রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা এলাকা থেকে ডাকাতি হওয়া সৌদি রিয়ালের প্রায় সবটাই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর সঙ্গে জড়িত আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন-  আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আরিয়ান, সাব্বির হোসেন, জাহিদুল ইসলাম সোহাগ, জয় ও বিজয়।

এ নিয়ে এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন গ্রেপ্তার হলো। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে ‘অস্ত্রের মুখে’ এম এম আয়াত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের নগদ ৪ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ সৌদি রিয়াল, ৪০০ ওমানি রিয়াল, ৩০ কুয়েতি দিনার এবং ১২ হাজার ৩৫০ সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রায় এক কোটি ৬৪ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা ডাকাতির চার দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তিনটি মোটরসাইকেলসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে।

শুক্রবার পর্যন্ত ডাকাতি হওয়া প্রায় চার লাখ সৌদি রিয়াল উদ্ধার হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার ছয়জনের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। আগে গ্রেপ্তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো.

তুহিন, তার সহযোগী তালহা নূর, তার স্ত্রী শারমিন, শাহীন শিকদার, ইয়াসিন আরাফাত, রফিকুল ইসলাম ও শুভ হাওলাদার। তুহিন পাঁচ, তালহা চার ও বাকিরা তিন দিন করে রিমান্ডে রয়েছে।

মুখোশ পরে ১০-১২ জনের একটি দল দেশি অস্ত্রের মুখে ডাকাতি করে। তদন্তে নেমে আয়াত ট্যুরসের কর্মী তুহিনের যোগসাজশ পায় পুলিশ। তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, তুহিনসহ অন্য আসামিরা কয়েক দিন আগে ‘গল্প সাজিয়ে’ ডাকাতির পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী, তুহিন বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে ভাড়ায় প্রাইভেটকারে বিদেশি মুদ্রাভর্তি লাগেজ নিয়ে উত্তরা যাওয়ার পথে তাঁর লাইভ লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে ডাকাতদের কাছে পাঠান। গাড়িটি তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এলাকায় যাত্রী ছাউনির সামনে পৌঁছালে তার গতিরোধ করে বিদেশি মুদ্রাভর্তি লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। তারা মুদ্রাগুলো নিজেদের মধ্যে ‘ভাগ বাটোয়ারা’ করে ‘আত্মগোপনে’ চলে যায়। তুহিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় জড়িত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আসলাম ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী  ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা করেন। মামলায় আগে গ্রেপ্তার সাতজন পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার তাদের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।

ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।

আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫

বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।

প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।

ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ