অবশেষে লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে আটকে থাকার বৃত্ত ভাঙল দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪১৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা রোববারের তুলনায় ১৫৪ কোটি টাকা বেশি। এর আগে গত এক মাসের ১৯ কর্মদিবসের ১৮ দিনই লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে আটকে ছিল।
মূল বাজার ছাড়াও গতকাল ডিএসইর এসএমই এবং দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর লেনদেনসহ দেশের শেয়ারবাজারে সর্বমোট ৪৩৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকার এবং সিএসইতে ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার লেনদেন ছিল ব্লকে।
শুধু লেনদেন নয়, এদিন শেয়ারদর ও বাজার মূল্য সূচকেরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২৯২টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩৪টির। এ ছাড়া ৩৭ মেয়াদি ফান্ডের মধ্যে ২০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২টির।

অধিকাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭৮৩ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর পয়েন্ট বিবেচনায় এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। মাঝে গত ৭ মে এক দিনে ১৪৯ পয়েন্ট পতনের পরদিন প্রায় ১০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি ছিল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।
গতকাল সূচক বৃদ্ধিতে একক কোম্পানি হিসেবে ওয়ালটন হাইটেক, বিএটি বাংলাদেশ, লাফার্জ-হোলসিম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, রবি, ওরিয়ন ইনফিউশন, গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংকসহ বেশ কিছু বৃহৎ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির অবদান ছিল বেশি। একক খাত হিসেবে ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি সূচকে সাড়ে ১০ পয়েন্ট যোগ করেছে। তবে অন্য সব খাতেরই কম-বেশি অবদান রেখেছে।

লেনদেন বৃদ্ধির তথ্য পর্যালোচনায়ও প্রায় একই তথ্য মিলছে। প্রতিটি খাতেই লেনদেন বেড়েছিল গতকাল। তবে তুলনামূলক বেশি লেনদেন বেড়েছে বীমা, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া, কাগজ ও ছাপাখানা খাতে। রোববার যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল, গতকাল তা বেড়ে পৌনে ২৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ এ খাতের লেনদেন বেড়েছে সাত গুণ। বীমা খাতের লেনদেন ২১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেড়ে ৩২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তবে একক খাত হিসেবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২১ কোম্পানির মোট ৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন গতকাল ছিল সর্বোচ্চ। এ লেনদেন গতকালের ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশ ছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পৌনে ৫৪ কোটি টাকার লেনদেন ছিল ব্যাংক খাতের।
একক কোম্পানি হিসেবে লাভেলোর ৪১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা ছিল সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয় ব্র্যাক ব্যাংকের। সাড়ে ১৬ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল অগ্নি সিস্টেমস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ট ক র ল নদ ন শ য় রব জ র ল নদ ন ব গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন আবার ৪০০ কোটি টাকা ছাড়াল

ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় কার্যদিবসে আজ সোমবার শেয়ারবাজারের লেনদেনে কিছুটা গতি ফিরেছে। তাতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক মাসের বেশি সময় পর লেনদেন ছাড়িয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।

ডিএসইতে আজ সোমবার দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪১৭ কোটি টাকা। এক মাসের বেশি সময়ের ব্যবধানে এটিই ঢাকার বাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে সর্বশেষ গত ৭ মে ডিএসইতে সর্বোচ্চ ৫১৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে সূচকও। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৬০ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে। সূচকও এক মাসের বেশি সময় পর এতটা বেড়েছে। এর আগে সর্বশেষ ৮ মে ডিএসইএক্স সূচকটি ১০০ পয়েন্ট বেড়েছিল।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা দরপতনে ভালো ভালো অনেক কোম্পানির শেয়ার দর অবমূল্যায়িত পর্যায়ে চলে আসায় সম্পদশালী বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ আবার বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। তারা নতুন করে কিছু কিছু বিনিয়োগ করছে। এ কারণে বাজারে লেনদেনে গতি দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী জানান, গত রোববারের তুলনায় সোমবার তাঁদের প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের পরিমাণ তিন গুণের বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা এদিন শেয়ার বিক্রির চেয়ে কিনেছেন বেশি। আর ক্রেতাদের বড় অংশই ছিল উচ্চ সম্পদশালী বা বড় বড় বিনিয়োগকারীরা।

একই অবস্থা ছিল শীর্ষস্থানীয় আরও কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসে। এসব ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে দরপতনের কারণে কিছু শেয়ারের দাম এমন পর্যায়ে নেমেছে যে সেগুলোর দামই বাজারে বিনিয়োগকারী টেনে আনবে। যাঁরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী, তাঁরা দাম বেশি কমে গেলে শেয়ার কিনতে এগিয়ে আসেন। তবে বাজারে অস্থিরতা থাকলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন।

শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে সূচকের উত্থানে যেসব কোম্পানি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে, সেগুলো হলো ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, রবি আজিয়াটা, ওরিয়ন ইনফিউশন, গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংক ও একমি ল্যাবরেটরিজ। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দামের উত্থানে এদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ১৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আর এদিন সূচকে যেসব কোম্পানি সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তার মধ্যে ছিল স্কয়ার ফার্মা, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সী পার্ল বিচ রিসোর্ট, এসিআই লিমিটেড, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, ব্যাংক এশিয়া, ম্যারিকো বাংলাদেশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইনস্যুরেন্স ও অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে গতকাল ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ পয়েন্ট কমেছে।

তবে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এদিন সূচক বেড়েছে। ঢাকার বাজারে আজ ৩৯৭ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১৫টির, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৬টির দাম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন আবার ৪০০ কোটি টাকা ছাড়াল