যশোরে করোনায় একজনের মৃত্যু, কিট সংকটে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ
Published: 18th, June 2025 GMT
যশোরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শেখ আমির হোসেন (৬৮) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে বুধবার সকালে তিনি মারা যান। ২০২২ সালের পর যশোরে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম। আমির হোসেন বাঘারপাড়ার জহুরপুরের মৃত শেখ মকছেদ আলীর ছেলে।
এদিকে নতুন করে করোনার প্রকোপ বাড়লেও যশোরে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। কিট সরবরাহ না থাকায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) আরটিপিসিআর ল্যাব নতুনভাবে প্রস্তুত করা হলেও সেখানে চালু করা যায়নি কোভিড পরীক্ষা।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা.
মৃতের ভাতিজা মোবারক হোসেন বলেন, পেটের ব্যথার কারণে ৫ জুন যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে আমির হোসেনকে মডেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রোববার তার নতুন করে জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। কিন্তু সেখান শয্যা না থাকায় তিনি মডেল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে আইসিইউতে শয্যা ফাঁকা হলে পরিবারের লোকজন তাকে সেখানে নিয়ে যান। পরে ডাক্তার করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিলে দুপুরে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে তার র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। বুধবার ভোরে তিনি মারা যান।
তিনি জানান, আইসিইউতে সন্দেহজনক আরও তিনজন রোগী রয়েছেন। তারা করোনায় আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠনো হয়েছে।
কিটের অভাবে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ: এদিকে কিটের অভাবে যশোরে কোভিড পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বেসরকারি ক্লিনিকের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টই এখন একমাত্র ভরসা। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, করোনা পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআর ল্যাব নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগকে কিট সরবরাহের জন্য বলা হয়েছে। সেটা পাওয়া গেলে তারা ল্যাবে কোভিড পরীক্ষা শুরু করতে পারবেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, করোনা পরীক্ষার কিছু কিট রয়েছে কিন্তু সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। কিটের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে দুই হাজার কিট হাতে পাওয়া যেতে পারে।
সরকারিভাবে যবিপ্রবি’র আরটিপিসিআর ল্যাবে ২০২৩ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত যশোরসহ এ অঞ্চলের সাত জেলার ১ লাখ ৬ হাজার ৩২৬টি কোভিড নমুনা টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ২২ হাজার ৭৯৯টি পজিটিভ ছিল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ন য় ম ত য ক ভ ড পর ক ষ আইস ইউত
এছাড়াও পড়ুন:
তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
সাইপ্রাসে গত সপ্তাহে উন্নতমানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহ করেছে ইসরায়েল। গত ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার তৃতীয় চালান এটি। তুরস্কের সঙ্গে ক্রমে উত্তেজনা বেড়ে চলার মধ্যে সাইপ্রাসকে এ ব্যবস্থায় সজ্জিত করল ইসরায়েল। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, লিমাসলের বন্দর দিয়ে একটি ট্রাক ‘বারাক এমএক্স’ ব্যবস্থার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সাইপ্রাসের সংবাদমাধ্যম রিপোর্টার জানিয়েছে, বারাক এমএক্স ব্যবস্থার সরবরাহ এখন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরই এটি আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) বহিঃসম্পর্ক বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়। বারাক এমএক্স তৈরি করেছে ইসরায়েলি সংস্থাটি।
আরও পড়ুনইসরায়েলের আগ্রাসন কীভাবে মোকাবিলা করবে তুরস্ক৩০ আগস্ট ২০২৫গাল লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সমন্বয় করে এ দ্বীপের উত্তর অংশ মুক্ত করার বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। এতে তুরস্কের পুনরায় সেনা পাঠানোর পথ বন্ধ হবে, উত্তর সাইপ্রাসের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হবে, গোয়েন্দা ও কমান্ড সেন্টারগুলো গুঁড়িয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত তুর্কি বাহিনী সরে যাবে। এর মাধ্যমে সাইপ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
গ্রিসের সঙ্গে একীভূত করার লক্ষ্য নিয়ে সাইপ্রাসে এক অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে সেখানে আক্রমণ চালায় তুরস্ক। সেই থেকে দ্বীপটি দুই ভাগে বিভক্ত—দক্ষিণে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র ও উত্তরে তুরস্ক-সমর্থিত উত্তর সাইপ্রাস, যা শুধু আঙ্কারার স্বীকৃত।
এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়।এখন পর্যন্ত আঙ্কারা নতুন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বারাক এমএক্সে রয়েছে উন্নত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা। এর থ্রিডি রাডার সর্বোচ্চ ৪৬০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর, যা দক্ষিণ তুরস্কের একটি বড় অংশের আকাশসীমা আয়ত্তে আনতে পারে।
আরও পড়ুনইসরায়েল ও তুরস্ক কখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে?২৪ জানুয়ারি ২০২৫১৯৯৭ সালে দক্ষিণ সাইপ্রাস রাশিয়ার তৈরি দুটি এস–৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার চেষ্টা করলে তুরস্কের সঙ্গে তার যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়। সে সময় আঙ্কারা পুরোদমে সামরিক জবাব দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে সে সংকট মেটে গ্রিস ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে গেলে ও সাইপ্রাস বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করলে।
এ ব্যবস্থা এস-৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস-৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।আরদা মেভলুতোগলু, তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকতুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আরদা মেভলুতোগলু বলেন, এই ব্যবস্থা এস–৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস–৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।
ইসরায়েলের আশদোদে আইএআই বারাক এমএক্স বিমান প্রতিরক্ষা লঞ্চার। ১২ জুন ২০২৫