আজ শুক্রবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ত্যাগ ও আনন্দের এই ঈদে শামিল হন মুসলিমরা। তবে এই আনন্দ স্পর্শ করছে না ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের।
প্রতিবেশী দেশগুলো যখন ঈদ–আনন্দে মাতছে, তখন হয়তো ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত কোনো ফিলিস্তিনির মরদেহ ঘিরে মাতম করছে গাজার কোনো একটি পরিবার।
গাজার এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর ইতিমধ্যে তিনটি ঈদ এভাবেই কেটেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। আজ এ যুদ্ধের ৬০৮তম দিনে চতুর্থ ঈদ এসেছে তাঁদের জীবনে। ঈদের আনন্দ গাজার বাসিন্দাদের জন্য এখন কেবলই স্মৃতি।
সাধারণত ভেড়া ও দুম্বা কোরবানি দিয়ে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। পাশাপাশি গরু, ছাগল ও উটও কোরবানি দেওয়া হয়। তবে কোরবানির জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পশু আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয় গাজার বাসিন্দাদের। যুদ্ধের কারণে পশু পালন সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে পশু আমদানিও করা যাচ্ছে না। ফলে চাইলেও কোরবানি দিতে পারছেন না গাজার মুসলিমরা।
ঈদ উদ্যাপনের মতো কোনো পরিবেশ নেই গাজায়। অবরুদ্ধ এ উপত্যকার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অনেকে কয়েক দফা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইতিমধ্যে এ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর গাজায় জীবিত পশু ঢুকতে পারেনি। যুদ্ধের কারণে পশু পালনও সম্ভব হয়নি। তার ওপর যেখানে মানুষের খাবার জুটছে না, সেখানে পশুখাদ্যের আশা করা তো রীতিমতো বিলাসিতা!
গাজার বাসিন্দাদের একজন আবু হাতিম আল-জারক্বা। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি কয়েকটি ছোট গবাদি পশু পালন করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরকে তিনি বলেন, গাজার বাসিন্দাদের জন্য কোরবানির পর্যাপ্ত পশু নেই। আর যে কয়টা আছে, আকাশচুম্বী দামের কারণে সেগুলো কেনাও সম্ভব নয়।
সন্তান আর নাতি-নাতনি নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটছে গাজা নগরীর বাসিন্দা নুহা আল-নাজ্জারের। দোহা নিউজকে তিনি বলেন, আশপাশে ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্না ভেসে আসছে। দুধের জন্য কান্না থামছে না তাঁর দুই বছর বয়সী নাতনিরও। নুহা বলেন, কয়েক মাস হয়ে গেছে এক বোতল দুধ চোখে দেখেননি।
একটা সময় গাজার বাসিন্দারাও ঈদ-আনন্দ করতেন। পরিবারকে নিয়ে কোরবানির মাংস খেতেন। শিশুদের কোলাহলে চারপাশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করত।
নুহা উত্তর গাজায় থাকেন তাঁর চার সন্তান ও কয়েকজন নাতি-নাতনিকে নিয়ে। তাঁর ছোট ছেলে ১০ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাবার সঙ্গে মিসরে আশ্রয় নিয়েছে। ধীর গলায় নুহা বলেন, ‘সে আমার আদরের ছোট্টটি! ঈদের আবহ সে খুব পছন্দ করত। এখনো সে আমাকে বলে, “মা, ইচ্ছা করে আবার পেছনে ফিরে যাই আর হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলো ফিরিয়ে আনি।”’
নুহাদের ঘরে এখন লবণ ছাড়া কিছু নেই। দিনে এক বেলা সামান্য কিছু খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই। সবার ছোট নাতনি আলমা এখনো যুদ্ধের কিছুই বোঝে না। ক্ষুধায় সারা দিন কাঁদে সে। তাদের কীভাবে বাঁচিয়ে রাখবেন, সে চিন্তায় দিশাহারা। নুহা বলেন, ‘নিজেদের কোরবানি দেওয়া ছাড়া আর আমাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই। না থামছে বোমাবর্ষণ, না আমাদের ক্ষুধার্ত পেটের কষ্ট আর আমাদের শিশুদের কান্না!’
তথ্যসূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর, দোহা নিউজ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ক রব ন র জন য আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স, আবেদন ৩ জুলাই পর্যন্ত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত) প্রোগ্রামে ভর্তি কার্যক্রমের জন্য অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন বিতরণ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত।
প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০ টাকা। এ প্রোগ্রামের ক্লাস শুরু হবে আগামী ২৭ জুলাই।
সাধারণ যোগ্যতা
আবেদনকারীকে অবশ্যই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি স্নাতক (পাস) নিয়মিত পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর কিংবা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে ন্যূনতম সিজিপিএ ২.২৫ পেতে হবে।
এ ছাড়া আবেদনকারীর প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত) প্রোগ্রামে ভর্তি-ইচ্ছুক বিষয়ে সনাতন পদ্ধতিতে ৪০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর বা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে পঠিত বিষয়ে ২৪ ক্রেডিটের মধ্যে ন্যূনতম জিপিএ ২ পেতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (পাস) প্রাইভেট বা সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত) ভর্তি কার্যক্রমে আবেদন করতে পারবেন না। তবে এসব শিক্ষার্থী পরে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (প্রাইভেট) প্রোগ্রামে আবেদনের যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ পাবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় পাস ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত) প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন না। তবে এসব শিক্ষার্থী সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর বা জিপিএ ২.২৫ পেলে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (প্রাইভেট) প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ১ম পর্ব/ প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত/প্রাইভেট) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ/ পড়াশোনা করা অথবা অন্য কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে বর্তমানে অধ্যয়নরত কোনো শিক্ষার্থী ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স (নিয়মিত) প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন না।
ভর্তির সময়সূচি
অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন ফরম পূরণ ও এর প্রিন্ট বা পিডিএফ কপি সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই, ২০২৫।
প্রাথমিক আবেদন ফরমসহ আবেদন ফি বাবদ ৪০০ টাকা সংশ্লিষ্ট কলেজে (কলেজ নির্ধারিত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বা সরাসরি) জমা দেওয়ার তারিখ ৭ জুলাই।
কলেজ কর্তৃক প্রাথমিক আবেদন ফরম অনলাইনে নিশ্চয়নের তারিখ ৮ জুলাই।
কলেজ কর্তৃক নিশ্চয়ন করা আবেদনকারীদের প্রাথমিক আবেদন ফির জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ (আবেদনকারী প্রতি ৩০০ টাকা হারে) ভর্তি ফান্ডে যেকোনো সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দেওয়ার তারিখ ৯ জুলাই থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে।
বিস্তারিত জানা জানতে ওয়েবসাইট।