Samakal:
2025-06-15@09:36:06 GMT

প্রবীণের প্রতি দায় ও দরদ

Published: 14th, June 2025 GMT

প্রবীণের প্রতি দায় ও দরদ

জাতিসংঘের আহ্বানে সারা পৃথিবী ১৫ জুন ‘প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালন করছে। এবারের স্লোগান ‘আলোচনার বিস্তার ঘটানো, লক্ষণ চিনুন এবং ঝুঁকি কমান।’ প্রতিপাদ্যের প্রথম ধাপ হলো– প্রবীণরা যতভাবে নির্যাতনের শিকার হন সে ব্যাপারে জনসাধারণের সামনে খোলামেলা আলোচনা তুলে ধরা। 
মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো, মানুষ তার দুর্বল জায়গাগুলো আড়াল করতে পছন্দ করে। নির্যাতনকারীরা পরিবারের সদস্য, নিকটতম আত্মীয়স্বজন, সেবাকর্মী, বন্ধুবান্ধবরা হয়ে থাকেন বলে বেশির ভাগ নির্যাতনের ঘটনা ভুক্তভোগী প্রবীণরা নিজ থেকেই চেপে যান। 

একজন প্রবীণ মানসিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। কখনও চড়, থাপ্পড়, গলাধাক্কা, খুন্তি কিংবা লাঠি দ্বারা আঘাত করা কিংবা খাবারদাবার, ওষুধ, চিকিৎসা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি বা অসহযোগিতা করা ইত্যাদি শারীরিক নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত। পছন্দ করতে বাধা দেওয়া, গালাগালি করা, খোটা দেওয়া, তির্যক মন্তব্য করা, অবহেলা ও অসম্মান করা, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া, অতীতের ব্যর্থতাকে সামনে নিয়ে আসা ইত্যাদি মানসিক নির্যাতন। চাহিদা অনুসারে টাকা-পয়সা খরচ করতে না পারা কিংবা জমিজমা ও অন্যান্য টাকা-পয়সাজনিত ব্যাপারে তারা আর্থিক নির্যাতনের শিকার হন। সামাজিক কাজে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি, বিচার-সালিশ বৈঠকে না ডাকা, প্রবীণদের কল্যাণে চুপচাপ থাকা, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করা ইত্যাদি সামাজিক নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত। 
দ্বিতীয় ধাপ হলো নির্যাতনের লক্ষণগুলো চিহ্নিত করতে পারা। যখন কোনো প্রবীণ ব্যক্তি হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যান, কথা বলা কমিয়ে দেযন, প্রিয় জিনিসপত্রের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন না, খাবার খেতে চান না, চিকিৎসা নিতে অনাগ্রহী, বেড়াতে যেতে চান না, পরিধানের কাপড়-চোপড় ময়লা থাকে, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন, নিজের যত্ন নিতে অনিচ্ছুক হযন– তখন বুঝতে হবে তিনি কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
অনেক সময় ভয়ে নির্যাতনের কথা বলতে চান না পাছে আরও বড় ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে। শরীরের আঘাত দৃশ্যমান হতে পারে কিংবা নাও হতে পারে। প্রবীণরা ছেলেমেয়ে, স্বামী বা স্ত্রী, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হলে পরিবারের অন্য সদস্যরা বুঝতে পারবে। তাদের উচিত এসব নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা। মীমাংসার নামে একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। সবাই মিলে নির্যাতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এক‌ই ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে না হয়। প্রবীণদের চলাফেরা, কথাবার্তায় নির্যাতনের অনেক লক্ষণ ফুটে ওঠে। চারপাশের মানুষের দায়িত্ব আলোচনার বিস্তার ঘটিয়ে লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা। 

তৃতীয় ধাপ হলো প্রবীণ নির্যাতনের ঝুঁকি কমানো। প্রবীণদের বড় একটি অংশ ছেলেমেয়ে, পরিবার-পরিজনের ওপর নির্ভরশীল। তারা পরিবারে সম্মান-মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে চায়। নির্যাতনের শিকার হলে পরিবারে বসবাস নরকতুল্য হয়ে যায়। নির্যাতনের ঝুঁকি কমাতে ওয়ার্ড বা নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী প্রত্যেক প্রবীণের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী, ইমাম, ধর্মীয় নেতা, সমাজকর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এলাকায় প্রবীণদের জীবনযাপনের ধরন দেখে ঝুঁকিপূর্ণ প্রবীণদের তালিকা তৈরি করা যায়। সে ক্ষেত্রে অল্প, মধ্যম ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবীণদের আলাদা তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র যৌথভাবে এগিয়ে না এলে কার্যকর ফল পাওয়া সম্ভব হবে না। তাই গ্রাম পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ, ইউনিয়ন সমাজকর্মীরা একইযোগে কাজ করতে পারেন। 

হাসান আলী: প্রবীণ বিষয়ে লেখক, গবেষক ও সংগঠক

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ বস পর ব র প রব ণ

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে একাডেমি না করলে অর্থ দেবে না ফিফা

ফিফার অর্থায়নে কক্সবাজারে সেন্টার ফর এক্সিলেন্স স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে এ সেন্টার তৈরি হওয়ার কথা ছিল। তবে বন কেটে এ ধরনের স্থাপনা তৈরির বিরোধিতা করেন পরিবেশবাদীরা। এ কারণে রামুতে এ একাডেমি হচ্ছে না। তাই কক্সবাজারের অন্য জায়গায় জমি খুঁজছে বাফুফে। যেভাবে কাজ এগোচ্ছে, তাতে ফিফার অর্থ বরাদ্দ বন্ধের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। 

গতকাল ‘মিট দ্য প্রেসে’ এ বিষয়ে কথা বলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল, ‘আমরা অনেক দিন ধরে ফিফা টেকনিক্যাল সেন্টার ডেভেলপমেন্টের জন্য বসে ছিলাম। জমিজমা ইত্যাদির জন্য আমরা পিছিয়ে ছিলাম। সেটার জন্যও ফিফা থেকে আমাদের ওপর চাপ আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে যদি কাজটা শুরু না করি, তাহলে সেই ফান্ডটা কিন্তু হারিয়ে যাওয়ার জায়গা আছে। তবে আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি ফান্ডটা হারাব না। আমরা কাজটি অচিরেই শুরু করতে পারব।’

ফিফা নিজ তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দেশে একাডেমি করে দিচ্ছে। বাফুফেও দেশে এমন একাডেমি করার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানান তাবিথ, ‘ফিফাতে ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্টের অধীনে ফিফা ৭৫টি একাডেমি করতে যাচ্ছে। সেখানে একেকটি সদস্যের আবেদন করতে হয়। আবেদন করলে টিবিএস কমিটি যদি অনুমোদন করে, তাহলে আর্সেন ওয়েঙ্গারের ফাইনাল সিদ্ধান্তে একাডেমিগুলো ডেভেলপমেন্ট করা হয়। সর্বশেষ কংগ্রেসে আমি সরাসরি আর্সেন ওয়েঙ্গারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কমিটমেন্ট চেয়েছেন, আমিও কথা দিয়ে এসেছি। এই বছরের মধ্যে আমরা ফিফার সঙ্গে চুক্তি করে আসব, যেন বাংলাদেশে ফিফা সার্টিফাইড একাডেমি তৈরি করা হয়। এরই মধ্যে ফিফার কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। তারাও কিছু বিষয় তুলে ধরে চিঠি দিয়েছে আমাদের। তাদের এই বিষয়গুলো যদি আমরা মনে করি পূরণ করতে পারব, তাহলে সামনে যে কোনো সময় চুক্তি করব। আমার উদ্দেশ্যে হলো সেপ্টেম্বরের দিকে চুক্তি করা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ