প্রতারণা ঠেকাতে পাগলা মসজিদে ডোনেশন ওয়েবসাইট উদ্বোধন
Published: 4th, July 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে মানত গ্রহণের নামে প্রতারণা ঠেকাতে এবং মানতকারীদের ভোগান্তির অবসানে এবার উদ্বোধন করা হলো ডোনেশন ওয়োবসাইট। মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান শুক্রবার সকালে মসজিদ প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে নামে ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করেছেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, বিভিন্ন প্রতারক চক্র অনলাইন ব্যাংকিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাগলা মসজিদের মানতকারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। এ ছাড়া দূরের বহু মানুষকে কষ্ট করে এসে মানতের টাকা দিতে হতো। আবার দেশ-বিদেশের অনেকের পক্ষে মানত পৌঁছে দেওয়া সম্ভবও হতো না। প্রতারক চক্রের প্রতারণা বন্ধ এবং দেশ-বিদেশের মানতকারীদের সুবিধার জন্য এই ওয়েবসাইটটি ভূমিকা রাখবে। এখন অনলাইনে যে কেউ অনুদান বা মানতের টাকা পাঠাতে পারবেন।
প্রতি তিনমাস অন্তর পাগলা মসজিদের ৮ থেকে ১০টি দানবাক্স খুলে কয়েক কোটি টাকা পাওয়া যায়। সাথে সোনা-রূপা আর ডায়মন্ডের অলঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রাও পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রতিদিনই হাঁস-মুরগি আর গবাদি পশুসহ বিভিন্ন সামগ্রি পাওয়া যায়। সর্বশেষ ১২ এপ্রিল পাওয়া গিয়েছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ, ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। সাথে অলঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা ছিল।
ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, পাগলা মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা আশরাফ আলী, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রমজান আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি আলমগীর হোসেন তালুকদার, আল জাতিয়াতুল ইমদাদিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা সাব্বির আহমেদ রশিদ, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দিলু প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
আটক হয়নি কেউ আতঙ্কে এলাকা পুরুষশূন্য
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে মা ও দুই সন্তানকে হত্যার পর এলাকা অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মরদেহ তিনটি গতকাল শুক্রবার রাতে দাফন করা হয়েছে। ঘটনার পর ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
ময়নাতদন্ত শেষে রাতে নিহতদের বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ দাফন করা হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকে নিহতদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে হামলা করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। ওই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছেলে মো. রাসেল মিয়া ও মেয়ে জোনাকি আক্তারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যদিও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুবির ছেলে নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার। তিনি বলেন, ‘একটি মোবাইল চুরির ঘটনার সূত্র ধরে আমাদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর হয়। বুধবার রাতে বাছির নামে এক যুবক আমার স্বামীকে ফোন করে সকালে পুরো পরিবারকে হত্যা করে ফেলার হুমকি দেয়। তিনজন পরিকল্পিত হত্যার শিকার।’
পালিয়েছেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে নিহতদের পরিবারের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনাকে মারধর বলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে জড়ো করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতদের বাড়িতে পুলিশের পাহারা ছিল। বাড়ির তিনটি আবাসিক ভবন তালাবদ্ধ। বাইরে পাহারায় ছিল পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, শুক্রবার ওই বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। তারা আরও জানান, নিহতদের কবর খুঁড়তে পুলিশকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছে। অন্য এলাকা থেকে লোক এনে কবর খুঁড়তে হয়েছে। এর পর মরদেহ রাতে পুলিশের তত্ত্বাবধানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। এ সময় থানা পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শারমীন সুলতানা জানান, দুপুর ১২টার দিকে তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করা হয়। বিকেলে সেগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
রাতে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিহতদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার গতকাল রাতে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে। তিনি আরও
জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।