Prothomalo:
2025-07-31@12:43:48 GMT

গাজায় ঈদ কেবলই স্মৃতি

Published: 6th, June 2025 GMT

আজ শুক্রবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ত্যাগ ও আনন্দের এই ঈদে শামিল হন মুসলিমরা। তবে এই আনন্দ স্পর্শ করছে না ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের।

প্রতিবেশী দেশগুলো যখন ঈদ–আনন্দে মাতছে, তখন হয়তো ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত কোনো ফিলিস্তিনির মরদেহ ঘিরে মাতম করছে গাজার কোনো একটি পরিবার।

গাজার এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর ইতিমধ্যে তিনটি ঈদ এভাবেই কেটেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। আজ এ যুদ্ধের ৬০৮তম দিনে চতুর্থ ঈদ এসেছে তাঁদের জীবনে। ঈদের আনন্দ গাজার বাসিন্দাদের জন্য এখন কেবলই স্মৃতি।

সাধারণত ভেড়া ও দুম্বা কোরবানি দিয়ে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। পাশাপাশি গরু, ছাগল ও উটও কোরবানি দেওয়া হয়। তবে কোরবানির জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পশু আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয় গাজার বাসিন্দাদের। যুদ্ধের কারণে পশু পালন সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে পশু আমদানিও করা যাচ্ছে না। ফলে চাইলেও কোরবানি দিতে পারছেন না গাজার মুসলিমরা।

ঈদ উদ্‌যাপনের মতো কোনো পরিবেশ নেই গাজায়। অবরুদ্ধ এ উপত্যকার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অনেকে কয়েক দফা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইতিমধ্যে এ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর গাজায় জীবিত পশু ঢুকতে পারেনি। যুদ্ধের কারণে পশু পালনও সম্ভব হয়নি। তার ওপর যেখানে মানুষের খাবার জুটছে না, সেখানে পশুখাদ্যের আশা করা তো রীতিমতো বিলাসিতা!

গাজার বাসিন্দাদের একজন আবু হাতিম আল-জারক্বা। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি কয়েকটি ছোট গবাদি পশু পালন করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরকে তিনি বলেন, গাজার বাসিন্দাদের জন্য কোরবানির পর্যাপ্ত পশু নেই। আর যে কয়টা আছে, আকাশচুম্বী দামের কারণে সেগুলো কেনাও সম্ভব নয়।

সন্তান আর নাতি-নাতনি নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটছে গাজা নগরীর বাসিন্দা নুহা আল-নাজ্জারের। দোহা নিউজকে তিনি বলেন, আশপাশে ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্না ভেসে আসছে। দুধের জন্য কান্না থামছে না তাঁর দুই বছর বয়সী নাতনিরও। নুহা বলেন, কয়েক মাস হয়ে গেছে এক বোতল দুধ চোখে দেখেননি।

একটা সময় গাজার বাসিন্দারাও ঈদ-আনন্দ করতেন। পরিবারকে নিয়ে কোরবানির মাংস খেতেন। শিশুদের কোলাহলে চারপাশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করত।

নুহা উত্তর গাজায় থাকেন তাঁর চার সন্তান ও কয়েকজন নাতি-নাতনিকে নিয়ে। তাঁর ছোট ছেলে ১০ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাবার সঙ্গে মিসরে আশ্রয় নিয়েছে। ধীর গলায় নুহা বলেন, ‘সে আমার আদরের ছোট্টটি! ঈদের আবহ সে খুব পছন্দ করত। এখনো সে আমাকে বলে, “মা, ইচ্ছা করে আবার পেছনে ফিরে যাই আর হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলো ফিরিয়ে আনি।”’

নুহাদের ঘরে এখন লবণ ছাড়া কিছু নেই। দিনে এক বেলা সামান্য কিছু খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই। সবার ছোট নাতনি আলমা এখনো যুদ্ধের কিছুই বোঝে না। ক্ষুধায় সারা দিন কাঁদে সে। তাদের কীভাবে বাঁচিয়ে রাখবেন, সে চিন্তায় দিশাহারা। নুহা বলেন, ‘নিজেদের কোরবানি দেওয়া ছাড়া আর আমাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই। না থামছে বোমাবর্ষণ, না আমাদের ক্ষুধার্ত পেটের কষ্ট আর আমাদের শিশুদের কান্না!’

তথ্যসূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর, দোহা নিউজ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ক রব ন র জন য আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র‌্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।

আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।

আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩

কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা
  • গাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়ালো
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
  • আলোচিত ষোড়শী আইনার পারিশ্রমিক কত?
  • গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: বলছে ইসরায়েলভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংস্থা