Samakal:
2025-11-03@01:46:39 GMT

গল থেকে শুরু নতুন অভিযান

Published: 17th, June 2025 GMT

গল থেকে শুরু নতুন অভিযান

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের ফাইনাল শেষ হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ মাঠে গড়াচ্ছে চতুর্থ আসরের খেলা। ২০২৫ থেকে ২০২৭ চক্রের উদ্বোধনী সিরিজেই বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে শ্রীলঙ্কার। গলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় শুরু হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রথম টেস্ট। যেখানে ক্রিকেটারদের একমাত্র ব্রত ভালো খেলা। কারণ শুরুটা ভালো হলে জয়ের আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়। 

গত আসরের পারফরম্যান্সও শান্তদের কিছুটা উজ্জীবিত করতে পারে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৩-২৫ সাইকেলে বেশ কয়কটি ম্যাচ স্মরণীয় হয়ে আছে বাংলাদেশের। পয়েন্ট টেবিলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক একটা লড়াইও ছিল। লঙ্কানরা ১৩ টেস্ট খেলে পাঁচটিতে জিতে ষষ্ঠ, বাংলাদেশ ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে চারটিতে জিতে সপ্তম হয়েছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসরে একটা ভালো শুরুর স্বপ্ন দেখছেন।

বাংলাদেশ তৃতীয় আসর শুরু ও শেষ করেছিল জয় দিয়ে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সিলেটে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ২০২৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে নিজেদের শেষ টেস্ট ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় তাদের মাটিতে। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করছে অ্যাওয়ে সিরিজ দিয়ে। অর্থাৎ গল থেকে লঙ্কা অভিযান শুরু করছেন বাংলাদেশ। যেখানে বাজিমাত করতে চান শান্তরা। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘নতুন প্রতিপক্ষ এবং নতুন কন্ডিশন। এই কন্ডিশনে অনেকের খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ওই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাতে পারলে আমার মনে হয় সিরিজে ভালো কিছু হবে। তবে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে আমরা যারা ব্যাটিংয়ে আছি।’ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা আজ থেকে মাঠে গড়ালেও শান্তদের টেস্টের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজে। যেখানে তৃপ্তির চেয়ে অতৃপ্তি বেশি ছিল। সিলেটে প্রথম টেস্ট হারায় দুই ম্যাচের সিরিজ ড্র হয়। শান্ত চান জয় পেয়ে ম্যাচটি মনে রাখতে, ‘আমরা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কী সিরিজ খেলেছি, ওটা নিয়ে খুব বেশি আগানো ঠিক হবে না। কারণ, শেষ ম্যাচে খুব ভালো স্মৃতি আছে। আগের ম্যাচ হেরে পরের ম্যাচে যেভাবে প্রত্যাবর্তন করেছি, আমার মনে হয় ওটাই দলকে উজ্জীবিত করবে।’

বাংলাদেশ পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে লঙ্কা গেলেও গলে টেস্টে সেরা একাদশ নাও পেতে পারে। দলের একমাত্র অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ফ্লুতে আক্রান্ত। জ্বর-ব্যথা না থাকলেও ভাইরাসের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। মিরাজ না চাইলে টিম ম্যানেজমেন্ট জোরাজুরি করবে না হয়তো। যদিও তাঁর খেলা না খেলার ওপর একাদশে প্রভাব থাকবে। তাই শান্তকে অনিশ্চয়তার কথাই বলতে শোনা গেছে, ‘এখনও মিরাজের শরীরটা খারাপ আছে, তবে উন্নতি করছে। ওর খেলা না-খেলার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ওই জায়গাটা যদি ঠিক থাকে, তাহলে আমরা একটা ভালো কম্বিনেশন নিয়ে নামতে পারব।’ 

শেষ পর্যন্ত মিরাজ খেলতে না পারলে ব্যাটিং লাইনআপ ছোট হবে। এ ক্ষেত্রে ইনিংস ওপেন করতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস ও জাকের আলী খেলবেন মূল ব্যাটার হিসেবে। বোলিং লাইনআপটাও সাজাতে হবে স্পিন বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে। কারণ গল স্পিনস্বর্গ। এই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত শেষ চার টেস্টে প্রায় ১০০ উইকেট গেছে স্পিনারদের দখলে। এদিকটা মাথায় রেখে বাঁহাতি তাইজুল ইসলামের সঙ্গে অফ স্পিনার নাঈম হাসান খেলতে পারেন। তিন স্পিনার খেলালে হাসান মুরাদের কপাল খুলবে। পেস বিভাগে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার সুযোগ বেশি। এবাদত হোসেন দুই বছর পর দলে ফিরলেও খেলার সম্ভাবনা কম। শ্রীলঙ্কার এ মাঠে জুটি গড়তে পারলে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ থাকে। 

শান্তর মতে, ‘এ কন্ডিশনে ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ থাকবে বেশি। কারণ এখানে স্পিনাররা অনেক উইকেট নেন। আবার অনেক রানও হয়। প্রথম দুই-তিন দিন ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ।’ 

গলে স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত দুটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে মুশফিকুর রহিম রেকর্ড গড়া জুটি করেন। আশরাফুল ১৯০ রানে আউট হলেও মুশফিক প্রথম দ্বিশতকের দেখা পান। দুটি শতক আর একটি দ্বিশতকে ওই টেস্ট ড্র হয়েছিল। ২০১৭ সালে মিরাজরা খেলেছেন গলেতে। বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের কাছে হেরে যেতে হয়েছিল সে ম্যাচ। 

গল টেস্ট হারলেও কলম্বোয় নিজেদের শততম টেস্ট ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৬ টেস্ট খেলে ওই একটি মাত্র জয় বাংলাদেশের। আরেকটি জয়ের খোঁজে নামার ম্যাচে বৃষ্টি বাধা হতে পারে। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ দিনের বেশির ভাগ সময় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট স ট চ য ম প য়নশ প চ য ম প য়নশ প র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী