জামায়াতের জনসভা শুরুর আগেই নেতাকর্মী সমর্থকদের ঢল নেমেছে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে। জনসভার মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায়ও মানুষের ভিড় করেছে। দীর্ঘ ১৭ পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় শুরু হয় জনসভার মূল আনুষ্ঠানিকতা। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে জনসভা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের জুলুম অত্যাচার ও বিধি নিষেধের কারণে দীর্ঘদিন পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভা ঘিরে সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠেই দুটি জামাতের মাধ্যমে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন তারা। 

রংপুরের জনসভায় প্রধান বক্তা থাকবেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। জনসভায় বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। এ ছাড়া জামায়াতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন জনসভায়।

এদিকে, রংপুর মহানগর ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিভাগীয় এই জনসভার জন্য রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠের ভেতরে প্রবেশের সুবিধার্থে নতুন দুটি প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। কালো পর্দা দিয়ে নারীদের আলাদাভাবে বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করার পাশাপাশি রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। সেইসঙ্গে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সড়কে সড়কে। জনসভায় মেডিকেল টিম, নিজস্ব ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে সকাল থেকেই।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম জানান, রংপুর বিভাগীয় জনসভায় দুই লক্ষাধিক লোক সমাগম ঘটবে। জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। জনসভার স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে ফলাফল ঘরে তোলা হবে। নির্বাচনের জন্য রংপুরের এই বিশাল জনসভা টার্নিং পয়েন্ট হবে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে, সকাল থেকেই দলে দলে লোকজন জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনের কবলে পড়ে হাজার হাজার মানুষ গুম, খুন, জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে এমন দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা। জনসভার মাঠে সকাল থেকেই ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা হাম-নাত পরিবেশন করেছেন। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীর ব্যবস্থা করেছে তারা। এইসব স্বেচ্ছাসেবী জনসভাস্থলের আশেপাশে ভারি যানবাহন ও মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চলাচলে দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। রংপুর জিলা স্কুল মাঠের এই জনসভায় রংপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দিতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় জনগণের কাঙ্খিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হবে জানিয়েছেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ন ত কর ম ল ইসল ম ই জনসভ জনসভ র জনসভ য় নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি না করি: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষ স্বৈরাচার তৈরি করেছে, ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছে, এরাই সব সম্পত্তির মালিক হইছে। এই একটা মাত্র পরিবার, মুজিব পরিবার। এরাই সব সম্পত্তির মালিক হয়ে দেশের জমিদারি নিয়ে নিছিল। আমরা এই জমিদারি প্রথা ভাঙছি গণঅভ্যুত্থানে।” 

তিনি বলেন, “নতুন করে যদি কোনো জমিদারি প্রথা, নতুন করে কোনো স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট-চাঁদাবাজ তৈরি হয়, তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে, কথা বলতে হবে। আমরা বাংলাদেশে যাতে নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি না করি। কোনো অন্যায়-জুলুম দেখলে প্রতিবাদ করতে হবে।”

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা শহরের ফকিরগঞ্জ বাজারে এনসিপির উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন তিনি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পঞ্চগড়ে আসেন।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশপন্থিদের হাতেই চলবে বাংলাদেশ: নাহিদ 

পুরনো সিস্টেম ও দখলদারিত্ব ফিরে আসার চেষ্টা চলছে: নাহিদ  

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগ বারবার বলেছে, তারা অসাম্প্রদায়িক দল, কিন্তু তারা কখনোই সনাতন ধর্মের মানুষের সঙ্গে ইনসাফ করেনি। বিগত আমলে আমরা দেখেছি, আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইয়েরা অনেক নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের জমি দখল করা হয়েছে। তারা কোনো বিচার পান নাই। আমরা চাই, এই নতুন বাংলাদেশে ইনসাফের ভিত্তিতে, সম্প্রীতির ভিত্তিতে একসাথে নাগরিক হিসেবে সব সুযোগ-সুবিধা পাব।”

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা নিজ দলের নেতাকর্মীদের ফেলে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। তার পরিবার ও দলের যারা লুটপাট করে বড়লোক হয়েছেন, অনেক বেশি জুলুমবাজ হয়েছেন, তারাও দেশ থেকে চলে গেছেন। দলের সব নেতাকর্মীকে তারা বিপদে ফেলে গেছেন। তারা কোনো দলের নেতা হতে পারেন না।” 

এনসিপির এই নেতা বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের প্রত্যাশা দেশটাকে নতুন করে গড়ব বৈষম্যহীন ইনসাফের ভিত্তিতে, সম্প্রীতির ভিত্তিতে। এটি চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসমুক্ত একটা দেশ হবে। সেই লক্ষ্যে এই গণঅভ্যুত্থানে যেসব তরুণ-আমরা নেতৃত্ব দিয়েছিলাম, তারা মিলে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। যে পার্টি আপনার কথা বলতে চায়, সাধারণ জনগণের কথা বলতে চায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, জুলুমের বিরুদ্ধে, ইনসাফের রাজনীতি করতে চায়।

সভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আদায় করে ছাড়ব: জামায়াত আমির
  • নির্বাচন সামনে রেখে বহু ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি: শফিকুর রহমান
  • সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির
  • নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি না করি: নাহিদ
  • নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি: জামায়াত আমির
  • ভালো নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি: জামায়াতের আমির
  • রংপুরে জামায়াতের জনসভাস্থলে জমতে শুরু করেছে কর্মী-সমার্থক
  • রংপুরে আজ জামায়াতের জনসভা, দুই লাখ লোক সমাগমের টার্গেট
  • রংপুরে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম জনসভার প্রস্তুতি জমায়াতের