালায় হাতে পানি লাগতে লাগতে সব রং ফ্যাদা অয়া যাইতো ঈদের দিন। ঈদের দিন মায়েরা বিহান থেকা লিয়া রাইত তক পেরেশান থাকতো, কোরবানির গোশত যিমুন কুনুমতেই পইচা না যায় একজারাসি গাফলতির লেগা। এল্লেগা মায়েগো পশিনার লগে কোর্মার গেরান একলগে মিলা-ঝুইলা সব একলগে আমাগো নাকে ধাক্কা দিতো। ঈদের বাদে মায়েরা যবে রোজ বিয়ালে লাকড়ির চুলায় গোশত গরম করতো, ঐসমে পোলাপানরা সবতে চুলার সামনে বয়া গরমা গরম গোশত পেয়ালা ভইরা লিয়া খাইতো। আগে ঘরে ঘরে ফ্রিজ আছিলো না বইলা বকরি ঈদের হপ্তা ভইরা গরিব পয়সাআলা ঢাকাইয়া গো ঘরে ঘরে গোশতের ঢলাঢলি আছিলো। দেইখা মনে অইতো, কোরবানির গোশতের বহুত বরকত। মাগার অহন সব বরকত ফ্রিজের ভিতরে যায়া হান্দে।
আগে যারা কোরবানি দিতো, অগো ঐ কোর্মার লগে মহরমের আশুরার দিন ঘরে ঘরে খিচুড়ি রাইন্ধা গরিব মাইনষের ভিতরে বাটনের রেওয়াজ আছিলো। যারা কোরবানি দিতো না, অরা বি তাব্বি নিজের ঘরে কোর্মা দিয়া খিচুড়ি রাইন্ধা বালবাচ্চা লিয়া খাইতো আশুরার দিন, নেকি পাওনের উম্মিদে। এই কোর্মা এক বচ্ছরের বি রাখন যায় চর্বিতে ঢুবায়া। ঢাকাইয়ারা অগো নিজে গো নানি-দাদি থেকা পাওয়া মুনশিয়ানায় অরা এইটা হিকা আইছে অগো আগের পোস্তানের খান্দিনী পরম্পরায়। এই পরম্পরা অহন বি আছে, মাগার সামনে থাকবো কিনা, আমি জানি না।
আখতার জাহান : সাহিত্যচর্চা করেন পুরান ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায়
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আর্জেন্টাইন গায়িকাকে ছেড়ে কি ইতালিয়ান মডেলের প্রেমে মজেছেন ইয়ামাল
কয়েক মাস ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।
তবে ইয়ামাল নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু একজনের সঙ্গে—আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র্যাপার নিকি নিকোল। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাত্র তিন মাসেই নিকোলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে ইয়ামালের। চোট, ছন্দহীনতা, বিতর্ক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন...সবখানেই হোঁচট খাচ্ছেন বার্সেলোনার এই উদীয়মান উইঙ্গার।
কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও খবর এসেছে যে ইয়ামাল বিশ্বাসভঙ্গ করাতেই তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন নিকোল। ইতালির মিলানে এক পার্টিতে দেশটির ২০ বছর বয়সী মডেল আনা গেগনোসের সঙ্গে নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে ইয়ামালকে। বিষয়টি জানতে পারাতেই নিকোল নাকি ইয়ামালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
তবে এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভি হোয়োসের অনুষ্ঠানে এসে ১৮ বছর বয়সী তারকা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা সব খবর ভিত্তিহীন।
আরও পড়ুনইয়ামাল কি সত্যিই ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে মজেছেন১৮ জুন ২০২৫ইয়ামাল বলেছেন, ‘আমরা (তিনি ও নিকোল) এখন আর একসঙ্গে নেই। কিন্তু সেটা বিশ্বাসভঙ্গের কারণে নয়। আমরা শুধু আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এইটুকুই। যা বলা হচ্ছে, কিছুই সত্যি নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি, অন্য কারও সঙ্গেও ছিলাম না।’
ইয়ামালের দাবি, যেসব সংবাদমাধ্যম গল্প বানিয়ে প্রতারণার খবর ছড়াচ্ছে, সেগুলো স্রেফ গুজব।
নিকি নিকোলও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাকে ঠকাত, আমি প্রথমেই সবাইকে জানাতাম। আগেও আমি তাই করেছি।’
২৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন গায়িকা উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকান গায়ক পেসো প্লুমার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে এনেছেন। গত বছর প্লুমা প্রতারণা করায় নিকোলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।
আরও পড়ুনইয়ামালের গাড়ি বা বান্ধবী নয়, ওর খেলা দেখুন: স্পেনের কোচ২৬ আগস্ট ২০২৫তবে ইয়ামালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙেছে। এখানে প্রতারণার কোনো ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন নিকোল, ‘আমরা আগেই আলাদা হয়েছি, শুধু ঘোষণা করিনি।’
ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ইয়ামাল এখন ফুটবলে মনোযোগী হতে চাইছেন।
ইয়ামালের গোল উদ্যাপন। কাল রাতে এলচের বিপক্ষে