গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকা চুনারুঘাটবাসীর কাছে স্বস্তির আরেক নাম তালের শাঁস। তাই মনের মতো শাঁসের স্বাদ নিতে অনেকেই ভিড় করছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চণ্ডিছড়া চা বাগানের মাজার গেটে। সেখানে বসেছে তালের মৌসুমি বাজার।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই বাজারে ভিড় করছেন স্থানীয় পথচারী ও ভ্রমণপিপাসুরা। স্থানীয় যুবকরা প্রতিদিন ভোরে পাহাড়ি এলাকা থেকে সংগ্রহ করেন তাজা তাল। দুপুর গড়ানোর আগেই তা বিক্রি হয়ে যায় চাহিদার টানে। সড়কের পাশে সাজানো তালের স্তূপ, তাল কাটার শব্দ আর ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক মিলিয়ে দিনভর মুখর হয়ে থাকে মাজার গেট এলাকা।
তাল বিক্রেতা আব্দুল আলী বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি তাল বিক্রি হয়। প্রতিটি তাল ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করেন। সাধারণত প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার তাল বিক্রি হয়। সাতছড়ি ঘুরতে আসা মৌলভীবাজার জজকোর্টের আইনজীবী ইমরান লস্কর বলেন, “ঈদের পর বন্ধুদের নিয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ঘুরতে গিয়েছিলাম। সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে ফিরছিলাম বাড়ি। পথে চণ্ডিছড়ায় তালের দোকানে চোখ পড়তেই তৃষ্ণা মেটাতে নামি আমরা।’
বাহুবল থেকে আসা মামুনুর রশীদ বলেন, এভাবে স্থানীয়রা মৌসুমি ফল বিক্রি করে যেমন উপার্জন করছেন, তেমনি ভ্রমণকারীরাও পাচ্ছেন প্রকৃতির এক সরল আনন্দ। এই দৃশ্য শুধু মৌসুমি ফল বিক্রির গল্পই নয়; বরং গ্রামীণ জীবিকার ছোঁয়া, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের টিকে থাকার লড়াই আর আন্তরিকতার এক বাস্তব চিত্র।
চণ্ডিছড়ার এই তালের বাজার এখন সাতছড়ি সড়কের গরমকালীন আলাদা পরিচয় রয়েছে। তালের শাঁসের পুষ্টিগুণ ও তৃষ্ণা নিবারণের ক্ষমতা এই গরমে একে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে। তাল শাঁস খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর– এমনটাই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিদরা। 
স্থানীয়রা জানান, এই মৌসুমি বাজার শুধু একটি ফলের বাজার নয়, এটি গ্রামীণ অর্থনীতির একটি চিত্র। স্থানীয় যুবকরা এই মৌসুমি ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাল সংগ্রহ, কাটা ও বিক্রির মাধ্যমে তারা একটি সাময়িক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস তৈরি করেছেন। চণ্ডিছড়ার তালের বাজার এখন শুধু স্থানীয়দের নয়; বরং দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এই মৌসুমি তালের শাঁসের স্বাদ অনেকের মন জয় করে নিয়েছে। এ ছাড়াও সেখানে আম, জাম ও কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গরম করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জিডি

ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি সর্বজনীন শ্রীশ্রী কালী ও দুর্গামান্দিরের কালীপ্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

গত বুধবার বিকেলের মধ্যেই প্রতিমার ভেঙে ফেলা অংশগুলো মেরামত করা হয়। ওই প্রতিমা নির্মাণশিল্পী কানাইপুরের বিজন পাল প্রতিমাটি মেরামত করেন। এ জন্য আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে আড়াই হাজার টাকা।

মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাসুদেব বিশ্বাস বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম আমাদের জানা নেই। এ জন্য মামলা হয়নি।’

বাসুদেব বিশ্বাস আরও বলেন, প্রতিমা মেরামতের টাকা জেলা পুলিশ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা গ্রহণ না করে নিজেরাই এর ব্যয়ভার বহন করেন।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন বলেন, আগামী রোববার (৩ আগস্ট) এলাকাবাসীকে নিয়ে ওই মন্দির প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদউজ্জামান জানান, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে এলাকায় গোয়েন্দা তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৬টার মধ্যে কোনো এক সময় কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি সর্বজনীন শ্রীশ্রী কালী ও দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ