কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় নির্ধারণ শরিয়াহর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; কারণ, এটি নির্দিষ্ট দিন ও সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী, কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারিত সময় হলো জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট দিনগুলো। শাইখ সাইয়্যেদ সাবিক তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফিকহুস সুন্নাহে উল্লেখ করেছেন, কোরবানির জবাই করতে হবে:
১.
২. তাশরিকের দিনগুলো: জিলহজের ১১, ১২ এবং ১৩ তারিখ। এই তিন দিন তাশরিকের দিন হিসেবে পরিচিত এবং এই সময়েও কোরবানি জবাই করা যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তাশরিকের সব দিনই জবাইয়ের দিন’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ১৯,৪১৬)। এই হাদিস থেকে স্পষ্ট যে জিলহজের ১০ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত কোরবানি জবাইয়ের জন্য বৈধ সময়।
জিলহজের ১১, ১২ এবং ১৩ তারিখ। এই তিন দিন তাশরিকের দিন হিসেবে পরিচিত এবং এই সময়েও কোরবানি জবাই করা যায়।জবাইয়ের সময়ের শুরু ও শেষ
শুরু: কোরবানি জবাইয়ের সময় শুরু হয় ঈদুল আজহার নামাজ ও খুতবা শেষ হওয়ার পর। শরিয়াহর নিয়ম অনুযায়ী, ঈদের নামাজের আগে জবাই করা বৈধ নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে জবাই করে, সে তার নিজের জন্য মাংস জবাই করেছে। আর যে নামাজের পর জবাই করে, সে আমাদের রীতি পূর্ণ করেছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৫৫৬)
শেষ: জবাইয়ের সময় শেষ হয় জিলহজের ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের সঙ্গে। তাশরিকের তিন দিনের মধ্যে জবাই সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুনএকজন হজযাত্রীর দিনলিপি২৪ জুন ২০২৪যদি কেউ এই সময়ে জবাই করতে ব্যর্থ হন, তবে তাঁদের কোরবানি পূর্ণ হবে না। তবে পশু কেনা হলে তা সদকা করে দিতে হবে।নির্ধারিত সময়ে জবাই করা না গেলে
যদি কেউ জিলহজের ১০ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে কোরবানি জবাই করতে না পারেন, তবে শাফেয়ি মত অনুযায়ী তাঁরা পরবর্তী সময়ে তা কাজা হিসেবে জবাই করতে পারেন। তবে মালিকি, হানবালি এবং হানাফি মতে, নির্ধারিত দিনগুলোর মধ্যে জবাই করা আবশ্যক। যদি কেউ এই সময়ে জবাই করতে ব্যর্থ হন, তবে তাঁদের কোরবানি পূর্ণ হবে না। তবে পশু কেনা হলে তা সদকা করে দিতে হবে।
কোরবানি জবাইয়ের সময় নির্ধারণ শরিয়াহর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ; কারণ, এটি হজের আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং জিলহজের এই দিনগুলো আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। নির্ধারিত সময়ে জবাই করা এই ইবাদতের শৃঙ্খলা ও তাৎপর্যকে আরও গভীর করে।
সূত্র: অ্যাবাউট ইসলাম ডট নেট
আরও পড়ুনহাজেরা (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর ত্যাগে মক্কার জমজম কূপ১৭ জুন ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রব ন র ১৩ ত র খ জ লহজ র এই সময়
এছাড়াও পড়ুন:
৯০ বছর বয়সী এই নারীর বিধবা ভাতার টাকা খোয়া গেল কীভাবে
মুঠাফোনে বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছিলেন ৯০ বছর বয়সী আমেনা বেগম। আশা ছিল ঈদে নিজের জন্য নতুন কাপড় কিনবেন, নাতি-নাতনিদেরও কিছু দেবেন। ভালো কিছু খাবেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন, যে মুঠোফোন নম্বরে টাকা এসেছে, সেখানে টাকা নেই, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির কাছে এ কথা শুনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তাঁর ঈদটাই শেষ হয়ে গেল।
আমেনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল জলিলের স্ত্রী।
বয়স্ক এই নারী বলেন, ছোটবেলায় তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়ে। স্বামী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ছেলেরাও এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি ছেলেদের কাছে থাকেন। কিন্তু তাঁরাও হতদরিদ্র, নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়।
আমেনা বেগম বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছেন। ২৯ মে তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরে ভাতার এক বছরের ৬ হাজার ৬০০ টাকা একসঙ্গে আসে। কিন্তু দোকানে গিয়ে শোনেন টাকা অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির ভাষ্য, ওই বৃদ্ধার মুঠোফোন থেকে একটি মুঠোফোন নম্বরে ৩৯ টাকা রিচার্জ করা হয়। পরে ওই নম্বরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা ‘সেন্ড মানি’ করা হয়।
মুঠোফোনটি ব্যবহার করেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবদুস সাত্তার। তিনি বুঝতে পারছেন না কীভাবে তাঁর ফোন থেকে ‘সেন্ড মানি’ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। মা ভাতার টাকা পেলে নিজের প্রয়োজনমতো খরচ করতেন। এবারও টাকা পেয়ে অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। কীভাবে টাকাটা খোয়া গেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি।
যে নম্বরে ওই বৃদ্ধার টাকা গেছে, সেই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, ওই নারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।