বরিশালে বাসে হাফ ভাড়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলা-পাল্টা হামলা, অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর, বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে ঘটনার শুরু হয়।

আরো পড়ুন:

আ.

লীগের পক্ষে নিয়মিত পোস্ট দেওয়ায় ইবি শিক্ষার্থীকে থানায় সোর্পদ

নিজ বাসা থেকে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’

বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে গেলে পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় ২৫ জন আহত হয়। তবে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বিএম কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আবু বক্করসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বাস শ্রমিকরা। বিষয়টি বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. মোশারফকে জানানো হলে তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো শ্রমিকদের ছাত্রদের উপর লেলিয়ে দেন। এ সময় শ্রমিকদের হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। এ ঘটনার পর তারা কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে সহপাঠীদের বিষয়টি জানান।

স্থানীয়রা জানান, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়ে বাস টার্মিনালে এসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে। এক পর্যায় তারা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। শত শত শিক্ষার্থীর উপস্থিতি টের পেয়ে শ্রমিকরা বাসস্ট্যান্ড থেকে সটকে পড়ে।

হামলা ও ভাঙচুরের পর থেকে বরিশাল থেকে সারা দেশে  বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পরিবহন শ্রমিক নেতা আরজু মৃধা বলেন,  ‘‘কলেজ বন্ধের দিনও হাফভাড়া দেওয়া নিয়ে বরিশাল-মুলাদী রুটের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস শ্রমিকের বিরোধ হয়। এরপর সন্ধ্যায় বিএম কলেজের কয়েক শত  শিক্ষার্থী এসে নথুল্লাবাদ স্টান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে। এ সময় সেখানে থাকা ১৫-২০ জন শ্রমিককে বেপরোয়া মারধর করে গুরুতর করে।’’

ঘটনাস্থলে থাকা বিএম কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘হাফ ভাড়া আমাদের অধিকার। আজ (শনিবার) মুলাদী থেকে বরিশাল নগরীতে আসার পথে এক শিক্ষার্থী হাফ ভাড়া দিতে চাইলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বাস শ্রমিকরা। খবর পেয়ে আমরা (শিক্ষার্থীরা) নথুল্লাবাদ স্টান্ডে জড়ো হয়ে শ্রমিকদের বিচার দাবি জানাই। এ সময় আমাদের উপর বাস শ্রমিকরা হামলা চালায়। এতে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।’’ 

ঢাকা/পলাশ/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাজনীতি ছাড়লেন লালুপ্রসাদের মেয়ে রোহিনী

নির্বাচনে বড় হারের পর নতুন সংকটে পড়েছে বিহারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। পারিবারিক বিরোধের জেরে আজ শনিবার আরজেডি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির প্রধান নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিণী আচার্য। একই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন জোটের পরাজয়ের এক দিন পরই এমন ঘোষণা দিলেন তিনি। বিরোধীদলীয় জোটটি এবারের নির্বাচনে ২৪৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩৫টিতে জয় পেয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে রোহিণী লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং পরিবারকে অস্বীকার করছি। সঞ্জয় যাদব ও রামিজ আমাকে এটাই করতে বলেছেন...আর সব দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি।’

সঞ্জয় যাদব রাজ্যসভায় আরজেডি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বী যাদবের বিশ্বস্ত সহযোগী। রামিজ তেজস্বীর পুরোনো বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের পর তেজস্বীই দলের নেতৃত্ব দেবেন।

গত মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বাবা লালুপ্রসাদ ও ভাই তেজস্বীকে আনফলো করেন রোহিণী। ওই সময়ই লালুপ্রসাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সঞ্জয় যাদব অন্যদের বঞ্চিত করে দলের ভেতরে ক্ষমতা সংহত করছেন বলে সমালোচনা করেছেন রোহিণী।

আরজেডি পরিবারের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি রোহিণী চিকিৎসাবিদ্যায় ডিগ্রি রয়েছে। তিনি পরে গৃহিণী হিসেবে সিঙ্গাপুরে থাকা স্বামীর সঙ্গে থিতু হন। কয়েক বছর আগে বাবা লালুপ্রসাদের জন্য কিডনি দান করে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন রোহিণী। তিনি গত বছর বিহারের সারন জেলা থেকে লোকসভা নির্বাচন করে পরাজিত হন।

ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার করায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন রোহিণী। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে ছোট ভাই তেজস্বীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। তেজস্বী এবারের নির্বাচনে জোটের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য লড়েছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার করায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন রোহিণী। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে ছোট ভাই তেজস্বীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। তেজস্বী এবারের নির্বাচনে জোটের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য লড়েছিলেন।বিহারের নির্বাচনে যা ঘটেছে

বিধানসভা নির্বাচনে এবার ২৪টি আসন পেয়েছে আরজেডি। অথচ পাঁচ বছর আগে বিধানসভায় দলটি পেয়েছিল ৭৫ আসন। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) সর্বোচ্চ আসন জিতলেও মহাগঠবন্ধনের আসন সংখ্যা তলানিতে পৌঁছায়। এটি কংগ্রেস ও আরজেডির জন্য বড় ধরনের ধাক্কা।

এনডিএ জোটের প্রধান দুই দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও জনতা দল (জেডি) ১০১টি আসনে ৮৫ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। এ ঘটনা থেকে এনডিএর বড় ধরনের জয়ের কারণটি বোঝা যায়। জোটটি বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে ২০০টির বেশি আসনে জয় পেয়েছে। রাজ্যটিতে সবচেয়ে বড় একক দল হিসেবে উত্থান ঘটেছে বিজেপির।

আরও পড়ুনবিহারে বিজেপি জোটের কাছে কংগ্রেস–আরজেডির ভরাডুবি১৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ