কুমিল্লার লাকসামে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাকসাম পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পেয়ারাপুর দক্ষিণপাড়ার আবুল বশরের ছেলে এনায়েত রহমান সাক্কু (১৯), উপজেলার বড়তুপা গ্রামের মকবুলের ছেলে সাগর (২৬), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার চরকাওনা গ্রামের বাদলের ছেলে স্বপন মিয়া (২১)।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে আইনজীবী-কর্মচারী হাতাহাতির ঘটনায় মামলা, পরোয়ানা জারি

রাজবাড়ী‌তে ২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১

পুলিশ জানায়, গত ৮ জুন মেয়েটি তার প্রেমিককে খুঁজতে লাকসাম বাজারে যান। সেখানে তার সঙ্গে এনায়েত রহমান সাক্কু নামে এক অটোচালকের পরিচয় হয়। মেয়েটি সাক্কুকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিককে খুঁজতে শুরু করেন। রাত ১০টার দিকে তারা লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ পাশের প্লাটফর্মের সিঁড়িতে গিয়ে বসেন।

এ সময় তিন যুবক তাদের উত্যক্ত করলে সাক্কু নিজেকে ওই মেয়ের স্বামী হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর যুবকরা সাক্কু ও মেয়েটিকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রেলস্টেশনে বসিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে সাক্কু ওই যুবকদের জানান, তিনি মেয়েটির কেউ নন। পরে সাক্কুসহ ওই যুবকরা মেয়েটিকে সেখান থেকে রেললাইনের পূর্বপাশের একটি পরিত্যাক্ত টিনের ঘরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।

ভুক্তভোগী ঘটনাটি পুলিশকে জানালে তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামাতো ভাই বাদী হয়ে সোমবার (১৬ জুন) রাতে চারজনকে আসামি করে লাকসাম থানায় মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাক্কু, সাগর ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জনকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আপর আসামি খোরশেদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ